শীত মানে আগুন পোহানো, গরম গরম কফির কাপ আর নরম কম্বলের আরাম। কিন্তু এই আনন্দঘন মৌসুমেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের চুল। ঠান্ডা বাতাসে আর্দ্রতার ঘাটতি মাথার ত্বককে শুষ্ক ও খসখসে করে তোলে, চুল হয় ভঙ্গুর, রুক্ষ আর নিস্তেজ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু সহজ অভ্যাসেই এই সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখতে প্রথমেই দরকার নিয়মিত তেলের যত্ন। গরম নারিকেল বা অলিভ অয়েল দিয়ে হালকা মাসাজ রক্তসঞ্চালন বাড়ায়, মাথার ত্বক আর্দ্র রাখে এবং চুলের গোড়া মজবুত করে। ইউটিউবার ডোরো কুবিল্লোর পরামর্শ- শ্যাম্পুর আগে প্রি-ওয়াশ অয়েল ট্রিটমেন্ট চুলের জন্য দারুণ কার্যকর।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ঘন ঘন চুল ধোয়া শীতে ক্ষতিকর। সপ্তাহে দুইবারের বেশি শ্যাম্পু না করে সালফেট-মুক্ত হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত। এরপর অবশ্যই ঘন কন্ডিশনার দিয়ে চুলে পুষ্টি ফিরিয়ে দিন। ডিম ও মধু মেশানো হেয়ার মাস্ক সপ্তাহে একবার ব্যবহার করলে শুষ্ক চুলে উজ্জ্বলতা ফিরে আসে। তবে হিট স্টাইলিং টুলস এড়িয়ে চলাই ভালো, কারণ তাপ চুলকে আরও দুর্বল করে। প্রাকৃতিকভাবে বাতাসে শুকানোই শ্রেয়। বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই টুপি বা স্কার্ফে চুল ঢেকে রাখতে শিখুন, ঠান্ডা বাতাস ও ঘর্ষণের ক্ষতি থেকে সুরক্ষা মেলে।
চুলের যত্নে ছোট ছোট অভ্যাসও বড় ভূমিকা রাখে- গরম পানিতে গোসল না করে কুসুম গরম পানিতে চুল ধোয়া, মাইক্রোফাইবার তোয়ালে ব্যবহার, নিয়মিত ট্রিম এবং পর্যাপ্ত পানি পান। তা ছাড়া স্বাস্থ্যকর খাবারও অপরিহার্য। যেমন: গাজর, ডিম, কুমড়া এবং বেরির মতো ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ বাড়ান। পাশাপাশি সবজি, পাতাযুক্ত সবুজ শাক, দুগ্ধজাত পণ্য, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং মাংসের সমন্বয়ে একটি সুষম খাবারও চুলকে ভিতর থেকে পুষ্ট করে তোলে।
চর্ম ও চুল বিশেষজ্ঞ ডা. মাইকেল মে বলেন, ‘শীতের শুষ্ক বাতাস চুলের আর্দ্রতা কেড়ে নেয়, তাই নিয়মিত ডিপ কন্ডিশনিং ও তেল ব্যবহারই সেরা প্রতিরোধ।’ অর্থাৎ একটু যত্ন আর সচেতনতাই পারে আসন্ন শীতের ঠান্ডায়ও আপনার চুলকে আগের মতো নরম, মসৃণ ও ঝলমলে রাখতে।
লেখা : ফেরদৌস আরা