১৯২৯ সালে গঠন হয় ফিফার। যাত্রা শুরুর পর থেকে অনেক ঝড় সামলেছে। কিন্তু এবারের মতো ঝড়ের ধাক্কা এর আগে কখনোই গায়ে লাগেনি। ফিফা; বিশ্ব ফুটবলের শাসক সংস্থা। বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে ধনী ফেডারেশন। অথচ এখন দুর্নীতির অভিযোগে টালমাটাল। আজ ফিফার নির্বাচন। নির্বাচন করছেন বর্তমান সভাপতি সেপ ব্লাটার। তার প্রতিদ্বন্দ্বী জর্ডানের প্রিন্স আলি বিন আল হুসেন। নির্বাচনের আগে দুর্নীতির অভিযোগে ৭ কর্মকর্তা গ্রেফতার হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্লাটার। ইউরোপীয়ান ফুটবল ফেডারেশন (ইউয়েফা)সহ অনেকেই পদত্যাগ চাইছেন ব্লাটারের। কিন্তু ব্লাটার তাতে রাজি নন। দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় আর্জেন্টাইন ফুটবল লিজেণ্ড দিয়াগো ম্যারাডোনা চোর বলেছেন ব্ল্যাটারকে। শুধু ব্লাটার নয়, ফিফার কার্যক্রম এখন আতশী কাচের নিচে চলে এসেছে। ২০১৮ ও ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলও আশঙ্কার জালে জড়িয়ে পড়েছে। এছাড়াও স্পন্সর কোম্পানি কোক, অ্যাডিডাস তদন্তের দাবি জানিয়েছে। সব মিলিয়ে দুর্নীতি ঝড়ে টালমাটাল ফিফা।
গত দুই দশক ধরেই আলোচনা হচ্ছে ফিফা কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কথা। কিন্তু প্রমাণ না থাকায় কখনোই আলোর মুখ দেখছিল না। কিন্তু এবার মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিবিআই তদন্ত করে ২৭ মে জুরিখে ফিফার দুই সহ সভাপতিসহ ৭ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে। জানানো হয়, গত এক দশকে ১ কোটি ডলারের উপর ঘুষ নিয়েছেন এসব কর্মকর্তা। গ্রেফতারের পর সারা বিশ্বে নিন্দার ঝড় বয়ে গেছে। স্পন্সর কোম্পানি কোক, অ্যাডিডাস, ভিসা, ম্যাকডোনাল্ডস সুষুম তদন্তের কথা বলে ফিফাকে। সঙ্গে হুমকিও দিয়ে রেখেছে, তদন্ত সুষুম না হলে এবং শুদ্ধি অভিযান ঠিক না হলে, তারা নিজেদের মানসন্মানের কথা বিবেচনা করে সরে দাঁড়াবে। উল্লেখ্য, কোক প্রতি বছর স্পন্সর বাবদ ৩০ মিলিয়ন ডলার বা ৩ কোটি ডলার দেয় ফিফাকে। শুধু স্পন্সর কোম্পানির হুমকিতে টালমাটাল নয় ফিফা। হুমকিতে পড়েছে ২০১৮ সালের রাশিয়া ও ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপের ভবিষ্যৎও। উল্লেখ্য, অভিযোগ আছে ২০১০ সালের বিশ্বকাপের আয়োজক হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা অর্থের বিনিময়ে। এমন অন্ধকার অবস্থায় আজ ফিফার নির্বাচন। ১৯৯৮ সাল থেকে ফিফার সভাপতি হিসেবে থাকা ব্লাটারের পথ এই দুর্নীতি কাণ্ডে অমসৃণ হয়ে পড়ল। এখন দেখার বিষয় এই দুর্নীতির ঝড়ে কতটা বেসামাল হন সেপ ব্লাটার।