বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

চীনের মহাপ্রাচীর

চীনের মহাপ্রাচীর

চাঁদ থেকে দেখা যাওয়া পৃথিবীর একমাত্র স্থাপনা চীনের মহাপ্রাচীর। চীনের বেইজিংয়ে অবস্থিত মানুষের হাতে গড়া পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্থাপত্য। ইট-পাথর দিয়ে তৈরি চীনের এ প্রাচীর প্রায় ৫ থেকে ৮ মিটার উঁচু এবং ৬,৫৩২ কিলোমিটার লম্বা। এটি চীনের সাংহাই পাস থেকে শুরু হয়ে লোপনুর নামক স্থানে শেষ হয়েছে। প্রাচীরটি নির্মিত হয় ২২০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে। চীনের প্রথম সম্রাট শিং হুয়াং শত্রুর হাত থেকে নিজের সাম্রাজ্যকে রক্ষার জন্য এ দীর্ঘ প্রাচীর গড়ে তোলেন। বর্তমানে বেইজিংয়ের উত্তরে পর্যটন কেন্দ্রের জন্য কিছু অংশ সংরক্ষণ এমনকি পুনর্নির্মাণ করা হলেও প্রাচীরের বেশকিছু অংশ ক্ষতির সম্মুখীন। দেয়ালটিতে নিয়মিত বিরতিতে পর্যবেক্ষণ চৌকি আছে, যা অস্ত্র সংরক্ষণ ও সেনাবাহিনীর আবাসনের জন্য ব্যবহৃত হতো। এ ছাড়া দীর্ঘ বিরতিতে রয়েছে সেনাঘাঁটি ও প্রশাসনিক কেন্দ্রসমূহ। প্রাচীরটি চীনের প্রাকৃতিক বাধাগুলো ছাড়াও অঞ্চল পাহারার কাজে ব্যবহার করা হতো। অনেকের কাছে বড় প্রশ্ন এটি, এত বিশাল আকৃতির প্রাচীর কেন তৈরি করা হয়েছিল। তবে ইতিহাস বলে খুব প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল এমন একটি স্থাপনার। বিশেষ করে মাঞ্চুরিয়া আর মঙ্গোলিয়ার যাযাবর দস্যুদের হাত থেকে চীনকে রক্ষা করার জন্য এটি। ২৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চীন বিভক্ত ছিল খণ্ড খণ্ড রাজ্যে আর প্রদেশে। এদের মধ্যে একজন রাজা যার নাম ছিল শি হুয়াং-টি, তিনি অন্যান্য রাজাদের সংঘবদ্ধ করে নিজে সম্রাট হন। চীনের উত্তরে গোবি মরুভূমির পূর্বে দুর্ধর্ষ মঙ্গলদের বাস। তাদের কাজ ছিল লুটতরাজ করা। এদের হাত থেকে দেশকে বাঁচানোর জন্য সম্রাটের আদেশে চীনের প্রাচীর তৈরির কাজ আরম্ভ হয়। শত্রুদের আন্দোলন সম্পর্কে সাবধান থাকা এবং দলকে শক্তিশালী করা ছিল গ্রেট ওয়ালের সীমানার মধ্যে সেনা ইউনিটগুলোর প্রধান কাজ। দেখার সুবিধার জন্য পাহাড়সহ অন্যান্য উঁচু স্থানে সংকেত টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছিল। প্রাচীরটি চীনের প্রাকৃতিক বাধাগুলো ছাড়াও অঞ্চল পাহারার কাজে ব্যবহার করা হতো। এভাবে ধীরে ধীরে তৈরি করা হয় চীনের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীরটি। বিশ্বের সেরা আকর্ষণীয় স্থাপনাগুলোর একটি এটি।

 

 

সর্বশেষ খবর