‘১৫ আগস্ট কালরাতে জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা, ১৭ এবং ২১ আগস্টে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাসমূহ একই সূত্রে বাঁধা। এহেন নৃশংসতায় জড়িতদের সাথে নেপথ্যের মদদদাতাদেরকেও চিহ্নিত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে। বাংলাদেশের অস্তিত্বে যারা বিশ্বাস করে না, তাদের রাজনৈতিক অভিসন্ধিকে চিরতরে নির্মূল করা সম্ভব না হলে ঐ ধরনের নিষ্ঠুর আচরণ চলতেই থাকবে’-এমন মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল কাদের মিয়া।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস স্মরণে ২০ আগস্ট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে ডাইভার্সিটি প্লাজায় অনুষ্ঠিত র্যালিতে সভাপতির বক্তব্যে হাজী আব্দুল কাদের মিয়া আরও বলেছেন, ‘একাত্তরের রাজাকারের পুত্রসহ ঘাতকদের স্বজনেরা এই নিউইয়র্কে বসেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এবং বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বিরুদ্ধে নানা কল্প-কাহিনী রটাচ্ছে। সুযোগ পেলেই ওরা আবারো ১৫ আগস্টেও মত নৃশংসতা চালিয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মত ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার হুমকি দিচ্ছে।’
‘আগস্ট মাসটি হচ্ছে বাঙালি জাতির জন্য শোকের মাস। এই আগস্টকে বিএনপি-জামাত জোট বেছে নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধুলিসাৎ করার জন্য। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে ওরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার মতলবে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল এবং ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জামাতীরা সারা বাংলাদেশে একযোগে বোমা হামলা চালিয়েছিল। তাই আগস্ট এলেই বাঙালি হৃদয়ে শঙ্কা দেখা দেয় নতুন কোন হামলা নিয়ে’-এ কথা বলেছেন আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের যুক্তরাষ্ট্র শাখার নির্বাহী সদস্য মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার।
লাবলু উল্লেখ করেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ঘাতক হিসেবে দণ্ডিত রাশেদ চৌধুরী এখনো যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছে। তাকে ফিরিয়ে নিতে ট্রাম্প প্রশাসনের চলমান উদ্যোগকে ত্বরান্বিত করতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিটি প্রবাসীকে সোচ্চার থাকতে হবে। নির্বাচিত কংগ্রেসম্যান, সিনেটরসহ ট্রাম্প প্রশাসনে লবিং চালাতে হবে।’
সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনসহ মন্ত্রণালয়ের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ঘাতক রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখার জন্য।
ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারি বলেছেন, গ্রেনেড হামলায় বেঁচে গেলেও ওরা চেষ্টা চালাচ্ছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে শেষ করার। এ ব্যাপারে সকলকে অতন্দ্র প্রহরীর ভ’মিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সহ-সভাপতি আবুল বাশার চুন্নু, নির্বাহী সদস্য এম এ আওয়াল, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল পাশা মানিক, যুগ্ম সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, হাজী ইদ্রিস আলম, সাহাবউদ্দিন চৌধুরী লিটন প্রমুখ।
‘ঘাতক রাশেদ চৌধুরীকে অবিলম্বে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দাও’ লেখা ব্যানারের সামনে অনুষ্ঠিত এ র্যালির সঞ্চালনায় ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক আশরাব আলী খান লিটন। শুরুতে ১৫ এবং ২১ আগস্টে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয় জ্যাকসন হাইটস মোহাম্মদী সেন্টারের ইমাম কাজী কাইয়্যুম।
র্যালিতে অংশগ্রহণকারি নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক, মুক্তিযোদ্ধা সানাউল্লাহ, ফোরামের কোষাধ্যক্ষ আলিম খান আকাশ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি হাজী আবুল বাশার ভূইয়া সন্দ্বিপী, আলমগীর কবীর, মোরশেদ খান বদরুল, এটিএম রানা, ফখরুদ্দিন মিলন, জহিরুল ইসলাম, মাস্টার কামালউদ্দিন, হাজী ইদ্রিস আলী, আকবর হোসেন, নাজিম উদ্দিন, কাজী মোস্তফা, জামি, কার্জন প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন