লোকে ওদের রোহিঙ্গা বলে, আমি মানুষ বলি
মস্তক-দেহ, বিবেক-বুদ্ধি সবি আছে, দেখোনা চক্ষু খুলি।
আছে বহু ভাষা, অলিখিত; জীবন তাদের নিষপেশিত,
পদে পদে নির্যাতিত; শোন তাদের কথা বলি।
বঙ্গ মাতার কোলঘেসে ভাই ওদের বসবাস,
বহুকাল ধরে; বহু জীবনের নির্বাক কারাবাস।
তুর্কি, মোঘল, আরব, ব্রিটিশ, পাঠান-সবাই ওদের চেনে,
জীবনগীতি আছে লেখা; ইতিহাসের পাতার বন্দি কোণে।
কখনো দাস-কখনো দসী, কখনো বিদ্রোহী সাজে
লোক মুখে শুনতে পাবে; ওরা অমানুষ-বড্ড বাজে।
মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে; ওদের বসতবাড়ি
চায়না কেউই থাকুক ওরা; স্বধীন পরাণ জুরি।
ব্রিটিশ বাংলার সস্তা শ্রমে; আছে ওদের অবদান
শোষিত হয়েছে বহুকাল ধরে; কেড়েছে বহু প্রাণ।
ব্রিটিশ গেল, জাপানী এল; বহু নারী ধর্ষিত হল
গণহত্যায় পুড়ল জীবন; সর্বক্ষণ এলোমেলো।
মুসলিম বলে কেউ থু থু দেয়; কেউবা করে গুলি
শোনো হে মানুষ, শোনো হে সমাজ - রোহিঙ্গার কথা বলি।
সাগর বুকে নৌকা তেড়ে; আসে ওরা শতশত
এপার ওপার দিনরাত্রিতে, জীবন ক্ষত ক্ষত।
প্রাচীন জীবন, প্রাচীন মানুষ; প্রাচীন নৃ-গোষ্ঠী
প্রতিবেশী দেশগুলোতে, হয়েছে শরণার্থী
একমুঠো ভাত পাবার আশায়; জীবন বিক্রি করে
মানোবাধিকার করছে চিৎকার; অনেক বছর ধোরে।
বাংলার মাটিতে আজো আছে ওরা; কেউ কি তাদের চেনা?
সেনা ক্যাম্পে করছে বসবাস; বাড়ছে বহু দেনা।
ও হে মায়ানমারের রাজ্য শাসক; দাওগো ওদের রাজ্য ফিরে
না পাও যদি তাও বলে দাও; ফেলোনাকো ওদের পিশে মেরে।
যদিও না পাও তাও করতে; বাংলার নামে দাও সে রাজ্য
এই বাংলা দেখিয়ে দেবে; কিভাবে করতে হয় সভ্য।
বিশ্বের বুকে দাঁড়াবে একদিন; এই রোহিঙ্গা বাঙ্গালী জাতি
আলোকিত করবে শিক্ষার আলো; উন্নয়নের বীরের ঘাঁটি।
লেখক: সদস্য বিভাগীয় লেখক পরিষদ, নিউ ইন্জিনিয়ারপাড়া, রংপুর।
বিডি প্রতিদিন/২৯ নভেম্বর ২০১৬/হিমেল