গাজীপুরের টঙ্গী রেলস্টেশন এলাকায় কবিরাজের প্রতারণার ভয়ঙ্কর ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে রেলস্টেশনে আসা যাত্রীরা। প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা লুটে নিচ্ছেন প্রতারকরা। স্থানীয় প্রশাসন ও দলীয় নেতা-কর্মীদের ম্যানেজ করে চলছে তাদের কার্যক্রম।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, টঙ্গী রেলস্টেশন এলাকায় সোহেল কবিরাজের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে রেলস্টেশনে আসা অসংখ্য যাত্রী। প্রথমে মজমা বসিয়ে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে ম্যাজিক দেখিয়ে স্টেশনে আসা লোকজন জড়ো করে তারা। এ সময় প্রতারক সোহেল চক্রের লোকজনও ওই মজমায় দর্শক সেজে হাজির হন। পরে কাল্পনিক কিছু বললে ওই চক্রের লোকজন সব সত্যি সত্যি বলে সমর্থন করেন। এ সময় সাধারণ দর্শকরা তাদের ফাঁদে পড়েন। পরে সাধারণ দর্শকদের আড়ালে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আজগুবি কথা বলে সবার মনে ভয় ঢুকিয়ে শুরু করেন প্রতারণা। কেউ বাবার নামে কেউ মায়ের নামে আবার কেউ সন্তানদের মঙ্গলকামনা করে তাদের দেওয়া ভুয়া তাবিজ না কিনলে বড় ধরনের ক্ষতি সাধিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান। এমন ভয় দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে ৫০০, ১ হাজার কিংবা ২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এতে সর্বস্ব হারিয়ে বাড়ি ফিরছেন রেলস্টেশনে আসা যাত্রীরা।
এ বিষয়ে স্টেশনে আসা এক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এমন সময় ওই মজমায় ম্যাজিক দেখতে দাঁড়াই। পরে আমার মার কথা বলে আমার কাছে থাকা ১ হাজার টাকা নিয়ে নেন। এখন আমি কীভাবে বাড়ি যাব ভাই? এ বিষয়ে প্রতারক চক্রের মূলহোতা কবিরাজ সোহেলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, মানুষের কথায় কান দিয়েন না। চায়ের দাওয়াত রইল, সরাসরি কথা বলব। ফোনে সব কথা বলা যায় না। এই ব্যবসা ৩০/৪০ বছর ধরে করতাছি। ভালো না হইলে কি এমপির বাড়ির সামনে এই ব্যবসা করতে পারি।
স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, এদের কতবার র্যাব, পুলিশ ধরে মারধর করল। তারপরও এরা ঠিক হয় না। ওরা মানুষের ক্ষতি করে। এসব বন্ধ করার ব্যবস্থা নেন। এ ব্যাপারে টঙ্গী জোনের পুলিশের ডিসি মাহাবুব-উজ্জামান বলেন, প্রতারণার ফাঁদ পেতে মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।