পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার উপকারিতা অপরিহার্য; এটি ত্বক থেকে ময়লা, মৃত কোষ এবং ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দূর করে ত্বককে রাখে পরিষ্কার এবং সতেজ। তবে প্রাত্যহিক পরিচর্যায় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো- দিনে কতবার মুখ ধোবেন এবং মুখ ধোয়ার জন্য কেমন পানি ব্যবহার করবেন: সামান্য গরম, গরম নাকি শীতল ঠান্ডা পানি? এই সিদ্ধান্তগুলো ত্বকের স্বাস্থ্য এবং উজ্জ্বলতায় বড় ভূমিকা রাখে।
ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে, ঠান্ডা পানি ত্বকের জন্য বেশ কিছু সুবিধা নিয়ে আসে। এটি ব্রণ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে কার্যকর। এর কারণ হলো গরম পানি ত্বকের উপরিভাগের প্রতিরক্ষামূলক তেল (সিবাম) সরিয়ে দেয়, যা ব্রেকআউটের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। কসমোলজিস্ট সোফিয়া ন্যাপের মতে, ঠান্ডা পানি ত্বককে আরও বেশি উৎফুল্ল রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বকের তেলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে দুর্দান্ত কাজ করতে পারে। বিশেষত শুষ্ক বা ব্রণ-প্রবণ ত্বকের জন্য ঠান্ডা পানি বিশেষভাবে উপকারী। যদি দীর্ঘস্থায়ীভাবে ত্বক শুষ্ক হয়, তবে গরম পানি ত্বকে সিবামের মাত্রা আরও কমিয়ে সমস্যাটিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। ঠান্ডা পানি রক্তনালিকে সংকুচিত করে, ফলে গরম পানির কারণে হওয়া লালচে ভাব কমায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৭০ ডিগ্রি ফা (২১ ডিগ্রি সে.) এর নিচের ঠান্ডা পানি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি, এন্ডোরফিন নিঃসরণ এবং ত্বক পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। তবে ঠান্ডা পানি ব্যবহারের একটি অসুবিধাও আছে। সোফিয়া ন্যাপ সতর্ক করে বলেন, ঠান্ডা পানি ত্বকের তেলগ্রন্থিকে শক্ত করে দিতে পারে, যার ফলে ব্যাকটেরিয়া এবং ময়লা আটকে যেতে পারে এবং গরম পানির মতো সহজে ত্বক পরিষ্কার নাও হতে পারে।
অন্যদিকে, সোফিয়া ন্যাপের মতে, গরম পানি ত্বকের ফোলাভাব বাড়ায় এবং ত্বকের ছিদ্রগুলো ছোট দেখায় (যদিও ঠান্ডা পানি ফোলাভাব কমায়)। কিন্তু আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজির বিশেষজ্ঞরা মুখে কুসুম গরম পানি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। এটিকে সব ধরনের ত্বকের জন্য নিরাপদ মাঝামাঝি পন্থা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অতিরিক্ত গরম পানি ত্বকের সুরক্ষামূলক তেলগুলোকে সরিয়ে দেয়, যা আর্দ্রতা ধরে রাখতে অপরিহার্য। কুসুম গরম পানি ব্যবহারের সুবিধা হলো, এটি ত্বকের যত্নের প্রসাধনী ও ময়েশ্চারাইজারগুলোকে আরও ভালো শোষণে সহায়তা করে।
মুখ ধোয়ার ফ্রিকোয়েন্সি প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা দিনে দুবার মুখ ধোয়ার পরামর্শ দেন- একবার সকালে এবং একবার রাতে। এর চেয়ে বেশিবার মুখ ধোয়া হলে ত্বক শুকিয়ে যেতে পারে এবং জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। যেহেতু ঘুমানোর বালিশে উদ্বেগজনক পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, তাই সকালে মুখ ধোয়া ত্বকের যত্নের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একইভাবে, সারা দিনের রোদ, ধুলোবালু এবং মেকআপের কারণে দিন শেষে বাড়ি ফিরে ভালোভাবে মুখ ধোয়া অবশ্যই অত্যাবশ্যক।
লেখা : রেদোয়ান মাহফুজ