‘আরব আমিরাতের বিপক্ষে আমাদের সিরিজটা ভালো যায়নি। সিরিজটা হেরে যাওয়ায় ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাসে কিছুটা ঘাটতি থাকবে। আত্মবিশ্বাসে চিড় নিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজ খেলবে ক্রিকেটাররা। আমি মনে করি পাকিস্তানের বিপক্ষে আমাদের হারানোর কিছু নেই। লিটনদের কাছে আমার পরামর্শ থাকবে অলআউট ক্রিকেট খেলার।’ টাইগারদের সাবেক অধিনায়ক ও নির্বাচক হাবিবুল বাশার বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ নিয়ে কথাগুলো বলেন। ৩ ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলতে লিটন দাসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এখন লাহোরে। লাহোর গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ২৮, ৩০ মে এবং ১ জুন ম্যাচ তিনটি খেলবে।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়াম একেবারেই অপরিচিত নয় টাইগার ক্রিকেটারদের। এখানে টেস্ট না খেললেও ৭টি ওয়ানডে ও ২টি টি-২০ ম্যাচ খেলেছে। পাকিস্তানের মাটিতে এর আগে একটি মাত্র টি-২০ সিরিজ খেলেছে টাইগাররা। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের মাটিতে ৩ ম্যাচের টি-২০ সিরিজটি খেলেছিল। সেবার যদিও একটি ম্যাচ হতে পারেনি বৃষ্টিতে। বাকি দুটি ম্যাচেই হেরেছিল যথাক্রমে ৫ ও ৯ উইকেটে। প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পর ফের লাহোরে দুই দেশ মুখোমুখি হচ্ছে। শুরুতে সিরিজটি ৫ ম্যাচের হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধে সিরিজের ভবিষ্যৎ না হওয়ার শঙ্কায় পড়েছিল। পরবর্তীতে দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড আলাপ-আলোচনা করে ৩ ম্যাচ সিরিজ খেলতে সম্মত হয়। আমিরাতের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলে লিটন বাহিনী এখন পাকিস্তানে। ক্রিকেটাররা দুই ধাপে পা রেখেছেন লাহোরে। বাংলাদেশ সময় আজ রাত সাড়ে ৮টায় অনুশীলন করবেন লিটনরা।
লাহোরে টাইগাররা ৭টি ওয়ানডে খেলে জিতেছে ২টি। আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়েছে। এই মাঠে টাইগাররা সর্বশেষ খেলেছে ২০২৩ সালে এশিয়া কাপে। যদিও পাকিস্তানের মাটিতে সর্বশেষ খেলেছে গত বছর আগস্টে। সেবার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলেছিল রাওয়ালপিন্ডিতে। প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। ভিন্ন ফরম্যাটের খেলা হলেও ম্যাচটির পারফরম্যান্স লিটনদের সাহস জোগাবে বলেন বাশার, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা সর্বশেষ যে ম্যাচ খেলেছি, সেটা ছিল ভিন্ন ফরম্যাটের। কিন্তু সেই পারফরম্যান্স ক্রিকেটারদের সাহস জোগাবে নিঃসন্দেহে।’ রাওয়ালপিন্ডিতে টেস্ট দুটি বাংলাদেশ জিতেছিল যথাক্রমে ১০ ও ৬ উইকেটে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ বেশ পিছিয়ে। দুই দল ১৯টি টি-২০ ম্যাচ খেলেছে পরস্পরের বিপক্ষে। বাংলাদেশের জয় মাত্র ৩টি এবং হার ১৬টি। দুই দলের সর্বশেষ মুখোমুখিতে বাংলাদেশ জিতেছিল। ২০২৩ সালে চীনের হ্যাংঝুতে এশিয়ান গেমসে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছিল বাংলাদেশ। এ জয়ও সাহসী করবে লিটনদের। সাবেক অধিনায়ক বাশারের মতে সিরিজটি লিটনদের জন্য অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে, ‘ঘরের মাটিতে পাকিস্তান বরাবরই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। তবে পাকিস্তানকে আলাদা করে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। পাকিস্তান আনপ্রেডিক্টেবল দল। তাদের পারফরম্যান্স সবসময়ই উঠানামা করে। তারপরও আমি বলব, সিরিজটি বাংলাদেশের জন্য অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। কঠিন লড়াই করতে হবে প্রতিটি বিভাগে।’
লাহোরে বাশারের খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০০৩ সালে ওয়ানডে খেলেছিল দুই দল। ৪২ রানে হারের ম্যাচে বাশারের ব্যাট থেকে বেরিয়েছিল ১৪ রান। সেজন্য লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে ধারণা রয়েছে সাবেক অধিনায়কের। উইকেটের আচরণ নিয়ে বাশার বলেন, ‘লাহোরে উইকেট বরাবরই বোলিং ফ্রেন্ডলি। তবে এবার খেলা হবে জুন মাসে। উইকেট শুষ্ক থাকবে আশা করছি।’ উইকেটের আচরণ যেমনই থাকুক, খেলা হবে রাত ৯টায়। কুয়াশা ব্যবধান গড়ে দিতে পারে ম্যাচের।