মঙ্গলবার, ৭ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

দখলে-দূষণে বিপন্ন প্রবাহ

নজরুল মৃধা, রংপুর

দখলে-দূষণে বিপন্ন প্রবাহ

ছয়টি নদ-নদী ও তিনটি বিলের কারণে রংপুর সিটি করপোরেশন একটি আদর্শ নগর। কিন্তু সঠিক পরিচর্যার অভাবে নদীগুলো এখন নগরবাসীর কাছে অভিশাপ হয়ে উঠছে। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার করা হলে রংপুর নগরীর সৌন্দর্য যেমন বাড়বে তেমনি পর্যটন নগর হিসেবে দেশের মধ্যে এই শহর আদর্শ স্থান হয়ে উঠবে। রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকা দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলো হচ্ছে, ঘাঘট নদ, শ্যামাসুন্দরী, ইছামতী, বুড়াইল, খোকসা ঘাঘট, আলাইকুমারী। এ ছয়টি নদীতেই আছে বিভিন্ন রকম অবৈধ দখল। কোনো নদীর পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক নেই। শ্যামাসুন্দরীকে কেউ কেউ খাল বললেও ইতিহাসে দেখা যায় এটিও একটি নদী। রাজা জানকীবল্লভ সেন এটি পুনরায় খনন করেছিলেন। দখল ও দূষণে এসব নদী মরে যেতে বসেছে। অন্যদিকে নগরীতে রয়েছে তিনটি বিল। এগুলো হলো- চিকলি, কুকরুল ও নাছনিয়া। দুটি বিল নগরীর উত্তরে একটি পূর্ব পাশে। চিকলি বিলের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য নানান উদ্যোগ নেওয়া হলেও অন্য দুটি বিল অবহেলিত। অথচ তিনটি বিলই ঘুরিয়ে দিতে পারে নগরীর মূল সৌন্দর্য।

নগরীর পূর্ব প্রান্তে সাতমাথা যাওয়ার পথে পড়ে খোকসা ঘাঘট। এই নদীটি এখন খালে পরিণত হয়েছে। সাতমাথা থেকে কিছু দূর এগোলে নগরীর পুরাতন শহর বলে খ্যাত মাহিগঞ্জে যাওয়ার পথেই ইছামতী নদী। এটি এখন নদীও না, খালও না। নদীর দুই পাশ দখল করে স্থানীয়রা এর দুই পাড়ে গড়ে তুলেছে বসতভিটা। রংপুর নগরীর সাতমাথা হয়ে দক্ষিণ প্রান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া পার্কের মোড় এলাকায় খোকসা ঘাঘটের অবস্থান আরও করুণ। এটি নদী বলে চেনাই যায় না। এদিকে রংপুর নগরীর প্রাণকেন্দ্র দিয়ে বয়ে যাওয়া শ্যামাসুন্দরীর ১১ দখলদার আপত্তি দেওয়াতে উচ্ছেদ অভিযান আটকে রয়েছে। শ্যামাসুন্দরী আশীর্বাদের বদলে এখন অভিশাপে পরিণত হয়েছে।

নদীবিষয়ক গবেষক বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, রংপুরের নদীগুলোর পাড়ে অনেক দখলদার আছে। নদীগুলোর অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে রংপুর শহরের জলাবদ্ধতা দূর হবে না।

সর্বশেষ খবর