নাসার শক্তিশালী মহাকাশ টেলিস্কোপে সৌরজগতের বাইরে থেকে আসা এক ধূমকেতুতে পানি ও কার্বন ডাই–অক্সাইডের অস্তিত্ব ধরা পড়েছে। ধূমকেতুটির নাম ৩আই/অ্যাটলাস (3I/ATLAS)।
এটি ২০২৫ সালের ১ জুলাই অ্যাস্টেরয়েড টেরেস্ট্রিয়াল–ইমপ্যাক্ট লাস্ট অ্যালার্ট সিস্টেম (ATLAS) দ্বারা প্রথম শনাক্ত হয়। বর্তমানে এটি সূর্য থেকে প্রায় ৬৭.৫ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।নাসা জানিয়েছে, তাদের এসফেরেক্স নামের টেলিস্কোপ ৭ থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ধূমকেতুটি পর্যবেক্ষণ করে। এতে ধূমকেতুর চারপাশের গ্যাসীয় আবরণে প্রচুর কার্বন ডাই–অক্সাইড ধরা পড়ে। অল্প পরিমাণে পানি ও কার্বন মনোক্সাইডও শনাক্ত হয়েছে।
ধূমকেতুর উপাদান সৌরজগতের কুইপার বেল্টের বস্তুগুলোর মতো হওয়ায় বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এটি অন্য কোনো নক্ষত্রমণ্ডল থেকে উৎক্ষিপ্ত হয়ে এসেছে।
হাবল টেলিস্কোপে এর সবচেয়ে স্পষ্ট ছবি পাওয়া গেছে। এতে দেখা গেছে, ধূমকেতুর বরফে মোড়া কেন্দ্র (nucleus) আকারে খুব ছোট, সর্বোচ্চ সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার ব্যাসবিশিষ্ট। আগে বিজ্ঞানীরা এর আকার কয়েক দশ কিলোমিটার বলে ধারণা করেছিলেন।
নাসা বলছে, ধূমকেতুটি আন্তঃনাক্ষত্রিক বস্তু হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। কারণ, এর কক্ষপথ সূর্যকে ঘিরে নয়, বরং হাইপারবোলিক (অর্ধবৃত্তাকার উন্মুক্ত পথ) আকারের। তাই এটি কেবল আমাদের সৌরজগত অতিক্রম করে আবার মহাশূন্যে ফিরে যাবে। নাসা নিশ্চিত করেছে—এটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয়।
তবে কিছু বিজ্ঞানী এ নিয়ে ভিন্নমত দিয়েছেন। হার্ভার্ডের তাত্ত্বিক পদার্থবিদ প্রফেসর অ্যাভি লোয়েব দাবি করেছেন, এর অস্বাভাবিক কক্ষপথ ও আকার দেখে মনে হচ্ছে এটি হয়তো কোনো উন্নত সভ্যতার পাঠানো প্রযুক্তি হতে পারে। যদিও এ নিয়ে এখনো নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল