শিরোনাম
প্রকাশ: ০০:০০, রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫

রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের মৃত্যুদন্ডের ইতিহাস

আবদুল কাদের
প্রিন্ট ভার্সন
রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের  মৃত্যুদন্ডের ইতিহাস

স্বৈরশাসনকে ঘিরে আজকের বিশ্বে যে অস্বস্তি ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তা কোনো কল্পনা নয়- বরং বিগত শতাব্দীর রক্তাক্ত অভিজ্ঞতা, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর শঙ্কার জটিল সমন্বয়। উদার গণতন্ত্র যেখানে স্থিতিশীলতা ও স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেখানে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তারই বিপরীতে কর্তৃত্ববাদী নেতৃত্ব, কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা এবং জনতুষ্টিবাদী রাজনীতির পুনরুত্থান বিশ্বব্যাপী স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ভোটের জোরে বা সাংবিধানিক কৌশলে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করে অনেক রাষ্ট্রনায়ক রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন, সীমাবদ্ধ হয় ভিন্নমত, বিচারব্যবস্থা ও গণমাধ্যম।  তবে ইতিহাস সাক্ষী হয়ে আছে, ক্ষমতা যতই লৌহদৃঢ় মনে হোক, স্বৈরশাসকদের পতন অনিবার্য হতে পারে। কেউ বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন, কেউ পালিয়েছেন, কেউ নিজেরাই ক্ষমতা ছেড়েছেন।

 

রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের  মৃত্যুদন্ডের ইতিহাস

একনায়ক বা স্বৈরাচারের শেষ পরিণতি

স্বৈরশাসকদের শেষ পরিণতি যদিও বিভিন্ন রকম হতে পারে, তবে প্রায়শই এর মধ্যে নিম্নলিখিত দৃশ্যগুলোর দেখা বেশি মেলে- ক্ষমতাচ্যুত হওয়া, ক্ষমতায় থাকাকালীন মৃত্যু (স্বাভাবিক বা সহিংস উপায়ে), অথবা কদাচিৎ সফলভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করে শাস্তির হাত থেকে বেঁচে যাওয়া।

ক্ষমতাচ্যুত ও কারারুদ্ধ/ফাঁসি

আধুনিক স্বৈরশাসকদের জন্য সাধারণ ও নাটকীয় পরিণতির মধ্যে অন্যতম বিশেষত যারা ব্যাপক জনঅসন্তোষ সত্ত্বেও ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকে।

♦ গণ অভ্যুত্থান, সামরিক অভ্যুত্থান বা বিদেশি হস্তক্ষেপে একজন স্বৈরশাসককে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়।

♦ ক্ষমতা থেকে অপসারণের পর তারা প্রায়শই কারাবাস, নির্বাসন বা মৃত্যুদন্ডের সম্মুখীন হন।

উদাহরণ- সাদ্দাম হোসেন (ইরাক, বিচার শেষে ফাঁসি), মুয়াম্মার গাদ্দাফি (লিবিয়া, গৃহযুদ্ধের সময় নিহত), নিকোলাই চসেস্কু (রোমানিয়া, বিপ্লবের পর তাৎক্ষণিক মৃত্যুদন্ড)।

 

ক্ষমতায় থাকাকালীন মৃত্যু

কিছু স্বৈরশাসক তাদের আমৃত্যু ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে সক্ষম হন, যদিও পরিস্থিতি সবসময় শান্তিপূর্ণ হয় না।

♦ স্বৈরশাসক নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ধরে রেখে বার্ধক্য বা অসুস্থতার কারণে মৃত্যুবরণ করেন। সাধারণত এরপর রাজনৈতিক পট পরিবর্তন বা শাসনের পতন হয়। 

উদাহরণ- জোসেফ স্টালিন (সোভিয়েত ইউনিয়ন), ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কো (স্পেন)।

♦ অভ্যন্তরীণ প্রতিদ্বন্দ্বী বা শক্তিগুলোর হাতে নিহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

উদাহরণ- পার্ক চুং-হি (দক্ষিণ কোরিয়া, নিজস্ব নিরাপত্তা প্রধানের হাতে নিহত)।

 

সফলভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর

এটি কম প্রচলিত পরিণতি, যেখানে স্বৈরশাসক ক্ষমতা থেকে সরে আসতে বাধ্য হন এবং বড় ধরনের আইনি বা রাজনৈতিক প্রতিশোধ এড়িয়ে যান।

♦ স্বৈরশাসক স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন বা নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন, তবে তাকে দায়মুক্তি দেওয়া হয় বা অন্য কোথাও নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পান। 

উদাহরণ- অগাস্টো পিনোচেট (চিলি, দেশে ফিরে আসেন এবং পরে আইনি মামলার সম্মুখীন হন, কিন্তু দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই মারা যান), ইদি আমিন (উগান্ডা, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সৌদি আরবে নির্বাসনে ছিলেন)।

 

স্বৈরশাসনের ভবিষ্যৎ : পতনের ভবিষ্যদ্বাণী নাকি স্থায়িত্বের বাস্তবতা?

স্বৈরশাসন কি বিলীন হয়ে যাবে? এই প্রশ্নটি যতটা নৈতিক, ততটাই রাজনৈতিক। সাধারণ মানুষের কাছে স্বৈরশাসন মানেই দমনপীড়ন, দুর্নীতি ও ভয়। অথচ গবেষণার দৃষ্টিতে স্বৈরশাসন একটি রাজনৈতিক যান্ত্রিকতা, যেখানে ক্ষমতা পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুব কম এবং শাসক টিকে থাকেন অল্প সংখ্যক অনুগতের আর্থিক-রাজনৈতিক আনুগত্য ধরে রেখে। অর্থাৎ স্বৈরশাসকের ব্যক্তিগত চরিত্র নয়, কাঠামোই তাকে স্বৈরতান্ত্রিক আচরণে ঠেলে দেয়। আজ থেকে ১০ বছর আগে অর্থাৎ আরব বসন্তের পর বিবিসির প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে, বিশ্বজুড়ে এখনো অর্ধেকের বেশি রাষ্ট্র কোনো না কোনো ধরনের স্বৈরশাসনের আওতায়। কারণগুলো ঐতিহাসিকভাবেই পুনরাবৃত্ত-সংকটের মুহূর্ত, নিরাপত্তাহীনতা, দুর্বল প্রতিষ্ঠান, কিংবা সম্পদবহুল অর্থনীতি যেখানে রাষ্ট্র জনগণের চাহিদা না মেটালেও শাসকের ক্ষমতা টিকে থাকে। আবার বৈশ্বিক রাজনীতির বাস্তবতাও স্বৈরশাসকদের সুবিধা দেয়; গণতান্ত্রিক দেশগুলোও নিজেদের স্বার্থে কখনো কখনো তাদের স্থায়িত্বকে উসকে তোলে। তবুও স্বৈরশাসনের সংখ্যা গত অর্ধশতকে কিছুটা কমেছে। কারণ আজকের বিশ্বে তথ্য গোপন করা কঠিন, দমননীতি টেকসই নয়, আর অর্থনৈতিক ব্যর্থতা দ্রুতই শাসকের অনুগত শিবিরে ভাঙন ধরায়। যে স্বৈরশাসক এই বাস্তবতা সামলে উঠতে পারেন না, তাদের পতন প্রায় অনিবার্য। তবে আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো- সব জনগোষ্ঠী গণতন্ত্রকেই সর্বোত্তম পথ মনে করে না। স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা ও ব্যক্তিজীবনের স্বাচ্ছন্দ্য অনেকের কাছে স্বাধীনতার চেয়েও বড় মূল্য। ফলে একটি ‘মানবিক স্বৈরশাসন’- যেখানে শাসক কঠোর হলেও নাগরিকদের জীবনযাত্রা উন্নত- অনেক ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। অতএব স্বৈরশাসনের বিলুপ্তি নয়, বরং এর রূপান্তরই ভবিষ্যতের বাস্তব চিত্র। মূলকথা হলো- যত দিন কোনো রাষ্ট্রে নাগরিকদের প্রয়োজন, ভয়ের রাজনীতি এবং ক্ষমতার আকর্ষণ থাকবে, স্বৈরশাসনও তত দিন ইতিহাসে ফিরে আসবে ভিন্ন রূপে, ভিন্ন নামে, কিন্তু একই প্রক্রিয়ায়।

 

 

নিষ্ঠুর যত স্বৈরশাসক

রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের  মৃত্যুদন্ডের ইতিহাস

অ্যাডলফ হিটলার

অ্যাডলফ হিটলার আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত এবং ভয়ংকর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তার উত্থান, মতাদর্শ, শাসননীতি ও পতন মানবসভ্যতায় গভীর দাগ রেখে গেছে।

১৮৮৯ সালে অস্ট্রিয়ায় জন্ম নেওয়া মধ্যবিত্ত যুবক অ্যাডলফ হিটলার কৈশোরে শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু ভিয়েনা আর্ট একাডেমিতে পরপর ব্যর্থতা তাকে হতাশা, জাতিগত ঘৃণা, ইহুদি-বিদ্বেষ ও উগ্র জাতীয়তাবাদকে তীব্র করে তোলে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মান সেনাবাহিনীর পরাজয়কে তিনি ব্যক্তিগত অপমান হিসেবে গ্রহণ করেন। যুদ্ধোত্তর জার্মানির রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জনগণের ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে তিনি ‘ডয়েচে আরবাইটারপার্টাই’-এ যোগ দেন, যা নাৎসি পার্টি নামে পরিচিত। তার তীক্ষè বক্তৃতাশৈলী ও জনমনের হতাশা ভেদ করার ক্ষমতা দ্রুতই তাকে পার্টির মুখপাত্র ও প্রধানে পরিণত করে। ১৯২৩ সালে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর জেলে তিনি রচনা করেন ‘মাইন কাম্ফ’, যেখানে বর্ণবাদী, ইহুদিবিরোধী ও সম্প্রসারণবাদী মতাদর্শ স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলেন। ১৯৩৩ সালে চ্যান্সেলর হওয়ার পর তিনি ধীরে ধীরে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ভেঙে একদলীয় স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৩৪ সালে তিনি ‘ফ্যুরার’ উপাধি গ্রহণ করেন। নাৎসি মতবাদ ছিল মূলত আর্য জাতিকে ‘উচ্চতর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং ইহুদিদের বিরুদ্ধে ঘৃণা। গেস্টাপো ও গোবেলসের প্রচারণা যন্ত্র ব্যবহার করে রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন করা হয়। তার শাসনামলের ভয়াবহ অধ্যায় হলো হলোকাস্ট- প্রায় ৬ মিলিয়ন (৬০ লাখ) ইহুদি ও ৫ মিলিয়নের (৫০ লাখ) বেশি রোমা, প্রতিবন্ধী ও ভিন্নমতাবলম্বী মানুষকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা। তার আগ্রাসী ‘জীবন-স্থান’ নীতি ১৯৩৯ সালে পোল্যান্ড আক্রমণের মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করে, যা বিশ্বজুড়ে কোটি মানুষের মৃত্যু ডেকে আনে। যুদ্ধের শেষ দিকে জার্মানির পতন অনিবার্য হয়ে পড়লে, হিটলার নিজের বাঙ্কারে আত্মহত্যা করেন।

 

রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের  মৃত্যুদন্ডের ইতিহাস

জোসেফ স্টালিন

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দ্বিতীয় নেতা

তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের দ্বিতীয় এবং মূল সাতজন বলশেভিক নেতার মধ্যে অন্যতম ছিলেন এবং দ্রুত একক ক্ষমতা সুসংহত করে একজন স্বৈরশাসকে পরিণত হন। ১৯৩০-এর দশকে তিনি ‘দ্য গ্রেট পার্জ’ নামের পরিচিত রাজনৈতিক উত্থাননীতি অনুসরণ করেন। ১৯৩০ থেকে ১৯৩৪ সালের মধ্যে লাখ লাখ সোভিয়েত নাগরিককে কারারুদ্ধ, নির্বাসিত বা হত্যা করা হয়। স্টালিন ব্যাপক অর্থনৈতিক সংস্কারের নীতিও অনুসরণ করেন যা দুর্ভিক্ষ এবং গুলাগ শিবিরগুলোতে বাধ্যতামূলক শ্রমের কারণে লাখ লাখ মানুষকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।

 

রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের  মৃত্যুদন্ডের ইতিহাস

পল পট

কম্বোডিয়ার খেমাররুজ সরকারের নেতা

পল ছিলেন কম্বোডিয়ার স্বৈরশাসক। তিনি খেমাররুজ সরকারের নেতা হিসেবে ১৯৬১ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ২০ বছর কম্বোডিয়া শাসন করেন। তার শাসনামলে দেশটি গণহত্যা এবং কুখ্যাত ‘কিলিং ফিল্ডস’ হিসেবে আখ্যায়িত হয়। তিনি কঠোর জাতীয়করণের একটি কর্মসূচি শুরু করেন, যার মাধ্যমে তিনি লাখ লাখ মানুষকে জোরপূর্বক শহর থেকে গ্রামে বাধ্যতামূলক শ্রম প্রকল্পে কাজ করার জন্য স্থানান্তরিত করেন। তা ছাড়া নিম্নমানের খাদ্য ও চিকিৎসার অবস্থা এবং রাষ্টীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাপক হত্যাকান্ডের কারণে তার শাসনামলে কম্বোডিয়ার ২৫% মানুষ মারা গিয়েছিল।

 

রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের  মৃত্যুদন্ডের ইতিহাস

কিম জং ইল

উত্তর কোরিয়ায় বাবার পার্টির প্রধান নেতা

তিনি বাবার অফিশিয়াল পার্টি মতাদর্শের ভয়ংকর নীতি অব্যাহত রেখেছিলেন। আজ উত্তর কোরিয়া বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর একটি, যেখানে লাখ লাখ মানুষ অনাহার, রোগ এবং মৌলিক মানবিক চাহিদার অভাবে জীবন পার করছে। কিমের শাসনামলে উত্তর কোরিয়ার সামরিক ব্যয় চারগুণ বৃদ্ধি পায়, তবুও তিনি বিদেশি সহায়তা প্রত্যাখ্যান এবং তার দেশের খামারগুলো বিনিয়োগহীন রাখেন। ফলে পরোক্ষভাবে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। শ্রম শিবির ব্যবহারের মাধ্যমে গণ-আটক এবং কার্যত কোনো রাজনৈতিক বিতর্ক না থাকার কিমের নীতি তাকে ভয়ানক স্বৈরশাসকে রূপান্তরিত করেছে।

 

রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের  মৃত্যুদন্ডের ইতিহাস

ইদি আমিন

উগান্ডার সামরিক শাসক এবং একনায়ক

ইদি আমিনের প্রশাসন তার রাজনৈতিক শত্রুদের প্রতি ব্যাপক দমন-পীড়নের জন্য পরিচিত ছিল। তিনি উগান্ডার সামরিক শাসক ও একনায়ক; যিনি ১৯৭১ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত উগান্ডা শাসন করেন। আধুনিক ইতিহাসে তাকে অন্যতম বিতর্কিত ও নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক বলা হয়। জাতিসংঘের অনুমান, তার শাসনামলে উগান্ডায় প্রায় ৫ লাখ মানুষ নির্যাতিত এবং নিহত হয়েছিল। তার শিকাররা মূলত সরাসরি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং তিনি যে সরকারকে উৎখাত করেছিলেন তার সমর্থক। এ সময় বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডে শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, বিদেশি নাগরিক ও সংখ্যালঘুরাও অন্তর্ভুক্ত হন।

 

ক্ষমতার উত্থান, শাসকের পতন, শেষ পরিণতি ও বিচারের ইতিহাস

মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত রাষ্ট্রপ্রধানরা

ক্ষমতার উত্থান, শাসকের পতন, শেষ পরিণতি ও বিচারের ইতিহাস

ক্ষমতার মসনদে বসে যারা একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেন, তাদের শেষ পরিণতি সবসময় মসৃণ হয় না। ইতিহাস এমনটাই সাক্ষী দেয়। অর্থাৎ স্বৈরশাসক, একনায়ক ও নির্বাচিত হয়েও যারা জনগণের অধিকার হরণ করেছেন, তাদের অনেকের শেষ পরিণতি মৃত্যুদন্ডের মতো কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হয়ে শেষ হয়েছে। সর্বশেষ উদাহরণ- মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদন্ডের আদেশ।  বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপ্রধানদের শেষ পরিণতির দীর্ঘ ও অন্ধকার ইতিহাস নিয়ে রকমারি- যেখানে অন্তত ৪৮ জন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান বিভিন্ন সময়ে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হন।

 

বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানদের মৃত্যুদন্ড এক জটিল ও বিতর্কিত অধ্যায়। ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করা ব্যক্তির পতন যেমন নাটকীয়, তেমনি তাদের বিচার ও দন্ডাদেশ মানবসভ্যতার ন্যায়-অন্যায় বোধ, রাজনৈতিক রূপান্তর এবং সামাজিক মূল্যবোধ পরিবর্তনের প্রতিফলনও বটে। বিভিন্ন মহাদেশ, ভিন্ন মতাদর্শ ও দুই ভাগে বিভক্ত সময়রেখায় দেখা যায়- অধিকাংশ মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত শাসকের বিরুদ্ধে স্বৈরতন্ত্র, দমননীতির প্রয়োগ, দুর্নীতি, যুদ্ধাপরাধ কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগই শেষতক তাদের পতন ডেকে এনেছে।

 

এদের অধিকাংশই ক্ষমতায় থাকাকালে নিজেকে অনড় বলে ভাবলেও, রাজনীতির অস্থিরতা আর জনআন্দোলনের ঢেউ তাদের ভাসিয়ে দিয়েছে। রোমানিয়ার নিকোলাই চসেস্কু থেকে ইরাকের সাদ্দাম হোসেন- সবার বিরুদ্ধে অভিযোগের ধরন প্রায় একই- দমন-পীড়ন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, ভিন্নমত দমনে কঠোরতা। এমনকি বহু পুরোনো সময়ের রাজারাও ঠিক একই সূত্রেই মৃত্যুদন্ড পেয়েছেন- রাষ্ট্রীয় নায়কোচিত ভাবমূর্তির আড়ালে চালিয়েছেন স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার লোভ। যা তাদের পতনের কারণ হয়েছে।

 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দেশে সহযোগী সরকার গড়া কিংবা দখলদার শক্তির পক্ষ নেওয়াও মৃত্যুদন্ডের কারণ হয়েছে। যেমন- নাৎসিদের সঙ্গে মিলিত হওয়া নরওয়ের ভিডকুন কুইসলিং, কিংবা জার্মান জোটের পাশে দাঁড়ানো বুলগেরিয়ার একাধিক প্রধানমন্ত্রী- বাগরিয়ানোভ, বোঝিলোভ ও ফিলভ। তাদের শাসনের সাধারণ বৈশিষ্ট্য ছিল রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার অভাব এবং শক্তিশালী রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতি অন্ধ আনুগত্য। এমনকি যুদ্ধ শেষে সমাজ যখন মানবতার পাশে দাঁড়ায়, তখনই এসব নেতার ভাগ্যে আসে দন্ড।

 

কখনো বিচার হয়েছে দ্রুত, কখনো তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে- যার কিছু ছিল ন্যায়বিচারের উদাহরণ, আবার কিছু জায়গায় দেখা গেছে বিতর্কিত আদালত বা বিজয়ীর বিচারের অভিযোগ। উদাহরণস্বরূপ, তৎকালীন পাকিস্তানের জুলফিকার আলী ভুট্টোকে দেওয়া দন্ড আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করে। এ ছাড়াও মার্কোস, বোকাসা, কিংবা চুন দু-হুয়ানের ক্ষেত্রে দেখা গেছে- দন্ডাদেশ দেওয়া হলেও পরবর্তী রাজনৈতিক সমীকরণ বা আপিল প্রক্রিয়ায় সাজা হ্রাস পায়। এ থেকেই বোঝা যায়, রাষ্ট্রশক্তির বদলে যাওয়া মাত্র তাদের ভাগ্যও বদলে যেতে পারে।

 

এর বাইরেও মানবতাবিরোধী অপরাধ বা গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত শাসকদের মধ্যে সাদ্দাম হোসেন কিংবা মাকিয়াস এনগুয়েমার ভূমিকা বিশেষভাবে স্পষ্ট। লৌহশাসন, ভয়-ভীতি, গোপন পুলিশ, বিরোধী দল দমন- এগুলো ছিল তাদের শাসনের প্রধান বৈশিষ্ট্য। ইতিহাস বলছে, জনতা দীর্ঘদিন এমন শাসন মেনে নেয় না। জনগণের ক্রোধ, আন্তর্জাতিক চাপ এবং রাজনীতির পালাবদলে- শাসনপতন অনিবার্য হয়। অন্যদিকে রাজতন্ত্র বা সাম্রাজ্যিক শাসনব্যবস্থায় মৃত্যুদন্ডের ইতিহাস আরও পুরোনো। ইংল্যান্ডের চার্লস প্রথম, ফ্রান্সের লুই ষোড়শ কিংবা স্কটল্যান্ডের রানী মেরি- সবার ক্ষেত্রে রাজনীতির দ্বন্দ্ব, ধর্মীয় মতবিরোধ কিংবা অভিজাত শ্রেণির সংঘাতই মৃত্যুর পথ তৈরি করেছে। তখনকার আইনব্যবস্থা ছিল ক্ষমতার লড়াইয়ের হাতিয়ার, ফলে ‘বিচার’ অনেক ক্ষেত্রেই ছিল বিজয়ী পক্ষের সিদ্ধান্ত মাত্র।

 

আরও দেখা যায়, এশিয়া ও আফ্রিকার কিছু দেশে রাজনৈতিক অভ্যুত্থান, অভ্যন্তরীণ গৃহযুদ্ধ বা জাতীয় সংকটের সময়ে রাষ্ট্রপ্রধানদের মৃত্যুদন্ড একটি নিয়ত পুনরাবৃত্তি। ইম্রে নাগির ক্ষেত্রে হাঙ্গেরিতে স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা, মুসা ট্রাওর বা আলফনসে মাসাম্বা-দেবাটের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার লড়াই ছিল মূল কারণ। এদের অধিকাংশের চরিত্রে এক ধরনের দ্বৈততা দেখা যায়- জনপ্রিয়তা ও দমননীতি পাশাপাশি চলেছে, আর রাজনৈতিক পরাজয় ঘটতেই সামনে এসেছে অভিযোগের স্রোত।

 

এই দীর্ঘ তালিকা আমাদের মনে করিয়ে দেয়- ক্ষমতা যত বড়ই হোক, জবাবদিহি থেকে কেউ মুক্ত নন। জনগণ, আদালত, ইতিহাস- শেষ পর্যন্ত সবাই বিচারক। অনেক সময় দেখা গেছে, মৃত্যুদন্ড কার্যকর হলেও পরবর্তী সময়ে সেই রায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। আবার কেউ কেউ মৃত্যুদন্ড পেয়েও শেষ পর্যন্ত সাজা কমিয়েছেন বা ক্ষমা পেয়েছেন- যা প্রমাণ করে বিচারব্যবস্থা এবং রাজনীতির সম্পর্ক সবসময় জটিল, আর পরস্পরের প্রতি নির্ভরশীল।

 

এ কথা সত্যি, বিচারপ্রক্রিয়া নিখুঁত না হলে মৃত্যুদন্ড হতে পারে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হাতিয়ার। কিন্তু একই সঙ্গে এটিও সত্য- গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ বা চরম দমননীতির শিকার জনগণের কাছে এমন শাস্তি কখনো কখনো ন্যায়বিচারের প্রতীক হয়ে ওঠে। এই দ্বৈত বাস্তবতার মধ্যেই মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপ্রধানদের ইতিহাস মানবসভ্যতার অগ্রগতির পথচিত্র আঁকে। এটি ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে জনগণের লড়াই এবং ন্যায়বোধের ক্রমবিকাশের একটি ধারাবাহিক দলিল। সব মিলিয়ে আমাদের মনে করিয়ে দেয়- শাসকের চরিত্র যেমন রাষ্ট্রের গতি নির্ধারণ করে, তেমনি জনগণের ইচ্ছাই শেষ পর্যন্ত ইতিহাসের চূড়ান্ত বিচারক। আর মনে রাখা উচিত- ক্ষমতা স্বল্পস্থায়ী, জবাবদিহি চিরস্থায়ী- এই সত্যই তাদের পতনে আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

 

 

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর
তারকাদের দ্বীপে যা আছে
তারকাদের দ্বীপে যা আছে
নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র
নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র
যেভাবে তাঁরা সাফল্যের চূড়ায়
যেভাবে তাঁরা সাফল্যের চূড়ায়
মৃত্যুর পর যাঁরা খ্যাতিমান
মৃত্যুর পর যাঁরা খ্যাতিমান
নোবেলজয়ীদের যুগান্তকারী অবদান
নোবেলজয়ীদের যুগান্তকারী অবদান
প্রাচীন জাতিগোষ্ঠী : যারা ইতিহাসের নীরব স্থপতি
প্রাচীন জাতিগোষ্ঠী : যারা ইতিহাসের নীরব স্থপতি
জেন-জি চায় বৈষম্যহীন উন্নত রাষ্ট্র
জেন-জি চায় বৈষম্যহীন উন্নত রাষ্ট্র
জেন-জির চোখে আগামীর বাংলাদেশ
জেন-জির চোখে আগামীর বাংলাদেশ
বিশ্বের যত অদ্ভুত শহর
বিশ্বের যত অদ্ভুত শহর
প্রামাণিকবাড়ির দিঘি
প্রামাণিকবাড়ির দিঘি
রায়বাহাদুরের দিঘি দখল
রায়বাহাদুরের দিঘি দখল
হাজার বছরের পুরোনো ওয়াদ্দারদিঘি
হাজার বছরের পুরোনো ওয়াদ্দারদিঘি
সর্বশেষ খবর
বিএনপি যখন ক্ষমতায় থাকে, নারীরা তখন ভালো থাকে: শামা ওবায়েদ
বিএনপি যখন ক্ষমতায় থাকে, নারীরা তখন ভালো থাকে: শামা ওবায়েদ

৯ মিনিট আগে | ভোটের হাওয়া

রিপু নিয়ন্ত্রণের আবশ্যকতা
রিপু নিয়ন্ত্রণের আবশ্যকতা

১০ মিনিট আগে | ইসলামী জীবন

ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে প্রধান উপদেষ্টার নৈশভোজের আয়োজন
ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে প্রধান উপদেষ্টার নৈশভোজের আয়োজন

২৫ মিনিট আগে | জাতীয়

ভূমিকম্পের পর এবার এলো ‘ঘূর্ণিঝড়’ সতর্কতা
ভূমিকম্পের পর এবার এলো ‘ঘূর্ণিঝড়’ সতর্কতা

৩০ মিনিট আগে | জাতীয়

শেখ হাসিনার মুখে এখনো দেখে নেওয়ার হুমকি
শেখ হাসিনার মুখে এখনো দেখে নেওয়ার হুমকি

৩৯ মিনিট আগে | মুক্তমঞ্চ

মিয়ানমারে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত
মিয়ানমারে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত

৫০ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলাম, কিন্তু আমি ভুল ছিলাম: সামান্থা
আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলাম, কিন্তু আমি ভুল ছিলাম: সামান্থা

৫৭ মিনিট আগে | শোবিজ

টানা দুই ম্যাচে ৩ গোল হজম লিভারপুলের
টানা দুই ম্যাচে ৩ গোল হজম লিভারপুলের

১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

মেট্রোরেলের লাইনে ড্রোন পতিত
মেট্রোরেলের লাইনে ড্রোন পতিত

১ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

শাহজালাল বিমানবন্দরে ১৩০০ গ্রাম স্বর্ণসহ আটক ১
শাহজালাল বিমানবন্দরে ১৩০০ গ্রাম স্বর্ণসহ আটক ১

১ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

১৫ দিনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ
১৫ দিনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ

২ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

‘শেখ হাসিনা শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে’
‘শেখ হাসিনা শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে’

২ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

মহাখালীতে বাসে আগুন
মহাখালীতে বাসে আগুন

২ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

লালদিয়া ও পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল চুক্তি, আধিপত্যবাদ না অংশীদারিত্ব
লালদিয়া ও পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল চুক্তি, আধিপত্যবাদ না অংশীদারিত্ব

২ ঘণ্টা আগে | মুক্তমঞ্চ

তরুণদের উদ্যোগে শতাধিক মানুষকে চিকিৎসা সেবা
তরুণদের উদ্যোগে শতাধিক মানুষকে চিকিৎসা সেবা

২ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল সংগীতশিল্পীর
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল সংগীতশিল্পীর

২ ঘণ্টা আগে | শোবিজ

ভাড়া দিতে না পারা সেই বাড়ির মালিক এখন কার্তিক
ভাড়া দিতে না পারা সেই বাড়ির মালিক এখন কার্তিক

২ ঘণ্টা আগে | শোবিজ

নির্বাচনকালীন এসপি নিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক
নির্বাচনকালীন এসপি নিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক

৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

‘দেশের মানুষ শুধু পরিবর্তন নয়, সুশাসনের নিশ্চয়তা চায়’
‘দেশের মানুষ শুধু পরিবর্তন নয়, সুশাসনের নিশ্চয়তা চায়’

৩ ঘণ্টা আগে | ভোটের হাওয়া

এখন শান্তিচুক্তি না করলে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ আরও খারাপ হবে: যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তা
এখন শান্তিচুক্তি না করলে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ আরও খারাপ হবে: যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তা

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

বরিশালে ডেঙ্গুতে শিশুসহ ২ জনের মৃত্যু
বরিশালে ডেঙ্গুতে শিশুসহ ২ জনের মৃত্যু

৩ ঘণ্টা আগে | ডেঙ্গু আপডেট

কুড়িগ্রাম ফিস্টুলামুক্ত ঘোষণা প্রক্রিয়ায় অগ্রযাত্রা
কুড়িগ্রাম ফিস্টুলামুক্ত ঘোষণা প্রক্রিয়ায় অগ্রযাত্রা

৩ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

ধানের শীষে ভোট চাইলেন ওয়াদুদ ভূইয়া
ধানের শীষে ভোট চাইলেন ওয়াদুদ ভূইয়া

৩ ঘণ্টা আগে | ভোটের হাওয়া

খাগড়াছড়ি রেডক্রিসেন্টের সহসভাপতি দুলাল, সম্পাদক মজিদ
খাগড়াছড়ি রেডক্রিসেন্টের সহসভাপতি দুলাল, সম্পাদক মজিদ

৩ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

রেকর্ড গড়ার সুযোগ পেলেন না মুশফিক, যা বললেন আশরাফুল
রেকর্ড গড়ার সুযোগ পেলেন না মুশফিক, যা বললেন আশরাফুল

৩ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

শিশুকে ধর্ষণে অভিযুক্তের লাশ মিলল রেল লাইনে
শিশুকে ধর্ষণে অভিযুক্তের লাশ মিলল রেল লাইনে

৩ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি, না দেওয়ায় লাশ মিলল নদীতে
অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি, না দেওয়ায় লাশ মিলল নদীতে

৩ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

চারটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি জনগণ: সেলিমুজ্জামান সেলিম
চারটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি জনগণ: সেলিমুজ্জামান সেলিম

৪ ঘণ্টা আগে | ভোটের হাওয়া

ঢাবির নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসুন্ধরা শুভসংঘের মতবিনিময় সভা
ঢাবির নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসুন্ধরা শুভসংঘের মতবিনিময় সভা

৪ ঘণ্টা আগে | বসুন্ধরা শুভসংঘ

১৭ বছর পর ভোট দেওয়ার অধিকার ফিরে এসেছে: সেলিমা রহমান
১৭ বছর পর ভোট দেওয়ার অধিকার ফিরে এসেছে: সেলিমা রহমান

৪ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

সর্বাধিক পঠিত
রাজধানীতে আবারও ভূকম্পন অনুভূত
রাজধানীতে আবারও ভূকম্পন অনুভূত

৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

হাসিনার মৃত্যুদণ্ড নিয়ে এবার মুখ খুলল পাকিস্তান
হাসিনার মৃত্যুদণ্ড নিয়ে এবার মুখ খুলল পাকিস্তান

১৬ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

লন্ডভন্ড উৎপত্তিস্থল : ভূমিকম্পের আতঙ্ক কাটেনি নরসিংদীবাসীর
লন্ডভন্ড উৎপত্তিস্থল : ভূমিকম্পের আতঙ্ক কাটেনি নরসিংদীবাসীর

১২ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

ফের নরসিংদীতে ভূকম্পন অনুভূত
ফের নরসিংদীতে ভূকম্পন অনুভূত

১৩ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

নরসিংদীর মাধবদী কীভাবে শক্তিশালী ভূমিকম্পের কেন্দ্রে পরিণত হলো?
নরসিংদীর মাধবদী কীভাবে শক্তিশালী ভূমিকম্পের কেন্দ্রে পরিণত হলো?

৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

তাসকিনের ২৪ রানের ওভার
তাসকিনের ২৪ রানের ওভার

১৮ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

কী কী পাচ্ছেন মিস ইউনিভার্স ফাতিমা বশ
কী কী পাচ্ছেন মিস ইউনিভার্স ফাতিমা বশ

১৩ ঘণ্টা আগে | শোবিজ

মুস্তাফিজকে আবারও দলে নিলো ক্যাপিটালস
মুস্তাফিজকে আবারও দলে নিলো ক্যাপিটালস

৬ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কঠিন গ্রুপে বাংলাদেশ
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কঠিন গ্রুপে বাংলাদেশ

৯ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

শান্তি প্রস্তাব মেনে নিতে ইউক্রেনকে সময় বেঁধে দিলেন ট্রাম্প
শান্তি প্রস্তাব মেনে নিতে ইউক্রেনকে সময় বেঁধে দিলেন ট্রাম্প

১৭ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

মামদানিকে ট্রাম্পের অভিনন্দন, বৈঠককে বললেন ‘দারুণ ও ফলপ্রসূ’
মামদানিকে ট্রাম্পের অভিনন্দন, বৈঠককে বললেন ‘দারুণ ও ফলপ্রসূ’

১৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ফাইনালে পাকিস্তানকে পেল বাংলাদেশ
ফাইনালে পাকিস্তানকে পেল বাংলাদেশ

১৮ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

বাইপাইল নয়, আজকের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলও নরসিংদীতে: আবহাওয়া অফিস
বাইপাইল নয়, আজকের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলও নরসিংদীতে: আবহাওয়া অফিস

১০ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

শেষ মুহূর্তের গোলে মরক্কোকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ব্রাজিল
শেষ মুহূর্তের গোলে মরক্কোকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ব্রাজিল

১৪ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (২২ নভেম্বর)
একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (২২ নভেম্বর)

১৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

শততম টেস্টে মুশফিকের বিরল রেকর্ড
শততম টেস্টে মুশফিকের বিরল রেকর্ড

৭ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

চাপের মুখে রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ করল ভারতের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী রিলায়েন্স
চাপের মুখে রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ করল ভারতের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী রিলায়েন্স

১৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় বাস্তবায়ন হবে ইনশাআল্লাহ : সালাউদ্দিন
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় বাস্তবায়ন হবে ইনশাআল্লাহ : সালাউদ্দিন

১১ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

ভূমিকম্পে মেট্রোরেল স্থাপনার কোনো ক্ষতি হয়নি: ডিএমটিসিএল এমডি
ভূমিকম্পে মেট্রোরেল স্থাপনার কোনো ক্ষতি হয়নি: ডিএমটিসিএল এমডি

৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

গাজায় সাত কিলোমিটার লম্বা টানেলে ৮০টি কক্ষের সন্ধান
গাজায় সাত কিলোমিটার লম্বা টানেলে ৮০টি কক্ষের সন্ধান

৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

আইন হয়ে গেলে গণভোটের প্রস্তুতি শুরু করবে কমিশন: সিইসি
আইন হয়ে গেলে গণভোটের প্রস্তুতি শুরু করবে কমিশন: সিইসি

৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ভূমিকম্পে হতাহতদের আর্থিক সহায়তা দেবে ঢাকা জেলা প্রশাসন
ভূমিকম্পে হতাহতদের আর্থিক সহায়তা দেবে ঢাকা জেলা প্রশাসন

১৬ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে কঠিন চাপের মুখে ইউক্রেন
শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে কঠিন চাপের মুখে ইউক্রেন

১৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

গত ১০ বছর ফ্যাসিবাদ বিরোধী দৃশ্যমান কিছু করেনি জামায়াত : মির্জা ফখরুল
গত ১০ বছর ফ্যাসিবাদ বিরোধী দৃশ্যমান কিছু করেনি জামায়াত : মির্জা ফখরুল

১২ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে হবে: জামায়াত আমির
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে হবে: জামায়াত আমির

৭ ঘণ্টা আগে | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘আমার বিজয় এমনভাবে হবে, ধারে কাছেও কেউ আসতে পারবে না’
‘আমার বিজয় এমনভাবে হবে, ধারে কাছেও কেউ আসতে পারবে না’

৯ ঘণ্টা আগে | ভোটের হাওয়া

সাকিবকে টপকে দেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তাইজুল
সাকিবকে টপকে দেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তাইজুল

১০ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ
আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ

৮ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

ট্রাম্পের সঙ্গে বিবাদ, কংগ্রেস ছাড়ছেন রিপাবলিকান টেলর গ্রিন
ট্রাম্পের সঙ্গে বিবাদ, কংগ্রেস ছাড়ছেন রিপাবলিকান টেলর গ্রিন

১৫ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ঝিনাইদহে বিয়েতে দাওয়াত না দেওয়ায় দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০
ঝিনাইদহে বিয়েতে দাওয়াত না দেওয়ায় দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০

১৪ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

প্রিন্ট সর্বাধিক
ভূমিকম্পের উৎপত্তি এবার ঢাকায়
ভূমিকম্পের উৎপত্তি এবার ঢাকায়

প্রথম পৃষ্ঠা

শতকোটি টাকার গাড়ি এখন ভাঙারির স্তূপ
শতকোটি টাকার গাড়ি এখন ভাঙারির স্তূপ

পেছনের পৃষ্ঠা

বগুড়ায় ধানের শীষেরই দাপট
বগুড়ায় ধানের শীষেরই দাপট

পেছনের পৃষ্ঠা

আজকের ভাগ্যচক্র
আজকের ভাগ্যচক্র

আজকের রাশি

রিপু নিয়ন্ত্রণের আবশ্যকতা
রিপু নিয়ন্ত্রণের আবশ্যকতা

সম্পাদকীয়

সারা দেশে নির্বাচনি শোডাউন
সারা দেশে নির্বাচনি শোডাউন

পেছনের পৃষ্ঠা

সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনই
সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনই

সম্পাদকীয়

শেখ হাসিনার মুখে এখনো দেখে নেওয়ার হুমকি
শেখ হাসিনার মুখে এখনো দেখে নেওয়ার হুমকি

সম্পাদকীয়

অপ্রতিরোধ্য সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি
অপ্রতিরোধ্য সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি

পেছনের পৃষ্ঠা

রংপুরে ধানের দাম নিয়ে চিন্তিত কৃষক
রংপুরে ধানের দাম নিয়ে চিন্তিত কৃষক

পেছনের পৃষ্ঠা

বাজি ধরে বার্গার গিলতে গিয়ে যুবকের মৃত্যু
বাজি ধরে বার্গার গিলতে গিয়ে যুবকের মৃত্যু

পেছনের পৃষ্ঠা

হাসিনা ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে রায় এ মাসেই
হাসিনা ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে রায় এ মাসেই

পেছনের পৃষ্ঠা

হাতিয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ আহত ২২
হাতিয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ আহত ২২

পেছনের পৃষ্ঠা

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় বাস্তবায়ন হবে
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় বাস্তবায়ন হবে

পেছনের পৃষ্ঠা

আতঙ্ক কাটেনি নরসিংদীতে
আতঙ্ক কাটেনি নরসিংদীতে

প্রথম পৃষ্ঠা

ভূরাজনৈতিক পুনর্গঠনে বাংলাদেশ দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবে
ভূরাজনৈতিক পুনর্গঠনে বাংলাদেশ দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবে

পেছনের পৃষ্ঠা

বিমানবাহিনীর কর্মকর্তার বাড়িতে ডাকাতি
বিমানবাহিনীর কর্মকর্তার বাড়িতে ডাকাতি

পেছনের পৃষ্ঠা

চট্টগ্রাম বন্দর অবরোধের ডাক দুই সংগঠনের
চট্টগ্রাম বন্দর অবরোধের ডাক দুই সংগঠনের

প্রথম পৃষ্ঠা

অগ্নিকাণ্ড রোধে কঠোর নির্দেশনা জারি
অগ্নিকাণ্ড রোধে কঠোর নির্দেশনা জারি

পেছনের পৃষ্ঠা

বাবরি মসজিদ ইস্যু ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে নতুন বিতর্ক
বাবরি মসজিদ ইস্যু ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে নতুন বিতর্ক

পেছনের পৃষ্ঠা

নির্বিঘ্ন নির্বাচন
নির্বিঘ্ন নির্বাচন

সম্পাদকীয়

পুলিশের দাবি শ্বাসকষ্ট ভাই বললেন হত্যা
পুলিশের দাবি শ্বাসকষ্ট ভাই বললেন হত্যা

পেছনের পৃষ্ঠা

খুলনায় ফের যুবককে গুলি নেপথ্যে মাদক
খুলনায় ফের যুবককে গুলি নেপথ্যে মাদক

পেছনের পৃষ্ঠা

শিল্পকলায় ভাসানে উজান
শিল্পকলায় ভাসানে উজান

পেছনের পৃষ্ঠা

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় : পাকিস্তান
হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় : পাকিস্তান

পেছনের পৃষ্ঠা

শান্তি ফেরাতে নির্বাচনই সমাধান
শান্তি ফেরাতে নির্বাচনই সমাধান

সম্পাদকীয়

বেহাল স্বাস্থ্যসেবা
বেহাল স্বাস্থ্যসেবা

সম্পাদকীয়

বিসিএস পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের রেললাইন অবরোধ
বিসিএস পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের রেললাইন অবরোধ

পেছনের পৃষ্ঠা

ফ্যাসিবাদবিরোধী দৃশ্যমান কিছু করেনি জামায়াত
ফ্যাসিবাদবিরোধী দৃশ্যমান কিছু করেনি জামায়াত

প্রথম পৃষ্ঠা

রাজশাহীতে আট ইসলামি দলের সমাবেশ ৩০ নভেম্বর
রাজশাহীতে আট ইসলামি দলের সমাবেশ ৩০ নভেম্বর

খবর