বিদায়ী ম্যাচ প্রত্যেক ক্রিকেটার কাছে একটা স্বপ্ন। কিন্তু এই স্বপ্ন অনেক তারকা ক্রিকেটারেরই পূরণ হয় না। যেমন হয়নি ভারতের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপ (২০০০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ, ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১১ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপ) জেতা যুবরাজ সিংয়ের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সোমবার অবসর নেওয়ার পরে যুবরাজ সিং জানিয়ে দিলেন কেন তিনি কোনো বিদায়ী ম্যাচ পাননি। তিনি জানালেন, বিসিসিআই তাকে কথা দিয়েছিল তিনি বিদায়ী ম্যাচ পাবেন, যদি ‘ইয়ো ইয়ো' ফিটনেস পরীক্ষায় ব্যর্থ হন। কিন্তু যুবরাজ সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যান। এরপর তাঁকে মাঠে ফেরার আর কোনও সুযোগ দেওয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন, তিনি কখনও বিসিসিআই বা অন্য কাউকে বিদায়ী ম্যাচের জন্য বলেননি।
৩৭ বছরের যুবরাজ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘আমাকে বলা হয়েছিল, যদি তুমি ‘‘ইয়ো ইয়ো'' টেস্টে পাশ না করতে পারো তাহলে বিদায়ী ম্যাচ খেলতে পারবে।'' আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ালেও আন্তর্জাতিক ফ্রিল্যান্স টি-২০ ক্যারিয়ারকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন তিনি।
যুবরাজ ভারতের জার্সি শেষবার পরেছিলেন ২০১৭ সালে। ভারতের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। সেবার ব্যাটে সাফল্য না পাওয়ার পরে তিনি আর ফিরতে পারেননি জাতীয় দলে। তাঁর সতীর্থদের মধ্যে বীরেন্দ্র শেবাগ বিদায়ী ম্যাচ না পাওয়ার যন্ত্রণার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু যুবরাজ জানিয়ে দেন, তিনি বিদায়ী ম্যাচ চাইতেন না। ঠিক যেমন ভিভিএস লক্ষ্মণ বা রাহুল দ্রাবিড়ের মতো কিংবদন্তিও বিদায়ী ম্যাচে খেলে অবসরের দুনিয়ায় যেতে চাননি।
যুবরাজ বলেন, ‘‘আমি বিসিসিআইয়ের কাউকে বলিনি আমি শেষ ম্যাচ খেলতে চাই। আমি ভাল খেললে মাঠ থেকেই অবসর নিতাম। আমি পছন্দ করিনি একটা ম্যাচ চেয়ে নিতে। আমি ওরকম ভাবে ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করি না।''
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি ওই সময় বলেছিলাম, আমি বিদায়ী ম্যাচ চাই না। ‘ইয়ো ইয়ো' টেস্টে পাস না করতে পারলে আমি নিঃশব্দে ঘরে চলে যাব।''
‘ইয়ো ইয়ো' টেস্ট হল এমন এক পরীক্ষা যেখানে ২০ মিটারের ব্যবধানে রাখা দু'টি শঙ্কুর ভিতরের পথে দৌড়তে হয় একটা ‘বিপ' ধ্বনির মধ্যে। একজন অ্যাথলিটের সক্ষমতা মাপতে এই পরীক্ষা নেওয়া হয়।
যে কোনও ভারতীয় ক্রিকেটারের কাছে ওই পরীক্ষায় বসা বাধ্যতামূলক। এ বিষয়ে তাঁর মত জানতে চাওয়া হলে যুবরাজ সাবধানী উত্তর দেন। তিনি বলেন, ‘‘দেখুন আমি নিশ্চিত এই নিয়ে কথা বলার অনেক সময় পাব। আমার অনেক কিছু বলার আছে। আমি এখনই কিছু বলছি না কারণ ভারত বিশ্বকাপে খেলছে। এবং আমি এই সময় খেলোয়াড়দের মধ্যে কোনও বিতর্ক তৈরি করতে চাচ্ছি না।''
২০১১ সালের বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় বলেন, ‘‘আমি চাই খেলোয়াড়রা সেরা জায়গায় থাকুক শেষ চারে যেতে। আমি নিশ্চিত আমার কথা বলার সময় আসবে। এবং আমি চাই না বিশ্বকাপের সময় অবসর নিয়ে সেই জায়গাটার মধ্যে ঢুকতে। আমি অবসর নিলাম কারণ আমি জীবনটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।'' সূত্র: এনডিটিভি
বিডি-প্রতিদিন/১১ জুন, ২০১৯/মাহবুব