স্লোভেনিয়াতে গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে নতুন করে ৪৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। গত ২ এপ্রিলের পর আজকের দিনে মধ্য ইউরোপের এ দেশটিতে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষের শরীরে করোনার উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে, যা দেশটির জনসাধারণের মাঝে চরম উদ্বেগের সৃষ্টি করছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত স্লোভেনিয়াতে মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২,৫৩৬ জন। মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ১২৯ জন এবং চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ২,০৭৯ জন।
স্লোভেনিয়ার বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, গ্রীষ্মকালীন অবকাশ যাপনের জন্য অনেকে প্রতিবেশী দেশ ক্রোয়েশিয়ার সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টগুলোতে জড়ো হচ্ছেন এবং তাদের মাধ্যমে মূলত স্লোভেনিয়াতে আবারও করোনাভাইরাসের প্রত্যাবর্তন ঘটছে।
উল্লেখ্য, ক্রোয়েশিয়াতে গতকাল নতুন করে ২১৯ জনের শরীরে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়, যা দেশটিতে এখন পর্যন্ত একদিনে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা বিবেচনায় সর্বোচ্চ। স্লোভেনিয়ার সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাই জানানো হয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকে অবকাশ শেষে যারা স্লোভেনিয়া থেকে ক্রোয়েশিয়া ফিরবেন সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন পালন করতে হবে।
এ ছাড়া স্লোভেনিয়ার বর্তমান সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিমোনা কুসটেচ ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্লোভেনিয়ার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে গত কয়েক দিনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় তাকে এ বিষয়ে আবার নতুন করে চিন্তা করতে হচ্ছে।
ক্যাটারিনা কোরেন একজন শিক্ষার্থী, যিনি বর্তমানে স্লোভেনিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর সম্পন্ন করছেন। তার সাথে কথা বলে জানা গেল যে, সেকেন্ড ওয়েভে স্লোভেনিয়াতে করোনা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে জটিল রূপ ধারণ করায়, তথা নতুন করে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে তার মতো অনেক মানুষের মাঝে এক ধরনের বাড়তি আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রথমত স্লোভেনিয়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলোর মাঝে অর্থনৈতিক পরিধির বিবেচনায় তেমন একটি শক্তিশালি অবস্থানে নেই। তাই প্রথম ধাপের মতো দ্বিতীয় ধাপেও যদি দেশটির সরকার করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য লকডাউন কিংবা জরুরি অবস্থার ঘোষণা দেয়, তাহলে দেশটির অর্থনীতি একেবারে ভেঙে পড়বে, যেখান থেকে হয়তো বা দেশটির বেরিয়ে আসাটা খুব একটা সহজ হবে না। এ ছাড়া সামনে যেহেতু দেশটিতে হার্ভেস্টিং সিজন তাই এ মুহূর্তে আরও একটি লকডাউন বা জরুরি অবস্থা দেশটিতে খাদ্য সংকট সৃষ্টি করতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ