অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং টেস্টে ১৩ হাজার ৩৭৮ রান ও ৪১টি সেঞ্চুরি করেছেন। কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক জানিয়েছেন, টেস্টে শচীন টেন্ডুলকারকে (১৫,৯২১ রান) টপকে যাবেন ইংল্যান্ডের জো রুট। ইংলিশ ক্রিকেটারের বয়স ৩৩। রয়েছেন দারুণ ছন্দে। এক যুগের ক্যারিয়ারে ১৪৫ টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন ৩৩টি। চলতি বছরেই ৩টি। এমনভাবে ছুটছেন ইংলিশ ব্যাটার, যেন রান ক্ষুধায় ভুগছেন। লর্ডসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৪২৭ রান করেছে ইংল্যান্ড। যেখানে সেঞ্চুরি দুটি। রুট খেলেন ১৪৩ রানের ইনিংস। ফাস্ট বোলার গাস অ্যাটকিনসন ৮ নম্বরে ব্যাটিং করে ১১৮ রানের ইনিংস খেলেন।
২০৬ বলে ১৮ চারে সাজানো ইনিংসটি রুটের ক্যারিয়ারের ৩৩ নম্বর সেঞ্চুরি এবং লর্ডসে সপ্তম। যা লর্ডসে যে কোনো ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত সর্বাধিক সেঞ্চুরি। এটা একটি নতুন রেকর্ড। ইংলিশ ক্রিকেটারদের মধ্যে এককভাবে এতদিন সবচেয়ে সেঞ্চুরির মালিক ছিলেন সাবেক অধিনাযক অ্যালিয়েস্টার কুক। বৃহস্পতিবার তাকে স্পর্শ করেন রুট। সেঞ্চুরির পর হেলমেট খুলে তাতে চুমু খান। এরপর দর্শকদের অভিনন্দনের জবাব দিয়ে আকাশের দিকে আঙুল তুলে কী যেন খুঁজলেন। তখনই স্পষ্ট হলো, বিশাল আকাশে তিনি খুঁজছেন তার মেন্টর আরেক ইংলিশ ক্রিকেটার গ্রাহাম থর্পকে। যিনি ৫৫ বছর বয়সে ৪ আগস্ট ট্রেনে কাটা পরে মারা গেছেন। ক্যারিয়ারের ৩৩ নম্বর সেঞ্চুরিটিকে রুট উৎসর্গ করেছেন মেন্টর থর্পকে। তিনি বলেন, ‘সিনিয়র ক্রিকেটার হউক, কোচ বা মেন্টর- ক্যারিয়ারজুড়ে অনেক মানুষের সঙ্গে কাজ করতে পেরে ও সংস্পর্শ পেয়ে আমি খুবই ভাগ্যবান। থর্প তেমনই একজন, যার কাছ থেকে অনেক কিছু পেয়েছি। সেঞ্চুরির এই মুহূর্তটিতে তাই তাকে স্মরণ করতে পারাটা দারুণ ছিল। সে এমন একজন, যার অভাব আমি যন্ত্রণাদায়কভাবে অনুভব করব। আমার খেলায় ও আমার ক্যারিয়ারে তার অবদান অনেক। আজকে আমি যেখানে এসেছি, তার সহায়তা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না।’
বাঁ হাতি থর্পের টেস্ট অভিষেক ১৯৯৩ সালে। অ্যাসেজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেকে সেঞ্চুরি করে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন থর্প। ইংল্যান্ডের হয়ে ১০০ টেস্টে থর্প ১৬ সেঞ্চুরিতে রান করেছেন ৬ হাজার ৭৪৪। ক্যারিয়ার শেষে কোচিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেন বাঁ হাতি ক্রিকেটার। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করেছেন লম্বা সময়। ২০১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলেও তিনি ছিলেন সহকারী কোচ। ২০২২ সালে আফগানিস্তান জাতীয় দলের কোচ ছিলেন থর্প। রুটকে জাতীয় দলে নিয়ে আসেন থর্প। এটা স্বীকার করেছেন সাবেক অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘আমার মধ্যে কিছু একটা দেখেছিলেন তিনি। এরপর তিনি আমাকে বাধ্য করেছিলেন তার সঙ্গে ব্যাটিং নিয়ে কাজ করতে। স্পিনের বিপক্ষে আমার ব্যাটিং উন্নতিতে ক্লান্তিহীন কাজ করেছেন।’ মেন্টর থর্পকে উৎসর্গ করে একটি মানসিক তৃপ্তি পেয়েছেন রুট।