একদিনের বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) তিনটি দাবি জানিয়েছিল, সেগুলোর কোনওটিই রাখা হয়নি। তাহলে কি একদিনের বিশ্বকাপ খেলবেন বাবর আজমরা? পিসিবি কর্তারা নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না। তারা তাকিয়ে আছেন সে দেশের সরকারের দিকে।
পাকিস্তানের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নির্ভর করছে শাহবাজ শরিফের সরকারের সিদ্ধান্তের উপর। পিসিবির এক মুখপাত্র বলেছেন, “ভারত সফরের জন্য সরকারের অনুমতি প্রয়োজন আমাদের। ভারতের কোথায় কোথায় আমরা যেতে পারি সেই সিদ্ধান্তও সরকার নেবে।”
পাকিস্তান সরকারের অনুমতি এবং পরামর্শ ছাড়া বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ সংক্রান্ত কোনও সিদ্ধান্ত তারা নিতে পারবেন না বলেও জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, “সপ্তাহ দুয়েক আগে আইসিসি সম্ভাব্য সূচি প্রকাশ করেছিল। আমাদের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। সেই সময়ের সঙ্গে এখনকার পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি।”
বাবরদের একদিনের বিশ্বকাপ খেলা নির্ভর করছে পাকিস্তান সরকারের তিনটি মন্ত্রণালয়ের উপর। সেগুলো হল- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। কোনও দেশে ক্রীড়াবিদদের পাঠানো কতটা নিরাপদ, তা প্রথমে খতিয়ে দেখে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের রিপোর্টের উপর নির্ভর করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। বাবরদের একদিনের বিশ্বকাপ খেলা এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবেচনাধীন।
গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের বিষয়টি ওঠে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালোচ বলেছিলেন, “আমাদের অবস্থান খুবই পরিষ্কার। শুধু ক্রিকেট নয়, কোনও খেলার সঙ্গেই আমরা রাজনীতি যুক্ত করার বিরোধী। পাকিস্তানে এশিয়া কাপ খেলতে ভারতের না আসার সিদ্ধান্ত হতাশাজনক। একদিনের বিশ্বকাপে আমাদের দলের অংশগ্রহণ নিয়ে মন্তব্য করা এখনই সম্ভব নয়। বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করার বিষয়টি আমরা এখন খতিয়ে দেখছি। সংশ্লিষ্ট সব কিছু বিবেচনা করে পিসিবিকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।”
পিসিবি কর্তারা জানিয়েছিলেন, চূড়ান্ত সূচি না দেখে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না। স্বভাবতই বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নিয়ে ইসলামাবাদের সবুজ সঙ্কেত এখনও নেই পিসিবির কাছে। ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা— সব কিছুই পর্যালোচনা করা হবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে।”
আইসিসির কাছে পিসিবি দাবি করেছিল, সুরক্ষার কারণে আহমেদাবাদে বাবরদের খেলা না দেওয়ার। চেন্নাইয়ের ঘূর্ণি উইকেটে আফগানিস্তান ও বেঙ্গালুরুর ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলতেও আপত্তি জানায় তারা। চেন্নাই ও বেঙ্গালুরুর ম্যাচ অদল-বদল করার দাবি করেছিল পিসিবি। আহমেদাবাদের ম্যাচ পারলে কলকাতায় স্থানান্তরিত করার প্রস্তাবও দেয় পাকিস্তান। কিন্তু তাদের কোনও দাবিই মানা হয়নি।
এই অবস্থায় একদিনের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের অংশগ্রহণ এখনও নিশ্চিত নয়। পিসিবি তাকিয়ে রয়েছে শাহবাজ সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে। বিশ্বকাপের খেলাগুলো হবে ভারতের ১০টি শহরে। ৫ অক্টোবর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে প্রতিযোগিতা। অংশগ্রহণ করবে ১০টি দেশ।
বিডি প্রতিদিন/কালাম