পেশাদার ফুটবল লিগ এগিয়ে চলেছে। কার ঘরে এবার শিরোপার ট্রফি যাবে বলা মুশকিল। এখনো লিগের অনেক ম্যাচ বাকি রয়েছে। শিরোপা জেতার জন্য এবার শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব সেরা তারকাদের নিয়ে দল গঠন করেছে। এর পেছনে দুদলই অঢেল অর্থ খরচ করেছে। ঢাকা আবাহনী ততটা শক্তিশালী দল না গড়লেও এবারে মৌসুমে তাদের বাজেট একেবারে কম নয়। কেন জানি তিনটি দলেরই পারফরম্যান্স দেখে এখন পর্যন্ত দর্শকরা সন্তুষ্ট হতে পারছেন না। বিশেষ করে শেখ রাসেল ও শেখ জামালের। তারকা ফুটবলারদের নিষ্ক্রিয়তা দর্শকদের অবাক করছে। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলের কাছে পয়েন্ট হারাচ্ছে তারা। আগেও বড় দল লিগে ছোট দলের কাছে হোঁচট খেয়েছে। কিন্তু এবার যে অবস্থা তাতে মনে হয় তারকা ফুটবলাররা বলে লাথি মারতেই ভুলে গেছেন।
এনিয়ে ফুটবলপ্রেমীরা বেশ শঙ্কিত। কারণ সামনেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশকে ব্যস্ত সময় কাটাতে হবে। জুনেই বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব। চলবে মার্চ পর্যন্ত। ডিসেম্বরে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। লিগে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স দেখেই ক্যাম্প শুরু হবে। কোচ লোডডিক ক্রুইফ ঢাকা আসার পর প্রতিটি ম্যাচ দেখছেন। খেলোয়াড়দের মান নিয়ে মিডিয়ার সামনে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। কিন্তু তার সহযোগিদের কাছে তারকাদের পারফরম্যান্সে বিরক্ত প্রকাশ করেছেন। কথা হচ্ছে তারকারা সুনাম অনুযায়ী খেলতে পারছেন না কেন? এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছিল জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক গোলরক্ষক আমিনুল হকের কাছে। আমিনুল বললেন, ছোট দলের কাছে পয়েন্ট হারানোটা আমি ফ্যাক্টর মনে করি না। আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এটা ঠিক তারকারা তেমনভাবে জ্বলে উঠতে পারছেন না। এর পেছনে দুটো কারণ হতে পারে। এক বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীল। আর আগাম অর্থ পাওয়াতে তারা মনোযোগ সহকারে খেলছেন না। এতে শুধু ফেবারিট দলগুলোর দুশ্চিন্তা বাড়ছে না। সামনে জাতীয় দল গঠন নিয়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ যতই খারাপ খেলুক না কেন, তারকাদের নিয়েই জাতীয় দল গঠন করতে হবে। এখন লিগেই যদি ব্যর্থতার পরিচয় দেন আন্তর্জাতিক আসরে ভালো করবে কিনা তা নিয়ে সংশয় থেকে যায়। আসলে এর জন্য ভালো খেলার ব্যাপারে খেলোয়াড়দের আগ্রহ থাকতে হবে। চিন্তা করতে হবে তাদের ভালোমন্দের ওপর নির্ভর করছে দেশের সম্মান। অর্থ পেয়ে গেছি, ভালো খেলে লাভ কি, এই প্রবণতা যদি কারও ভিতরে থাকে তাহলে তিনি শুধু নিজের ক্ষতি করছেন না। দেশের ফুটবলকেও হুমকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।