এক দল লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে, আরেক দল অবনমনের পর্যায়ে। খুব একটা গোনায় না থাকা সেই এস্পানিওলের কাছেই হোঁচট খেয়েছে তারকায় ঠাসা রিয়াল মাদ্রিদ। শনিবার রাতে এস্পানিওলের আরসিডিই স্টেডিয়ামে লা লিগার ম্যাচটি হেরেছে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে কার্লোস রোমেরো জয়সূচক একমাত্র গোলটি করেন। এমন হারের পর রেফারিকে দোষারোপ করেছেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি। বলেছেন, গোলের আগে লাল কার্ড পাওয়ার মতো ফাউল করেও বেঁচে গিয়েছিলেন রোমেরো। রেফারির লাল কার্ড দেখানোর কোনো ব্যাখ্যা হয় না।
তিনি আরও বলেন, রেফারি এবং ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটা ব্যাখ্যার কিছু নেই। সবাই দেখেছে কী ঘটেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে খেলোয়াড়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। সে জায়গায় পরিষ্কার একটা ফাউল হলো। খুবই কুৎসিত। সৌভাগ্যবশত খারাপ কিছু ঘটেনি। কিন্তু এটা দেখার জন্য ভিএআর ছিল। এ ঘটনায় লাল কার্ড না দেখানোটা আমাদের কাছে ব্যাখ্যাতীত।
এমবাপ্পেকে করা ফাউল যে খুব বাজে ছিল, সেটা স্বীকার করেছেন রোমেরোও। ম্যাচ শেষে ডিএজেডএনকে তিনি বলেন, ‘আমি জানতাম, তখন এমবাপ্পে যেভাবে দৌড়াচ্ছিল, থামানো অসম্ভব। যে কারণে থামাতে যেভাবে চ্যালেঞ্জ করা দরকার ছিল, আমি সেটাই করেছি। কিছুটা কুৎসিতই ছিল সেটা। ব্যাপারটা আমার নিজেরও ভালো লাগেনি। আমি এমবাপ্পের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছি।’
রিয়াল মাদ্রিদ কোচ অবশ্য রেফারির আরও একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে পরোক্ষে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। ম্যাচের প্রথমার্ধে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের একটি গোল এমবাপ্পের ফাউলের কারণে বাতিল করা হয়েছিল। এ নিয়ে আনচেলত্তি বলেন, ম্যাচে আমাদের নিয়ন্ত্রণ ছিল, দ্বিতীয়ার্ধে আমরা সুযোগও তৈরি করেছি। একটা গোল আবার বাতিল হয়ে গেছে, বল বারেও লেগেছে।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণ পাল্টা-আক্রমণ চললেও সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না কেউ। ২২তম মিনিটে ভিনিসিউস জুনিয়র বক্সে দারুণ নৈপুণ্যে জালে বল পাঠালেও গোল মেলেনি। বক্সেই কিলিয়ান এমবাপে এস্পানিওলের মিডফিল্ডার পল লোসানোকে ফেলে দেওয়ায় ফাউল ধরেন রেফারি।
এর মাঝেই ৫০ মিনিটে বড় এক ধাক্কা খায় আগের চার রাউন্ডে জয়ী রিয়াল। পায়ে অস্বস্তি অনুভব করায় মাঠ ছাড়েন অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগার। তার বদলি নামেন তরুণ ডিফেন্ডার রাউল আসেন্সিও।
৭৬তম মিনিটে কাছ থেকে রদ্রিগোর শট গোলরক্ষকের হাত ছুঁয়ে পোস্টে লাগে। পরের মিনিটে এমবাপের শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন তিনি।
লক্ষ্যে প্রথম শট রাখতে পারে এস্পানিওল। ৮০ মিনিটে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড কারেরাসের ওই নিচু শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া।
৮৫তম মিনিটে দারুণ এক পাল্টা আক্রমণ থেকে রিয়ালকে স্তব্ধ করে দেয় এস্পানিওল। সতীর্থের ক্রসে ছয় গজ বক্সের কোণা থেকে ভলিতে গোলটি করেন রোমেরো। বাকি সময়ে প্রাণপণ চেষ্টা করেও হার এড়াতে পারেনি রিয়াল।
দারুণ এই জয়ে অবনমন অঞ্চল থেকে বেরিয়ে এলো এস্পানিওল। ২২ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে ১৭তম স্থানে আছে তারা।
২২ ম্যাচে ১৫ জয় ও ৪ ড্রয়ে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে রিয়াল। সমান ম্যাচে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আতলেটিকো। নিজেদের পরের ম্যাচে আগামী শনিবার সান্তিয়াগো বার্নাবিউয়ে মুখোমুখি হবে মাদ্রিদের এই দুই দল। ২১ ম্যাচে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে বার্সেলোনা।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম