বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের প্রায় ১৫শ কর্মী তাদের চাকরি রক্ষা এবং কাউন্সিলের বিতর্কিত টার্মস এন্ড কন্ডিশন্স বা শর্তাবলী বাতিলের দাবিতে তিন দিনের ধর্মঘট শেষ করেছেন।
কর্তৃপক্ষের চাপিয়ে দেয়া শর্তাবলীকে অযৌক্তিক দাবি করে কর্মচারীদের চাকরি সুরক্ষা, ছাঁটাই, অবসর, কর্ম ঘণ্টা এবং কাজের সময়ের ক্ষেত্রে অধিকার হরন করা হয়েছে দাবি করে শ্রমিক সংগঠন ইউনিসনের ডাকে গত ১৮ আগষ্ট সোমবার ব্যস্থতম হোয়াইটচ্যাপেল রোড বেশ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। কাউন্সিলের এই সিদ্ধান্তের ফলে কালো ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কর্মীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন বলে ইউনিসনের পক্ষ থেকে আবারো জানানো হয়েছে।
তৃতীয় কর্মসূচির শেষদিন সোমবার দুপুর ১১টায় রয়েল লন্ডন হাসপাতালের সামনের প্রধান সড়ক হোয়াইটচ্যাপেল রোড বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ করে আন্দোলনকারীরা। তারা বলছেন মহামারির সময়ে দিনরাত কাজ করে যাওয়া কর্মীদের কথা চিন্তা না করেই কাউন্সিল অন্যায়ভাবে তাদের উপর শর্ত চাপিয়ে দিচ্ছে।
এই চুক্তি বাস্তবায়ন হলে কর্মচারীদের ভ্রমণ ভাতা, চাকরি সুরক্ষা, রির্টাডেন্সি, অবসর, কর্ম ঘন্টা এবং কাজের সময়ের ক্ষেত্রে অধিকার হরন করা হবে বলে মন্তব্য করেন তারা।
কর্মচারীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন লন্ডনের বিভিন্ন কাউন্সিলের লেবার দলীয় ৫৭ কাউন্সিলর এবং পপলার এন্ড লাইম হাউজের পার্লামেন্ট মেম্বার আপসানা বেগমসহ ৬ জন পার্লামেন্ট। দাবির প্রতি একাত্বতা পোষন করে ধর্মঘটে উপস্থিত ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের অন্যান্য দলের কাউন্সিলার ও রাজনীতিবিদগন।
জানা যায়, গত ৬ জুলাই কাউন্সিল ম্যানেজমেন্ট প্রায় ৪০০০ কর্মচারীকে বরখাস্ত ও পুনরায় নিয়োগ দেয়া হয়। আন্দোলনকারীরা লেবার পরিচালিত কাউন্সিলে কনজারভেটিভ পার্টির নিয়ম বাস্তবায়ন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
প্রায় এক বছর ধরে চলে আসা অচলাবস্থা দিন দিন বেড়েই চলছে। কাউন্সিল কর্মীরা নতুন কর্মকৌশলে মোটেও খুশিনন কিংবা সাপোর্টও করেননি।
গত ফেব্রুয়ারী মাসে ইউনিসন টাওয়ার হ্যামলেটের পরিচালিত এক ব্যালট জরিপে দেখা গেছে কর্মচারীদের একটি বড় অংশ কাউন্সিলের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করেছেন। এর মধ্যে কাউন্সিলের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা কর্মচারী ছিলেন। ভোটে ৫২.৫% কর্মচারী অংশ নেন। এতে দেখা যায় কাউন্সিলের প্রস্তাবকে প্রত্যাখান করে ৮৯.৬% হ্যা ভোটদেন।
এদিকে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র জনবিগস সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, সব বিষয়ে আমরা একমত না হলেও তাদের সাথে আলোচনার টেবিলে বসার প্রয়োজন রয়েছে। আর এক মুখপাত্র বলেছেন, চলমান উন্নয়ন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এক দশকেরও বেশী সময় ধরে বহাল থাকা চাকুরির শর্তাবলীগুলো পরিবর্তন করা হচ্ছে। এই পরিবর্তানের ফলে কর্মীদের বার্ষিক ছুটি বাড়বে এবং যেসব চাকুরির জন্য লোক খুঁজে পাওয়া যায় না, সেসব পদেও বেতন বাড়বে এবং কারও চাকুরি যাবে না।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল