ঘরোয়া ফুটবলে আগের মতো দর্শক নেই। কিন্তু উত্তেজনা কি শেষ হয়ে গেছে? আগে প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডান না আবাহনী চ্যাম্পিয়ন হবে, এ নিয়ে মাঠে বল গড়ানো মাত্রই দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়ে যেত। এখন অবশ্য সে উত্তাপ নেই তার পরও লিগকে ঘিরে আকর্ষণ থাকছেই। কালের বিবর্তনে মোহামেডান ও আবাহনীর দাপট অতীতই বলা যায়। পেশাদার লিগ শুরুর পর আবাহনী চারবার শিরোপা জিতলেও মোহামেডানকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। গত কয়েক মৌসুমে আবাহনীকেও আবাহনীরূপে দেখা যাচ্ছে না। কোনোমতে দল গড়ে তারা মাঠে নামছে। যাদের ম্যাচ ঘিরে পুরো বাংলাদেশ কাঁপত, সেই মোহামেডান-আবাহনীর রুগ্ন চেহারা ভাবাই যায় না। এতটা খারাপ অবস্থা যে এখন দুই দলের ম্যাচে গ্যালারি থাকে প্রায় ফাঁকা। একসময় ভিক্টোরিয়া, ওয়ান্ডারার্স এমনকি অফিস দল বিজেএমসির দাপট ছিল তুঙ্গে। বর্তমান পেশাদার লিগে বিজেএমসি খেললেও ভিক্টোরিয়া ও ওয়ান্ডারার্সের দাপট যেন চিরতরে হারিয়ে গেছে।
ঘরোয়া ফুটবলে এখন পেশাদার লিগই সেরা আসর। যারা চ্যাম্পিয়ন হয় তারাই দেশসেরা দলের খেতাব পেয়ে যায়। সত্যি বলতে কি, এ লিগের জোয়ার বা আকর্ষণ যেটাই বলি না কেন শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ঘিরেই। মান ও জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ায় কেউ এখন ফুটবলের পেছনে অর্থ খরচ করতে চান না। এ জন্য মোহামেডান ও আবাহনীতে সেভাবে তারকা খেলোয়াড়ের দেখা মিলছে না। এ ক্ষেত্রে শেখ রাসেল ও শেখ জামাল সত্যিই ব্যতিক্রম। ক্রিকেটের জোয়ারের মধ্যেও দুই দল ফুটবলের পেছনে অঢেল অর্থ খরচ করছে। তাই তারকা ফুটবলারদের ঠিকানা মানেই শেখ রাসেল আর শেখ জামাল।
বেশ কজন সাবেক ফুটবলার বলেছেন, ফুটবল শেষ হয়ে যেত যদি শেখ রাসেল ও শেখ জামাল এগিয়ে না আসত। দুই দল টাকা খরচ করছে বলে পেশাদার লিগে উত্তেজনা টিকে আছে। শুধু লিগ কেন, ফুটবলাররাও এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। এমন দুর্দিনেও দুই দল পারিশ্রমিক হিসেবে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে। তা না হলে ফুটবলাররা হতাশায় শেষ হয়ে যেত। শক্তিশালী দল গড়ছে বলে শিরোপা ও রানার্স-আপের লড়াই তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে। উত্তেজনা বা উত্তাপ যতটুকু আছে তা শুধু শেখ রাসেল-শেখ জামালকে ঘিরেই।
গত মৌসুমে ট্রফিহীন থাকায় শেখ রাসেল এবার দেশসেরা খেলোয়াড় নিয়ে দল গঠন করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে লিগে শিরোপা জিততে পারেনি। রানার্স-আপ হয়ে লিগ শেষ করেছে তারা। শক্তিশালী দল গড়ার পর চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলে ক্লাব আর খেলোয়াড়দের খোঁজখবর রাখে না। বকেয়া পেমেন্ট চাইতে গেলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে খেলোয়াড়দের বের করে দেওয়ার মতো লজ্জাকর ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। রানার্স-আপ দলের খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করার ঘটনা কখনো ঘটেনি। এবার শেখ রাসেল পেশাদার লিগে রানার্স-আপ হওয়ার পর দিনই খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে ট্রফি নিয়ে দেখা করতে যান। সেদিনই রানার্স-আপ হওয়ার জন্য ২৫ লাখ টাকার বোনাস ঘোষণা দেন ক্লাব চেয়ারম্যান। এটা ঠিক, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর অনেক ক্লাব খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করতে বোনাস দিয়েছে। কিন্তু রানার্স-আপ দলকে বোনাস, স্বপ্নেও ভাবা যেত না। সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিয়েছেন ক্রীড়াপ্রেমিক ক্লাব চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীর। এতে শুধু শেখ রাসেলের খেলোয়াড়রা অনুপ্রাণিত হননি, রানার্স-আপের বোনাস মানি ঘোষণা ক্রীড়াঙ্গনে আলোড়ন তুলেছে। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ছাইদ হাসান কানন বলেন, ফুটবলাররা ব্যর্থ হলেই শুধু তিরস্কার করা হতো। কিন্তু শেখ রাসেল এবার রানার্স-আপ হয়ে যা করল তাতে ভালো খেলার ব্যাপারে খেলোয়াড়দের উৎসাহ বাড়িয়ে দিল। শেখ রাসেলের বোনাসে শুধু তাদের ফুটবলাররাই উৎসাহিত হবেন না, বাংলাদেশ ফুটবলে নতুন প্রাণ সঞ্চার করবে।
ঘুরে ফিরে এখন ফুটবলে শেখ রাসেল ও শেখ জামালকে নিয়েই আলোচনা। শক্তিশালী দল গড়ে শেখ জামাল এবারও লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এ নিয়ে তারা তিনবার লিগ জিতল। ২০১০ সালে নতুনভাবে আবির্ভূত হওয়ার পর শেখ জামাল যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তা সত্যি প্রশংসনীয়। এএফসি কাপ বাছাই পর্বেও চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরবর্তী রাউন্ডে উঠেছে। আগে দেশের ফুটবল বলতে মোহামেডান-আবাহনীকেই বোঝাত। সময় এখন পাল্টে গেছে। ঘরোয়া ফুটবলে সব উত্তেজনা বা আকর্ষণ এখন শেখ রাসেল ও শেখ জামালকে ঘিরেই। বলা যায়, দেশের ফুটবল বেঁচে আছে তাদেরই বদৌলতে। সামনের মৌসুমেও শেখ রাসেল শক্তিশালী দল গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শেখ জামালও সে পথে এগোচ্ছে। অন্যদের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। দুই প্রধান বা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল মানে মোহামেডান-আবাহনীকেই বোঝাত। এখন আর সে অবস্থা নেই, ফুটবলে জোয়ার তুলেছে শেখ রাসেল ও শেখ জামালই।
শিরোনাম
- আবারও ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে মিসাইলের বহর ছুড়েছে ইরান
- আমরা ইরানের আকাশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছি: ট্রাম্প
- রাষ্ট্রদূতের রহস্যময় বার্তা: ইরানে কি পরমাণু বোমা ফেলতে যাচ্ছেন ট্রাম্প?
- ইরানের ‘পরমাণু সমৃদ্ধি’ বিনাশে বড় সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প, ইঙ্গিত ভান্সের
- ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রে গুড়িয়ে গেছে ইসরায়েলের ‘মস্তিষ্ক’ খ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান
- দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় দুইজনের মৃত্যু
- ইসরায়েলি হামলায় ইরানে নিহত ৪৫০ ছাড়িয়েছে: মানবাধিকার সংস্থা
- ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত রাশিয়া : ক্রেমলিন
- বুশের মতো ভুল করছেন ট্রাম্প: সিএআইআর
- ইসরায়েল যুদ্ধক্ষেত্র প্রসারিত করছে: জর্ডানের বাদশাহ
- এক দিনে এয়ার ইন্ডিয়ার ৬টি ড্রিমলাইনার ফ্লাইট বাতিল
- কর্মকর্তাদের ইন্টারনেটযুক্ত সরঞ্জাম ব্যবহার নিষিদ্ধ করলো ইরান
- ঢাকা ও চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতার সতর্কতা
- নির্বাচনি ট্রেনে উঠতে রাজনৈতিক দল এখন প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করছে : প্রিন্স
- সুন্দরবন রক্ষায় কনক্রিট অ্যাকশন প্ল্যান করা হবে : সৈয়দা রিজওয়ানা
- শান্ত-মুশফিকের সেঞ্চুরিতে প্রথম দিনটা বাংলাদেশের
- ইরানে ইসরায়েলি হামলার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে: কাতার
- ঢাবির ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন
- কর্মদিবসে সড়কে সমাবেশ না করতে ডিএমপি কমিশনারের অনুরোধ
- ইরান ছেড়ে আজারবাইজানে গেলেন ৬০০ বিদেশি নাগরিক
জোয়ার এখন জামাল-রাসেল ঘিরেই
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর

রাষ্ট্রদূতের রহস্যময় বার্তা: ইরানে কি পরমাণু বোমা ফেলতে যাচ্ছেন ট্রাম্প?
৪৫ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইরানের ‘পরমাণু সমৃদ্ধি’ বিনাশে বড় সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প, ইঙ্গিত ভান্সের
১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রে গুড়িয়ে গেছে ইসরায়েলের ‘মস্তিষ্ক’ খ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান
১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

হঠাৎ জি-সেভেন সম্মেলন ছেড়ে ফেরার কারণ যুদ্ধবিরতি নয়, আরও বড় কিছু : ট্রাম্প
১১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইরানের পরমাণু অগ্রগতি নিয়ে ইসরায়েলের দাবি সত্য নয়, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা মূল্যায়ন
৬ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ট্রাম্প যেন ইচ্ছা করলেই যুদ্ধে জড়াতে না পারেন — প্রস্তাব আনছেন মার্কিন সিনেটর
২৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম