জামিল সাহেবের বাসার গৃহকর্মী ছেলেটি এসে বলল, "স্যার , সেই সাংবাদিক ব্যাটা আইছে, তারে ভিতরে পাডামু?"
-হ্যাঁ, পাঠিয়ে দে, আর সাথে দুই মগ কফি দিস।
-জে, স্যার দিতাছি।
-ওহ! মি. সাঈদ (সাংবাদিক) আসুন ভিতরে আসুন।
-ধন্যবাদ ,স্যার ।
-তা বলুন, আপনি কি আমার ৫৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সাক্ষাৎকার নিতে এসেছেন?
-জ্বি,স্যার। আপনার এই ৫৯ বছর বয়সে অভিনয় থেকে প্রাপ্তি কতখানি?
-এই জীবনে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের নিকট থেকে যতখানি ভালোবাসা পেয়েছি এটাই মনে হয় বাদবাকি সব প্রাপ্তিকে ম্লান করে দেয় ।
-অভিনয়ের হাতেখড়ি কোন জায়গা থেকে ?
-(ঠাণ্ডা চোখে বাঁকা মুচকি হাসি দিয়ে ) আপনি কি সত্যি জানতে চান? তাহলে বলছি...। রাজাকার কাকে বলে তা তো নিশ্চয়ই খুব ভালোভাবে জানেন। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সময় গুপ্ত রাজাকার ছিলেন। তিনি মুক্তিবাহিনীর সাথে হাত মিলিয়ে তাদের সব খবর পাকবাহিনীকে দিতেন। হঠাৎ একদিন বাবার লাশ পাওয়া যায়। লাশের পাশে আমি আর মা অনেক গড়াগড়ি দিয়ে কেঁদেছিলাম।
-আপনার বাবাকে কি মুক্তিযোদ্ধারা মেরে ফেলেছিলেন ?
-নাহ! আমিই মেরে ফেলি। ঘাড়ে রামদা দিয়ে কোপ দেই। সেদিন থেকেই মনে হয়েছিল, বাহ! আমি তো ঠাণ্ডা মাথায় ভালোই অভিনয় করি...
বাবাকে খুন করে কাঁদার অভিনয়ই ছিল আমার হাতেখড়ি ...!
লেখক: শিক্ষার্থী (ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ)
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
বিডি-প্রতিদিন/ ১০ ডিসেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ