বাইরে থেকে বড় বড় শেড দেখলে মনে হয় কোনো শিল্প-কারখানা। আসলে এটি একটি গবাদিপশুর খামার। খামারটি উন্নত বিশ্বের ক্যাটেল ফার্মের মতোই প্রায়। দেশি -বিদেশি উন্নত জাতের গরু চাষে ব্যবহার হচ্ছে ডিজিটাল প্রযুক্তি। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক ছোঁয়ায় পাল্টে যাচ্ছে টঙ্গীর তিস্তার গেট এলাকায় সোহেল রেঞ্জ অ্যান্ড অ্যাগ্রো ফার্মের চিত্র। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার মানুষ কোটি টাকা মূল্যের আমেরিকান ব্রাহমা গরু দেখতে ভিড় জমান ওই খামারে। কোরবানি ঈদ সামনে রেখে আমেরিকান ব্রাহমা, বুট্টি গরু ও মীরকাদিমের হাঁসা বাজারের সেরা গরু বলে বিবেচিত হবে বলে মনে করছে মালিক কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ২০২১ সালে কৃষির সঙ্গে যুক্ত হন মো. সোহেল আহম্মেদ। শুরুটা শৌখিনতা থেকে, অনেকটা পরীক্ষামূলক। পরে শতভাগ বাণিজ্যিক চিন্তা নিয়ে খামার গোছাতে শুরু করেন বছর দুয়েক আগে। বিনিয়োগমুখী কৃষিশিল্পের সূক্ষ্ম হিসাবগুলো করেই গড়ে তুলেছেন প্রাণিসম্পদের এই বিশাল খামার। ২৪টি গরু দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে শতাধিক গরু রয়েছে। চার বিঘা জায়গার ওপর নির্মিত ওই খামারে কোটি টাকা মূল্যের ছয়টি ব্রাহমা রয়েছে। এ ছাড়া সুস্বাদের বুট্টি গরু, মীরকাদিমের হাঁসা, কালো মহিষ, রেড ও ব্ল্যাক শাহীওয়াল, এলভিনোসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের গরু রয়েছে। এমনকি উন্নত জাতের ঘোড়া, ছাগল, দুম্বাও রয়েছে। সুস্থ ও সবল রাখতে খামারের চারপাশে রয়েছে কাউসেট ফ্যান, পরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার পরিবেশন, স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রয়েছে চিকিৎসক। এ ছাড়া পুরো খামারটি মনিটরিং করার জন্য ৬৪টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। নতুন কোনো গরু ওই খামারে প্রবেশ করার আগে করা হয় করোনা পরীক্ষা। গোবর থেকে গ্যাস উৎপাদন করা হবে। এর কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে সোহেল অ্যাগ্রো ফার্মের গরু চাষের ব্যবস্থাপনা দেখলেই অনেকেই চমকে যাবেন। এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শাহীন সিকদার বলেন, গাজীপুরে অনেক গরুর খামার রয়েছে। তার মধ্যে সোহেল রেঞ্জ অ্যান্ড অ্যাগ্রো ফার্মের চিত্রটাই ভিন্ন। এখানে গরুর এত যত্ন নেওয়া হয়, যা না দেখলে হয়তো বিশ্বাস করা কঠিন। এবারের টঙ্গী কোরবানির হাটে এই খামারের গরু বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে মনে করেন তিনি।