২৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৩:৫০

ক্যারিয়ার বিকাশে ‘লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’

সারওয়ার উদ্দিন আহমেদ

ক্যারিয়ার বিকাশে ‘লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’

প্রতীকী ছবি

বিশ্বের সকল ‘আইকনিক’ মানুষদের মধ্যে একটি বিষয়ে অনেক মিল রয়েছে। তাদের প্রত্যেকেরই মানুষকে পথ দেখানো, উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত করার সম্মোহোনী ক্ষমতা ছিল। এর মাধ্যমেই তারা প্রত্যেকে নেতা হয়ে উঠেছিলেন। ইতিহাসের বিভিন্ন কালপরিক্রমায় দেখা গেছে, সফল মানুষেরা প্রতিকূল পরিবেশের বাধা পেরিয়ে নেতৃত্বপূর্ণ গুণাবলীর মাধ্যমে নিজেদের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।  

কর্মক্ষেত্রে সফল হওয়ার পেছনে যেসব ‘সফট স্কিল’ গুরুত্বপূর্ণ তার মধ্যে নেতৃত্ব প্রদানের গুণাবলী অন্যতম। নেতৃত্ব প্রদানের বিষয়টি কাগজপত্র বা ’ক্রেডেনশিয়াল’ এর মাধ্যমে দেখানো সম্ভব নয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনো ব্যক্তি একটি কোর্স করে নেতৃত্ব গুণাবলী অর্জন করতে পারবেন না; বরং এ দক্ষতাটি গড়ে উঠবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে। এটি হতে পারে স্কুলে দলগত কোন প্রতিযোগিতার দলনেতা হিসেবে, কোনো প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার হিসেবে কিংবা কোন বড় প্রকল্পের প্রধান হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে। 

একজন নেতা তার আশেপাশের মানুষদের সঠিক কাজটি করার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে থাকেন। তারা পথচলার গতিপথ নির্ধারণ করেন, দলকে অনুপ্রাণিত করেন এবং কীভাবে দায়িত্ব সামলানো ও তা বিভিন্নজনের মাঝে ভাগ করে দিতে হবে তা তিনি জানেন। সময়ে সময়ে  যোগ্যতার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে পারে কিন্তু নেতৃত্ব প্রদানের গুণাবলীর ধারাবাহিকতা ক্যারিয়ারের যেকোন সময়ে সফলতা নিয়ে আসতে পারে। 

পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী। পরিবর্তনশীল সময়ে নেতৃত্বপ্রদানের বিষয়টি একটি সর্বজনীন দক্ষতা, যা মানুষের সাথে সম্পৃক্ত করতে সহায়তা করে এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এ বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। চমৎকার নেতৃত্ব প্রদর্শনের বিষয়টি একজন মানুষকে প্রতিযোগিতায় একধাপ এগিয়ে রাখে; একইসঙ্গে তারা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে বোঝাতে সক্ষম হবেন যে, তারা দীর্ঘমেয়াদে প্রতিষ্ঠানের সফলতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।     

কর্মীদের নেতৃত্ব প্রদান ও পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্ব প্রদানে সক্ষম এমন মানুষের প্রয়োজন হয়। নেতৃত্বের বিকাশ প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মীদের মধ্যে থাকা প্রতিভাকে সামনের দিনগুলোতে আরো শাণিত করতে সাহায্য করে। নেতৃত্বের দক্ষতা বিষয়ক প্রোগ্রামগুলো প্রত্যেককে তাদের কাজকে ধারণ করা ও তাদেরকে দেয়া কাজগুলো সফলভাবে শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়; যা প্রত্যেককে ভালো কর্মী ও দক্ষ নেতাতে পরিণত করতে সাহায্য করে। 

নেতৃত্বের বিকাশ সংক্রান্ত প্রোগ্রাম কর্মীদের মানসিকভাবে উজ্জীবিত, কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি, সময়োপযোগী সিদ্ধান্তগ্রহণ ও ভবিষ্যৎ নেতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নেতৃত্বের বিকাশ সংক্রান্ত প্রোগ্রামগুলোর মাধ্যমে তরুণদেরকে প্রয়োজনীয় দক্ষতা বৃদ্ধি, আত্মবিশ্বাস ও অনুপ্রাণিত করে তাদের সত্যিকারের সামর্থ্যে উন্মোচনের মাধ্যমে সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে কাজ শুরু করেছে। 

দেশে মোনাশ কলেজ অস্ট্রেলিয়ার এক্সক্লুসিভ অংশীদার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সাল কলেজ বাংলাদেশ ‘গ্লোবাল স্টুডেন্ট লিডারশিপ প্রোগ্রাম’ চালু করেছে। একটি উন্নত সমাজ বিনির্মাণে আগামী দিনের নেতাদের প্রশিক্ষণ দেয়াই এ প্রোগ্রামটির উদ্দেশ্য।

আজকের দিনে নেতৃত্বপ্রদানের গুণাবলীকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বপ্রদানের দক্ষতা তাদেরকে আরও ভালোভাবে নেতৃত্বপ্রদানে সহায়তা করবে, কর্মীদের সেরাটা বের করে আনতে এবং সহকর্মীদের সাথে একসাথে কাজ করার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান ও নিজেদের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে। সময়ের পরিক্রমায় দক্ষতার পরিবর্তন আসবে কিন্তু নেতৃত্ব প্রদানের গুণাবলীর চাহিদা আজীবনই থাকবে। 

লেখক: ডিন অব অ্যাকাডেমিক অ্যাফেয়ার্স, ইউনিভার্সাল কলেজ বাংলাদেশ


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

সর্বশেষ খবর