নিবিড় মনে অনুশীলন করছেন রশীদ খান। মুখে হাসি নেই। যেন মাথায় চাপের পাহাড়। তার স্টিকেই তো ভারতের ভরসা! তাই গতকাল বেশ চিন্তিতই মনে হলো দুবারের এশিয়ান ট্যুর শিরোপা জয়ী উদীয়মান গলফারকে। সিঙ্গাপুরের মাদরান মামতকেও দেখা গেল বেশ গম্ভীর। একের পর এক লম্বা শট নিচ্ছেন থাইল্যান্ডের চ্যাপচাই নিরাত। এশিয়ান ট্যুরের সবচেয়ে সফল গলফার থেয়র্ন রেচ্যান্টও অনুশীলনে মহামগ্ন! বসুন্ধরা বাংলাদেশ ওপেনে দৃষ্টি যাদের দিকে থাকবে তাদের মধ্যে কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে কেবল সিদ্দিকুর রহমানকেই দেখা গেল হাস্যোজ্জ্বল! দেশসেরা গলফারকে কেন্দ্র করে কিছুটা জটলা! কেউ ছবি তুলছেন, কেউবা ব্যস্ত সেলফি তুলতে! সিদ্দিকুরের এই হাসি শেষ দিন পর্যন্ত থাকবে তো? তবে নিজেই জানালেন আত্মবিশ্বাসের কথা। সিদ্দিকুর বলেন, ‘যদি আমি আমার স্বাভাবিক খেলাটা প্রদর্শন করতে পারি এই কোর্সে, তবে সহজেই শিরোপা জয় করতে পারব।’ আর টুর্নামেন্টের আগের দিন টেনশনের বদলে হাসির কারণ হচ্ছে, প্রথমবার এশিয়ান ট্যুরের মতো এত বিশাল এক টুর্নামেন্টে ঘরের কোর্সে খেলতে পারা। সিদ্দিকুরের কাছে এটি ঐতিহাসিক এক মুহূর্ত। শুধু সিদ্দিকুর কেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষেরও গর্বের মুহূর্ত। আজ কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে সকাল সাড়ে ৬টায় খেলা মাঠে গড়ানোর মধ্য দিয়েই খুলে যাচ্ছে স্বপ্নের দুয়ার। স্বপ্নই তো! এত বড় মাপের একটা গলফ টুর্নামেন্ট দেশের মাটিতে হবে, এটা কি কল্পনাতীত নয়! অন্যান্য যেকোনো ক্রীড়া ইভেন্ট আয়োজনের চেয়ে গলফে খরচ অনেক বেশি। তাছাড়া গলফ তো আর আমাদের দেশে তেমন পরিচিত খেলা নয়। তাই স্পন্সরের ব্যাপারটি ছিল সর্বাগ্রে। কিন্তু বসুন্ধরা গ্রুপের মতো দেশের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে বলেই সম্ভব হচ্ছে এই আয়োজনের। তাই বসুন্ধরাকে অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশ গলফ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ বলেন, ‘এশিয়ান ট্যুরের আয়োজন করা সত্যি আমাদের জন্য অনেক বড় ঘটনা। এতে আমাদের দেশে গলফের জনপ্রিয়তা অনেক বেড়ে যাবে। এমন একটি টুর্নামেন্টে পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ।’ গতকাল সকালে প্রো-অ্যাম টুর্নামেন্ট আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে গেল এশিয়ান ট্যুরের আনুষ্ঠানিক সূচনা। এই প্রো-অ্যাম টুর্নামেন্টে অংশ নেন টাইটেল স্পন্সর বসুন্ধরা গ্রুপের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাফওয়ান সোবহান। মূলত তার আগ্রহ ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টাতেই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গলফে এত বড় আসর বসছে। বসুন্ধরা বাংলাদেশ ওপেনে খেলতে আসা গলফারদের সঙ্গে সাফওয়ান সোবহান মেতে উঠেছিলেন প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ওপনের শীর্ষ গলফার ১৮টি এশিয়ান ট্যুর টুর্নামেন্ট জয়ী খাওর্ন উইরাচান্তের সঙ্গে খেলেন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন গলফ ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান ও বাংলাদেশে নিযুক্ত থাই রাষ্ট্রদূত। ২৫ পেশাদার ও ৭৫ জন অ্যামাচার গলফারের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই প্রো-অ্যাম প্রতিযোগিতা শেষ পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত করতে হয় বৃষ্টির কারণে। প্রো-অ্যাম টুর্নামেন্ট শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারও তুলে দেন সাফওয়ান সোবহান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা মাহবুব হায়দার, হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং এম এম জসিম উদ্দিন ও বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা লে. কর্নেল (অব.) খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদ। চার দিনের এই টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে ২৪ দেশের ১৫৫ গলফার। তবে এর মধ্যে অন্তত টপ ৩০-৩৫ জন গলফার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করবেন। যাদের মধ্যে বাংলাদেশের ১০-১২ জনকে দেখা গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এবারের আসরে বাংলাদেশের মোট ৩১ জন গলফার অংশ নেবেন। যাদের মধ্যে ২৬ জন পেশাদার। শীর্ষ ১০ জন তো যেকোনো গলফারকে হারানোর ক্ষমতা রাখেন। তবে দেশবাসীর দৃষ্টি থাকবে সিদ্দিকুর রহমানের দিকেই। খেলাটা যেহেতু কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে তাই সবার আগে নিতে হবে সাখাওয়াত হোসেন সোহেলের নাম। কেননা এই কোর্সে চার দিনের খেলায় পারের চেয়ে সর্বোচ্চ ১৯ শট কম খেলার রেকর্ড আছে তারই। তাই এবার এই টুর্নামেন্টেও শিরোপা জয়ের ব্যাপারে দারুণ আশাবাদী সোহেল। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘টার্গেট অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হওয়া। যদি আমি আমার স্বাভাবিক খেলা প্রদর্শন করতে পারি তাহলেই হবে। আমি এ পর্যন্ত প্রায় ৩০টি এশিয়ান ট্যুরে অংশ নিয়েছি। তবে দেশের মাটিতে এই প্রথম। নিজের দেশে এশিয়ান ট্যুর খেলার আনন্দই আলাদা। এখানে চ্যালেঞ্জটাও ফিল করছি। আমি খুবই আত্মবিশ্বাসী। আশা করি ভালো ফলই হবে। এখন দেখা যাক।’ আশাবাদী দেশের আরেক তারকা গলফার জামাল হোসেন মোল্লাও। তিনি বলেন, ‘আবহাওয়া ভালো থাকলে আমার বিশ্বাস আমি ভালো করব। আমার লক্ষ্যই থাকবে শিরোপা জয়। আমি দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। আমি কিংবা আমাদের কেউ যাতে এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে।’ তবে ঘরের কোর্সে এমন একটা টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়াটাই জামালের কাছে ইতিহাস গড়ার মতো ব্যাপার। এজন্য তিনি পৃষ্ঠপোষক বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। জামাল বলেন, ‘আমি সবার আগে বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ দেব। তারা এগিয়ে না আসলে এতো বড় টুর্নামেন্ট দেশের মাটিতে করা সম্ভব হতো না। সত্যি কথা বলতে কি, আমি চিন্তাও করিনি দেশের মাটিতে এমন একটি টুর্নামেন্টে খেলব। এটা কল্পনাতীত। তাই নিজের ভিতর একটা অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছে।’
শিরোনাম
- হাসিনার বিরুদ্ধে মামলায় ট্রাইব্যুনালে ১২ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ
- ডাকসু নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি : ছাত্রদল
- জুরাইনে ফুটপাতে পড়েছিল দুই লাশ
- সম্পর্ক জোরদারে ভারতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- তিন শর্তে পিতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া যেতে পারে : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
- থাকছে না নিবন্ধন পরীক্ষা, যে পদ্ধতিতে হবে শিক্ষক নিয়োগ
- বদলে যাচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার নাম
- আগস্টের ১৭ দিনে রেমিট্যান্স ১৪২৪ মিলিয়ন ডলার
- সচিব হলেন আবু ইউসুফ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পদায়ন
- সাদাপাথরকাণ্ড: সিলেটের জেলা প্রশাসক ও ইউএনও বদলি
- মোদিকে ফোনে কী বললেন পুতিন?
- বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে কমিটি গঠন
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করতে অভিযান
- ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে লড়বেন উমামা
- নরওয়ের তেল শোধনাগার অবরোধ গ্রেটা থুনবার্গের
- মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে নতুন সচিব রেহানা পারভীন
- করিডোর ইস্যুতে আর্মেনিয়া যাচ্ছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট
- টেকনাফে দেড় কোটি টাকার ইয়াবাসহ কারবারি গ্রেপ্তার
- নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ২৭৬৩৭ জন নিয়োগ
- ইউক্রেনকে ভর্ৎসনা হাঙ্গেরির