বিনিয়োগ করেছিলেন এক হাজার ডলার। ব্যবসার চতুর্থ বছরে তহবিল বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ডলারে। হাজারিবাগ এবং নারায়ণগঞ্জে দুটি কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। কারখানা দুটিতে কাজ করছেন ৩৩ জন। আর নিউইয়র্কে কাজ করছেন ৬ তরুণীসহ ৮ প্রবাসী। এখন মাসিক গড়ে ৭০ হাজার ডলারের ব্যবসা হচ্ছে। সব মিলিয়ে গোপালগঞ্জের সন্তান সুমনা কে রিমির নেতৃত্বে ‘স্টাইল উইথ মি’ ১ জুন এফ-কমার্স থেকে ই-কমার্সে রূপান্তরিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে ১ জুন বুধবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকায় ‘জাফরান গ্রিল’ রেস্টুরেন্টের পার্টি হলে জমকালো এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ইউএস-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ (ইউএসবিসিসিআই) ‘স্টাইল উইথ মি’কে তাদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে।
সুমনা রিমি বলেন, ট্রেন্ড অনুযায়ী ফ্যাশন সম্পর্কে সচেতন যে কেউ বাসায় বসেই এই ব্যবসা করতে পারেন। অন্যের প্রতিষ্ঠানে শ্রম আর মেধার বিনিয়োগ ঘটিয়ে যে পারিশ্রমিক পাওয়া যায়, তার চেয়ে অনেক বেশি আসছে নিজের ব্যবসায়। একইসাথে তৃপ্তি পাওয়া যায় সুদূর এই প্রবাসে বাঙালি সংস্কৃতির পরিপূরক পোশাক-আশাক জনপ্রিয় করার মধ্য দিয়ে। এছাড়া, আমার দুটি কারখানায় শীঘ্রই আরও কিছু লোক নিয়োগ করতে হবে। ঢাকায় ‘ইস্টার্ন মল্লিকা’ বিপণিবিতানে সামনের মাসেই একটি স্টোর চালু করছি। সেখানেও লোক লাগবে।
সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন রিমির ঘনিষ্ঠ বান্ধবীরা- যারা তাকে প্রতিনিয়ত এই ব্যবসায় উৎসাহ যোগাচ্ছেন। তারা হলেন বিউটিফুল লেডিস অফ ইউএসএ-এর এডমিন তান্নি আফরিন, ফাহমি সিলভিয়া আখন্দ, নাদিয়া চোধুরী, কুইন্স বিইজ ইউএসএ-র এডমিন রুমা আহমেদ, আনিকা তাসনিম, রূপন্তি রুপ, তানজিন সুলতানা, সামাজিক উদ্যোক্তা মোহাম্মদ হিমেল, ইউএস-বাংলাদেশ চেম্বারের পরিচালক শেখ ফরহাদ এবং সদস্য ওবায়েদ হোসেন।
রিমি উল্লেখ করেন, মা-বাবা-ভাই নিয়ে নিউইয়র্কে দিন কাটছিল ডানকিন ডোনাটে কাজের মাধ্যমে। সেখানে কর্মরত অবস্থায়ই বাসায় ফিরে রান্না-বান্নাসহ ঘরের যাবতীয় কাজ শেষ করে ফেসবুকে সাম্প্রতিক ডিজাইনের পোশাক-আশাক নিয়ে কথা বলি। এভাবে ৫০ হাজারের অধিক ভক্ত হয়েছে আমার। পোশাক দেখার পর তারা ক্রয়ে আগ্রহ দেখান। এভাবেই আমি একজন উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছি। ডানকিন ডোনাটের ম্যানেজারের চাকরি ছেড়েছি। এমনকি আমার স্বামীও তার চাকরি ছেড়ে আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন।
রিমি দাবি জানান, মোবাইল অ্যাপও লঞ্চ করলেন তিনি। এতদিন শুধু তরুণী-গৃহিণীদের পোশাক নিয়ে ব্যবসা করলেও শীঘ্রই পুরুষের পোশাকও পাওয়া যাবে তার অ্যাপে।
‘স্টাইল উইথ মি’-এর উদ্যোক্তা সুমনা কে. রিমি জানান, একটি স্বাধীন পেশা হিসেবে আমি উদ্যোক্তা হওয়ার পথ বেছে নিয়েছি। প্রথমে আমি স্বল্প পরিসরে শুরু করেছি এফ-কমার্স।
এই অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিকল্পনা এবং তদারকির দায়িত্বে ছিলো বাংলাদেশি-আমেরিকান ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘ইউএসবিসিসিআই’এবং ইউএস-বিডি সফটওয়্যার এ্যান্ড টেকনোলজি লিমিটেড।
উল্লেখ্য, ‘স্টাইল উইথ মি’-র মোবাইল অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের কাজের তদারকির সামগ্রিক বিষয়টি দেখছে ইউএসবিডিসফট।
ইউএসবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট মো. লিটন আহমেদ ‘স্টাইল উইথ মি’-এর অগ্রযাত্রাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, পুরুষের পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা অত্যন্ত ইতিবাচক একটি বিষয়। দেশের পণ্য আমেরিকায় আরও জনপ্রিয় করতে যত রকমের সহায়তা দরকার আমার প্রতিষ্ঠান দিয়ে যাবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা