ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে পালস সমকামী নৈশ ক্লাবে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে সোমবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে ডাইভার্সিটি প্লাজায় সর্বস্তরের মানুষের এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সমাবেশে বাংলাদেশি-আমেরিকান ছাড়াও স্প্যানিশ, আফ্রিকান, পাকিস্তানি, ইতালিয়ান, ভারতীয়, শ্রীলংকানদের বিপুল সমাগম ঘটে। ‘নষ্ট হয়ে যাওয়া ওমর মতিনের অপকর্মের দায় কোনভাবেই সমগ্র মুসলমানদের ওপর বর্তানো যাবে না’ বলে অভিমত পোষণ করেন সকলে।
নিউইয়র্ক সিটির কাউন্সিলম্যান ড্যানিয়েল ড্রোমের পরিচালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের স্পিকার মেলিসিয়া মার্ক ভিভেটোর, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের মেজরিটি লিডার ভ্যান বার্নার, নিউইয়র্ক সিটির কম্পট্রোলার স্কট স্ট্রিঙ্গার, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জেমস সেন্ডার্স, সিনেটর হোজে প্যারাল্টা, সিনেটর টবি স্কেভিস্কি, অ্যাসেম্বলিম্যান মাইকেল ডেকার, পাবলিক এডভোকেট লেটিশা জেমস, মুসলিম কম্যুনিটি লিডার আলী নাজলি, মোহাম্মদ আমিন, সখীর প্রেসিডেন্ট আগা সালেহ, বাংলাদেশি-আমেরিকান এটর্নি মঈন চৌধুরী, কাজী আজম, মঞ্জুর চৌধুরী, লেসবিয়ান নেত্রী লিনা, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগের নেতা কাজী আজিজুল হক খোকন প্রমুখ।
ইউএস সুপ্রিম কোর্টের এটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, ‘এই হামলার সাথে কোন ধর্মীয় গোষ্ঠি জড়িত নয়, একক ব্যক্তিই এই হামলার জন্য দায়ী। কোন ধর্মই মানুষ হত্যার কথা বলেনি। যারা নিরাপরাধ মানুষকে হত্যা করে তাদের কোন ধর্ম নেই, বর্ণ নেই। তাদের একমাত্র পরিচয় তারা সন্ত্রাসী।’
সিটির পাবলিক এডভোকেট লেটিশা জেমস বলেন, ‘এই সন্ত্রাসী এবং বর্বরোচিত হামলা মুসলিম, খ্রিস্টান, জুইসসহ সকল ধর্মের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থেকে প্রতিহত করতে হবে। এইভাবে একের পর এক হামলা চলতে দেয়া যেতে পারে না।’
গত ১২ জুন রাত ২টায় অরল্যান্ডোর সমকামী নৈশ ক্লাবে বর্বরোচিত হামলা চালায় আফগান বংশোদ্ভূত নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণকারী ওমর মতিন (২৮)। এ ঘটনায় ৪৯ জন নিহত এবং আরও ৫৩ জনকে আহত হন। এ অবস্থায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওমর মতিনকেও হত্যা করে।
এ হত্যাযজ্ঞের পর সমগ্র আমেরিকায় মুসলিম কম্যুনিটিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে প্রতিটি মসজিদ এবং মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। তারাবীহ নামাজের সময় সকল মসজিদের সামনে পুলিশ ভ্যান মোতায়েন করা হয়েছে।
অরল্যান্ডো সিটি এবং এর আশপাশে ৫ সহস্রাধিক বাংলাদেশিসহ ৩০ হাজার মুসলমান বাস করেন। মসজিদ রয়েছে ১৬টি। তাদের মধ্যে অস্বস্তি বিরাজ করছে। সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং অরল্যান্ডোর ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান মিলন গত মঙ্গলবার বলেন, ‘এলাকার পুলিশ প্রধানসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা মসজিদে এসে কথা বলেছেন। সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।’
বিডি-প্রতিদিন/ ১৫ জুন, ২০১৬/ আফরোজ