বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনের জন্য বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে নতুন করে কাউন্সিলর মনোনয়ন দিতে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের চিঠির কার্যকারিতা ১৫ দিনের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাই কোর্ট। হাই কোর্টের এ আদেশ ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করে দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। গতকাল চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এ আদেশ দিয়েছেন। বিসিবির আইনজীবী মাহিন এম রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাই কোর্টের আদেশটি স্থগিত করেছেন চেম্বার জজ আদালত। ওইদিন চেম্বার আদালতেই আবেদনটির ফের শুনানি হবে। বিসিবির পক্ষ থেকে আমরা শুনানিতে অংশ নিব। চেম্বার আদালতে আবেদনের পক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ শুনানি করেন বলে জানান বিসিবির এ আইনজীবী। তিনি বলেন, হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত হওয়ায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিসিবি সভাপতির দেওয়া চিঠি অনুযায়ী নতুন করে কাউন্সিলর মনোনয়ন দিতে হবে।
এর আগে বিসিবি পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচ?নের জন্য বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে নতুন করে কাউন্সিলর মনোনয়ন দিতে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করে আদেশ দেন হাই কোর্ট। এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিবের দেওয়া বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলামের চিঠি কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। বিসিবি সভাপতিসহ বিবাদীদের ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। আর অন্তর্বর্তী আদেশে চিঠির কার্যকারিতা ১৫ দিনের জন্য স্থগিত করেন হাই কোর্ট। এ আদেশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্থগিত করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত।
গত ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে বিসিবি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ ৬ অক্টোবর। বিসিবির গঠনতন্ত্রে উল্লেখ আছে, জেলা বা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে একজন সাবেক খেলোয়াড় বা ক্রীড়া সংগঠককে কাউন্সিলর করতে হবে। মনোনীত কাউন্সিলররা নির্বাচনে ভোট দিয়ে থাকেন। গত ১ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলর মনোনয়ন করতে বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর ছিল মনোনীত কাউন্সিলরদের নাম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। এর মধ্যে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে কাউন্সিলর মনোনীত হয়েছিলেন সাবেক খেলোয়াড় ও ক্রীড়া সংগঠকের অনেকে। কাউন্সিলর মনোনীত ফরম বিসিবিতে জমাও হয়েছিল বেঁধে দেওয়া সময়ে। কিন্তু গত ১৮ সেপ্টেম্বর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, বিসিবির কাউন্সিলর হিসেবে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে নাম প্রেরণের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা যথাযথভাবে মানা হয়নি। আগের ফরম বাতিল করে তাই বিসিবি থেকে পাঠানো নতুন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কাউন্সিলরের নাম পাঠাতে হবে। এ চিঠির কার্যকারিতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট করেন মনোনীত কাউন্সিলর রাজবাড়ীর মঞ্জুরুল আলম, গোপালগঞ্জের জসিম উদ্দিন খসরু, লক্ষ্মীপুরের মঈনুদ্দিন চৌধুরী ও টাঙ্গাইলের আলী ইমাম।