মিসর তো বটেই, গোটা পৃথিবীর সর্বকালের সেরা সুন্দরীদের একজন মানা হয় নেফারতিতিকে। আর মিসরীয় সভ্যতার 'সিগনেচার' বা চিহ্ন হিসেবে পিরামিড আর মমির পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় এই সুন্দরীরর আবক্ষমূর্তির ছবি বা প্রতিলিপি। এই ফারাও সম্রাজ্ঞীর প্রহলিকাময় আবক্ষমূর্তিটি সারাবিশ্বে প্রচণ্ড জনপ্রিয় এবং আগ্রহের বিষয়। মিসরের ফারাও সম্রাজ্ঞীদের মধ্যে এমনকি তখনকার মিসরবাসীদের মধ্যেও তার রূপ ছিল কিংবদন্তির মতো। যিশুখ্রিস্ট জন্মেরও ১৩৭০ থেকে ১৩৩০ বছর আগ পর্যন্ত নেফারতিতির ইতিহাস খুঁজে পাওয়া গেছে। আর ঠিক এরপর থেকেই মিসরের সব ঐতিহাসিক দলিল, দস্তাবেজ থেকে তার নাম মুছে ফেলা হয়েছে। প্রত্নতাত্তি্বক জিনিসপত্রে তার আর কোনো চিহ্ন রক্ষিত হয়নি যেমন রক্ষিত রয়েছে অন্যান্য ফারাও আর তাদের সম্রাজ্ঞীদের স্মৃতি। নেফারতিতি নামের অর্থ হলো সুন্দর আসছে। নেফারতিতি বিয়ে করেন ফারাও তৃতীয় আমেনহোটেপের সন্তান আখেনাতেনকে যিনি পরবর্তী ফারাও হিসেবে রাজত্ব করেন চতুর্থ আমেনহোটেপ হিসেবে। তিনি ছিলেন মিসরের অষ্টাদশ রাজবংশের ফারাও। তার সঙ্গে একাত্দ হয়েই মিসর শাসন করেন নেফারতিতি। ধারণা করা হয় নেফারতিতি ও আখেনাতেনের মধ্যে ভালোবাসার কোনো কমতি ছিল না যা সাধারণত মিসরীয় ফারাওদের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় না। নেফারতিতির জীবন সম্পর্কে খুব বেশি জানা যায়নি বলেই তিনি এত রহস্যের কারণ। তবে ধারণা করা হয়, তিনি রাজবংশের একজন ছিলেন। তিনি ঠিক কোথায় জন্মেছিলেন এখনো সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারও কারও মতে, তিনি আখমিম শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আবার কেউ কেউ বলেন তিনি মিসরের বাইরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বেশির ভাগ মত হলো, নেফারতিতি ছিলেন আয়-এর কন্যা। আয় ছিলেন ফারাওয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তিনি তিন-তিনজন ফারাওয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন এবং ধরা হয় তিনি ফারাও তুতেনখামেনের রাজ্যের অন্যতম শক্তি ছিলেন। এই তুতেনখামেন হলেন নেফারতিতির সৎ ছেলে। আর পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র তার মমি বা সমাধিই অবিকৃত অবস্থায় আবিষ্কৃত হয়। আর এই মমির অভিশাপে অনেক মানুষের মৃত্যু হয় যেটি ইতিহাসে তুতেনখামেনের মমির অভিশাপ নামে বিখ্যাত।