নাসা সম্প্রতি সতর্কবার্তা দিয়ে জানিয়েছে, সূর্যের তীব্র সক্রিয়তার কারণে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে শক্তিশালী সৌরঝড় পৃথিবীর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। এই সৌরঝড়ের কারণে যোগাযোগব্যবস্থা, নেভিগেশন সিস্টেম ও বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
গত ১৪ মে সূর্যের নতুন সক্রিয় দাগ ‘AR4087’ থেকে একটি প্রবল সৌর বিস্ফোরণ (X2.7 শ্রেণির সৌর ফ্লেয়ার) দেখা যায়। এটি এ বছরের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী সৌর বিস্ফোরণ। নাসার সৌর ডাইনামিকস অবজারভেটরি এ দৃশ্য ধারণ করে। বিস্ফোরণের ফলে ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু এলাকায় অস্থায়ীভাবে রেডিও যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
মার্কিন সংস্থা এনওএএ (NOAA) জানায়, কিছু এলাকায় ১০ মিনিটের মতো উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সির যোগাযোগ বন্ধ ছিল।
নাসা ও NOAA’র মহাকাশ আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্র সূর্যের এই সক্রিয় অঞ্চলটিকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। কারণ অঞ্চলটি থেকে আরও শক্তিশালী রশ্মি নির্গত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এটা মহাকাশে থাকা উপগ্রহ, নভোচারী এবং পৃথিবীর প্রযুক্তি নির্ভর অনেক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে জিপিএস, বিমানের যোগাযোগব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ গ্রিডে এর প্রভাব পড়তে পারে।
অরোরা (উত্তর-আলোকছটা) বিশেষজ্ঞ ভিনসেন্ট লেডভিনা জানান, পরিস্থিতি ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। ওই একই দাগ থেকে আবারো একটি এম-৫.৩ শ্রেণির বিস্ফোরণ ঘটেছে। সামনে কী অপেক্ষা করছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
সূর্য বর্তমানে তার ১১ বছরের চক্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে, যাকে বলা হয় ‘সোলার ম্যাক্সিমাম’। এই সময় সাধারণত এমন শক্তিশালী বিস্ফোরণ বেশি ঘটে। যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ২২ মে নাগাদ যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে চোখ ধাঁধানো অরোরার দেখা মিলতে পারে, যদিও এগুলো ভূচৌম্বকীয় অস্থিরতার ইঙ্গিতও দেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ মানুষের চিন্তার কিছু নেই। তবে বিমান, নৌচলাচল এবং স্যাটেলাইট-নির্ভর সংস্থাগুলোকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, যাতে প্রযুক্তিগত কোন সমস্যার মুখে না পড়ে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল