সংযুক্ত আরব আমিরাতের মুসাফ্ফাতে বন্ধুর বাড়িতে থেকে নোট আনতে যাওয়ার সময় এক গুরুতর দুর্ঘটনার শিকার হন বাংলাদেশি ছাত্র ১৫ বছর বয়সী আবতাহি সিদ্দিকী (আনাস)। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে সে আবুধাবির হাসপাতালে গত ২৩ মাস ধরে কোমায় আছেন। বিছানায় শুয়ে জল ভরা চোখে তার পরিবারের সদস্যদের দিকে শুধু চেয়ে থাকে। কথা বলার চেষ্টা করেও কোনো কথা বলতে পারছে না।
রাজধানী আবুধাবিতে ২৫ বছর ধরে বসবাস করছে আবতাহির পরিবার। আবতাহির বাবা সিদ্দিকী আহমদ মুসাফ্ফাতে একটি রেস্তোরাঁ চালান। তিনি জানান, গত দু'বছর ধরে হাসপাতাল আর ঘরে আশা-যাওয়া নিয়েই ব্যস্ত থাকে তাদের পুরো পরিবার। শুধু ছেলে নয় পুরো পরিবার যেন এই ঘটনায় এখন যেন কোমায় আছে।
তিনি আরো বলেন, ওই সড়কে যানবাহনের নির্ধারিত গতিসীমা ৮০ কিলোমিটার হলেও প্রায় ১০০ কিলোমিটারের ঊর্ধ্বে গাড়িটি চালানো হচ্ছিলো বলে স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে।
আবতাহিকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তখন সে ৩য় পর্যায়ের কোমায় ছিল। এখন ডাক্তারদের ক্রমাগত প্রচেষ্টায় তার অবস্থা উন্নত হচ্ছে। এখন সে ৬-৭ কোমা পর্যায়ে রয়েছে। এখন কেবল সে চোখ খুলতে পারে। আবতাহি যখন কোমার ১০ম পর্যায়ে পৌঁছাবে তখন হাঁটতে পারবে বলে ডাক্তার জানিয়েছেন।
আবতাহি মুসাফফাহ মেরিল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র। সে পরিবারের দুই সন্তানের মধ্যে বড়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহায়তার প্রশংসা করেন আবতাহির বাবা। কিন্তু দোষীর সন্ধান পেয়ে এবং ‘কোর্ট অফ ফার্স্ট ইনস্ট্যান্স’-এর ক্ষতির জন্য অর্থ প্রদানের আদেশ দেওয়ার পরও আবুধাবি আদালতে মামলাটি চলমান অবস্থায় রয়েছে।
আবতাহির বাবা আরো জানান, আমার সারা জীবনের অর্জিত মূলধন শেষ করেছি। এখন আমি হাসপাতালে একটি অঙ্গীকার দিলাম যে আদালত থেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার পর আমি বিল পরিশোধ করব। ছেলের জন্য তিনি সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন।
প্রসঙ্গত, আরব আমিরাতে ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিলে একটি পথচারী ক্রসিংয়ে দ্রুতগামী একটি গাড়ি তাকে আঘাত করে। এক বন্ধুর বাড়িতে থেকে নোট আনতে যাওয়ার সময় এ দুর্ঘটনার শিকার হয়। গত ২৩ মাস ধরে তিনি আবুধাবি হাসপাতালের কোমায় আছেন।
সূত্র: গাল্ফ নিউজ
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন