শনিবার, ২১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

ফুল বিক্রি করে দুই বোনের বাজিমাত

শনিবারের সকাল ডেস্ক

ফুল বিক্রি করে দুই বোনের বাজিমাত

বেঙ্গালুরুর মেয়ে যশোদা ও রেহা কারতুরি আপন দুই বোন। একজন যখন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন অন্যজন তখন কলেজ ছাত্রী। ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন তারা। প্রতিদিন সকালে মাকে পূজা করতে দেখেন। মাকে প্রতিদিন বলতে শোনেন ‘আজও পূজার জন্য ভালো ফুল পাওয়া গেল না’।

এই একটি কথা  তাদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। সময়টা ২০১৯ সাল। মাকে পূজার জন্য প্রতিদিন সকালে তাজা ফুলের জোগান দিতে খুলে বসেন ফুলের ব্যবসা। শুরুতে ঘরের এবং প্রতিবেশীর চাহিদা পূরণে এই ব্যবসা শুরু করেছিলেন।

তারা প্রতিবেশীদের মাসিক চুক্তির ভিত্তিতে প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি ফুল পৌঁছে দেওয়া শুরু করলেন।  এই ব্যবসাতেই তাদের বার্ষিক আয় ৮ কোটি টাকা ছাড়ায়।

দুই বোন যশোদা ও রেহা কারতুরি ২০১৯ সালে যৌথভাবে একটি ফুল বিক্রয়কারী সংস্থা খোলেন। সংস্থার নাম রাখেন ‘হূভু’। কন্নড় ভাষায় হূভু শব্দের অর্থ ফুল। ২৭ বছর বয়সী যশোদা জানান, ব্যবসা শুরুর কথা ভাবার পর প্রথমে ফুলের বাজার নিয়ে গবেষণা করেন তিনি। ১০ লাখ টাকা মূলধন নিয়ে শুরু হয় তাদের কার্যক্রম। 

ফুলের ব্যবসা যশোদা ও রেহার কাছে নতুন কিছু নয়। তাদের বাবা রাম কারুতুরি ভারত, কেনিয়া ও ইথিওপিয়াতে গোলাপ চাষ করেন। নব্বইয়ের দশকে কেনিয়ার এই গোলাপ খেতটিই ছিল পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গোলাপ খেত। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করা যশোদা জানান আগের কয়েক দশকের তুলনায় অনেকটাই বদলে গিয়েছে ফুলের ব্যবসা।

আগে ফুলের তোড়ার প্রচলন বেশি থাকলেও বর্তমানে ঘরে ফুলের ব্যবহার বেড়েছে। রোজ পূজা দেওয়ার জন্য এখন বাজার থেকেই ফুল কেনেন মানুষ। পাশাপাশি, ঘর ও গাড়ি সাজাতেও বাড়ছে ফুলের ব্যবহার। তাই এই নতুন সংস্থার মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি ফুল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন তারা।

তার মতে, ভারতীয় ফুলের বাজারের একটি বড় অংশই এখনো অসংগঠিত। তারা এই অসংগঠিত ক্ষেত্রটিকে সংগঠিত করতে চান বলেও জানান। এরই মধ্যে কর্নাটক, তামিলনাড়ু ও কেরালার ৫০ জন ফুল চাষির সঙ্গে চুক্তি করেছেন তারা।

বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় দেড় লাখ অর্ডার পাচ্ছেন তারা। বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, চেন্নাই, মহীশূর, পুনে, মুম্বাই, গুরুগ্রাম এবং নয়ডা থেকেই বেশি আসে অর্ডার।

তাদের ফেসবুক পেজ থেকে শুরু করে নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে। সেখানে যে কেউ দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে ফুল অর্ডার করতে পারেন। ২৪ ঘণ্টাই তাদের এই সার্ভিস চালু থাকে। তারা ফুল দীর্ঘ সময় তাজা রাখার টিপসও দিয়ে থাকেন ক্রেতাদের। সম্পূর্ণ বিষমুক্ত এবং প্রাকৃতিক উপায়ে তারা ফুল চাষ করে থাকেন।

দুই বোনের এই কাজে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক মানুষের। ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগে তারা পেয়েছেন সাফল্য। এতে বদলে গেছে তাদের জীবন।  এটি এখন অন্যদের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

সর্বশেষ খবর