শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

তক্‌দির নেহি খুলতি! মমতাজ নেহি মিলতি!

গোলাম মাওলা রনি

তক্‌দির নেহি খুলতি! মমতাজ নেহি মিলতি!

শিরোনামটি আমি নিয়েছি বিখ্যাত একটি উর্দু উপকথা থেকে। কাহিনীর নায়ক অসম্ভব রকম লাজুক। অলস এবং অকৃতজ্ঞ প্রকৃতির মানুষ। সে অনেক কিছু পেতে চায়— কিন্তু বিনিময়ে পরিশ্রম করতে একেবারেই নারাজ। সে সীমাহীন লজ্জার কারণে নিজের প্রয়োজনের কথা যেমন মুখ ফুটে বলতে পারে না তেমনি কারও দয়া-দাক্ষিণ্য কিংবা করুণার কারণে কোনো কিছু পেয়ে গেলে সে সঙ্গে সঙ্গে অকৃতজ্ঞ হয়ে ওঠে। মানব মন এবং চরিত্রের এ জটিল বিষয় নিয়েই উপকথাটি রচিত হয়েছে। উপকথার নায়কের খুব শখ জেগেছে অপরূপ সুন্দরী কোনো নারীর সঙ্গে প্রেম এবং পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হওয়ার জন্য। সে অনেক ভেবেচিন্তে ঠিক করল সম্রাট শাহজাহানের প্রিয়তমা স্ত্রী মমতাজ মহলের মতো সুন্দরী মেয়ে হলেই তার মোটামুটি চলবে।

নায়ক মমতাজ মহলের অনেক ছবি সংগ্রহ করল এবং রাত জেগে সেসব ছবি দেখতে গিয়ে বার বার উত্তেজিত হতে থাকল। কিন্তু সমস্যা হলো— মমতাজের মতো অনিন্দ্য সুন্দরী মেয়ের দেখা কীভাবে এবং কোথায় গেলে পাবে তার কোনো কূলকিনারা সে করতে পারল না দুটি কারণে। প্রথমত, লজ্জার কারণে কাউকে মনের গোপন অভিলাষ প্রকাশ করতে পারল না। দ্বিতীয়ত, কাজটি করার জন্য যে পরিশ্রম করা দরকার তা সে কিছুতেই করতে রাজি নয় নিজের অকর্মন্য এবং কুঁড়ে স্বভাবের জন্য। অনেক চিন্তাভাবনা করে সে সিদ্ধান্ত নিল যে, মনের সুপ্ত বাসনার জন্য একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই তাকে সাহায্য করতে পারেন। সুতরাং নিজের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য উপকথার নায়ক অভিনব কায়দায় ইবাদত বন্দেগিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে গিয়ে নায়ক তার স্বভাবজাত লজ্জার কারণে কিছুতেই বলতে পারল না যে, সে মমতাজের মতো সুন্দরী একটি মেয়েকে খুঁজছে প্রেম করার জন্য। এ অবস্থায় সে বিকল্প এক বুুদ্ধি বের করল। প্রার্থনার সময় বলল— ‘ইয়া আল্লাহ! আমার খুব ইচ্ছা জেগেছে একটি তাজমহল বানাবার। কিন্তু আমার বদ নসিবের কারণে ‘তকিদর নেহি খুলতি! মমতাজ নেহি মিলতি।’ মমতাজ ছাড়া তো তাজমহল বানানো সম্ভব নয়। বিধাতা তার ইচ্ছা পূরণ করলেন। ফলে দৈবক্রমে সে অনিন্দ্য সুন্দরী এক রমণীকে প্রেমিকা হিসেবে পেয়ে গেল। তার দৈনন্দিন জীবন প্রেমময়তার কারণে অনাবিল আনন্দ ও প্রশান্তিতে ভরে উঠল। হঠাৎ তার মনে পড়ল তাজমহল বানানোর ব্যাপারে অঙ্গীকারের কথা।

নায়ক পুনরায় নিজের তকিদরকে দায়ী করে আহাজারি শুরু করে দিল। বলল— ইয়া আল্লাহ! কীভাবে তাজমহল বানাব— মমতাজ তো মিলল কিন্তু তকিদর তো খুলল না। কারণ আমাদের এখনো শাদি হয়নি। বিধাতা এবারও তার ইচ্ছা পূরণ করলেন। ফলে মহা ধুমধামে নায়কের সঙ্গে তার প্রেমিকার শাদি মোবারক সম্পন্ন হয়ে গেল। বিয়ের পর নায়ক তো মহাখুশি। দাম্পত্যের সুখ-শান্তি, শ্বশুরবাড়ির আরাম-আয়েশ এবং সকাল-সন্ধ্যায় স্ত্রীর রূপ দর্শন করতে করতে বেশ কয়েক বছর চলে গেল। এরই মধ্যে তার মনে পড়ে গেল তাজমহল বানানোর অঙ্গীকারের কথা। চিন্তায় সে অস্থির হয়ে পড়ল এবং কীভাবে আল্লাহকে ফাঁকি দেওয়া যায় তা নিয়ে দিন-রাত গবেষণা শুরু করে দিল। তার গবেষণা বিফলে গেল না। চমৎকার একটি ফাঁকিবাজির শয়তানি বুদ্ধি তাকে নতুন পথ দেখাল। সে কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে বলল, তাজমহল কীরূপে বানাই— ‘তকিদর নেহি খুলতি— মমতাজ নেহি মরতি’ অর্থাৎ আমার ভাগ্যও খুলছে না এবং মমতাজও মরছে না। মমতাজের কবর না হলে তাজমহল কীসের ওপর নির্মাণ করব?

গল্পের শেষ অংশটুকুই আজকের নিবন্ধের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। অর্থাৎ তকিদর নেহি খুলতি— মমতাজ নেহি মরতি’ শব্দমালার মাধ্যমে মানুষের ফাঁকিবাজির মনোবৃত্তির নির্মম ও নিষ্ঠুর পরিণতির যে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনার চেষ্টা করব। প্রথমত, বিষয়টি যদি নেহাত কৌতুক হিসেবে নেই তবে বলা যেতে পারে একজন মানুষ কোনো একটি বিষয় লাভের জন্য যতটা না উদগ্রীব থাকে পরবর্তীতে তা ভোগের পর লব্ধ বস্তু পরিত্যাগের জন্য সে পাগল হয়ে যায়। উপকথার নায়ক প্রাণপণে একজন সুন্দরী প্রেমিকা খুঁজছিল। কিন্তু বিয়ের পর স্ত্রীর প্রতি সে তার পূর্বেকার আবেগ-উচ্ছ্বাস ধরে রাখতে পারেনি। ফলে স্ত্রীর মৃত্যু কামনা করতে তার সামান্যতম সংকোচবোধ হয়নি।

বিষয়টি যদি একটু অন্যভাবে ব্যাখ্যা করি তবে বলা যেতে পারে যে, নেহাত ফাঁকিবাজি অথবা ছলচাতুরি কিংবা বিনোদনের জন্য মানুষ তার অতি আপনজনকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে ত্যাগ করতে, বিসর্জন করতে অথবা মেরে ফেলতে দ্বিধা করে না। আমাদের গল্প-সাহিত্য, সিনেমা-নাটক এবং প্রাত্যহিক জীবনে এ ধরনের ঘটনা হরহামেশা ঘটে থাকে। জুয়াড়ি স্বামী কর্তৃক জুয়ার কোটে স্ত্রীকে বন্ধক রাখা, পাষণ্ড পিতা কর্তৃক শিশুসন্তান হত্যা, পাষণ্ড মা কর্তৃক যুবতী কন্যাকে দেহ ব্যবসায় উদ্বুদ্ধ করা, স্ত্রী কর্তৃক স্বামী-শিশুসন্তান হত্যা, সন্তান কর্তৃক পিতা-মাতা হত্যার মতো জঘন্য এবং অমানবিক ঘটনাসমূহ ইদানীং প্রায়ই পত্র-পত্রিকার শিরোনাম হচ্ছে। মানুষের অমানবিক মনোবৃত্তি এবং নির্মম-নিষ্ঠুর চাহিদার কারণে পুরো সমাজ-সংসার-রাষ্ট্র অস্থির হয়ে পড়েছে। অনাচার, ব্যভিচার, পাপাচার, পরকীয়া, বিশ্বাস ভঙ্গ, দুর্নীতি, জুলুম, অত্যাচার রাহাজানি ইত্যাদি অপরাধ জ্যামিতিক হারে বেড়ে যাচ্ছে।

মানুষের লোভ, কাজ না করে বিকল্প উপায়ে উপার্জনের ধান্ধা এবং পরিশ্রম-ত্যাগ-তিতিক্ষা ব্যতিরেকে পদ-পদবি লাভের আকাঙ্ক্ষার কারণে ব্যক্তি-সমাজ-সংসার এবং রাষ্ট্রে দুর্বৃত্তায়ন রীতিমতো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। মানুষের মান-সম্মানবোধ যেমন মারাত্মকভাবে লোপ পেয়েছে তেমনি অপমানিত, লাঞ্ছিত, নিগৃহীত এবং নিপীড়িত হওয়ার ধৈর্যসহ্য বহুগুণে বেড়ে গেছে। সমাজ এখন কোনো কিছু দেখেই আশ্চর্য হয় না— কোনো কিছুকে ভালোবাসে না আবার কোনো কিছুকে ঘৃণাও করে না। আজ থেকে ২০-২৫ বছর আগে কোনো পুরুষ যদি পরনারীতে আসক্ত হতো অথবা কোনো কুলবধূর ওপর চরিত্রহীনতার অভিযোগ থাকত তবে পুরো সমাজ ছি ছি রব তুলত। ফলে অভিযুক্ত নর-নারীকে তার পরিচিত সমাজ ছেড়ে নিরাপদ দূরত্বে বসবাস করতে হতো। কেউ যদি ঘুষ-দুর্নীতিতে যুক্ত হতো সেক্ষেত্রে সমাজের কেউ তাদের ভালো চোখে দেখত না।

আজকের সমাজে পরকীয়া একটি প্রচলিত ঘটনা। বাইরের লোকজন তো দূরের কথা পরিবারের একান্ত আপনজনও পরকীয়ার মতো ভ্রষ্টতার জন্য তিরস্কার করে না। প্রায় সবাই মেনে নিচ্ছে। কেউ কেউ তো রীতিমতো প্ররোচনা দিচ্ছে এবং অনেকে আবার নিজেদের কুকর্মের জন্য গর্ব করে বেড়াচ্ছে। এক ভদ্রলোক তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে বললেন, কি হে নাদের! ভাবীর খোঁজখবর রাখ কিছু! নাদের নির্লিপ্তভাবে জবাব দিল— কীসের খবর! ভদ্রলোক বললেন— ওই যে বল্টুর সঙ্গে ভাবীর সম্পর্ক নিয়ে কীসব শুনছি। তারা নিয়মিত ডেটিং করে একসঙ্গে বিদেশে যায়। নাদের হাসতে হাসতে বলল— যাওগগা! করুকগা, এতে আর এমন কী ক্ষতি, আমার জিনিস তো ঠিকই থাকবে, উঠিয়ে তো আর নিতে পারবে না।

পরকীয়ার মতো দুর্নীতি এবং লুটপাট পুরো সমাজকে গ্রাস করে ফেলেছে। আজকের দিনে মানুষের ওপর দুর্নীতিবাজ এবং কর্মের ওপর কুকীর্তি জগদ্দল পাথরের ওপর চেপে বসেছে। দুর্নীতিবাজরা দুর্নীতির উল্লাসকে সার্বজনীন করার জন্য নিজ পরিবারের ছেলেমেয়ে, ভাইবোন, স্বামী-স্ত্রী, পিয়ন, ড্রাইভার, কাজের মেয়ে— সবার সঙ্গে দুর্নীতির অর্থসংক্রান্ত সন্ত্রাস, অশ্লীলতা, উগ্রতা, নিষ্ঠুরতা এবং দম্ভ ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে দিচ্ছে। সবাই মিলেমিশে ভাগযোগে এমন সব কর্ম করছে যা দেখে রাক্ষস-রাক্ষুসী তাদের হাঁ বন্ধ করে দিচ্ছে— পিশাচরা পর্যন্ত লজ্জায় চোখ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে এবং হায়েনার দলেরা আফসোস করতে করতে আত্মহত্যার পথ খোঁজা শুরু করে দিয়েছে।

কিছুদিন আগে রাজধানীর নামকরা একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের রুমে বসার দুর্ভাগ্য হয়েছিল। দুর্ভাগ্য বললাম এই কারণে যে— ওইদিন যা দেখলাম এবং শুনলাম তা আমার মনোমস্তিষ্ক ইতিপূর্বে কল্পনাও করতে পারেনি। সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া কয়েকটি বখাটে ছেলের বিচার চলছিল। ছেলেরা সত্তর/আশি হাজার টাকা দামের মোবাইল সেট হাতে নিয়ে ক্লাসে ঢোকে এবং পড়াশোনা বাদ দিয়ে হৈচৈ করে ও ক্লাসের শিক্ষিকাকে উদ্দেশ্য করে আজেবাজে মন্তব্য করে। দুজন শিক্ষিকার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিচার চলছিল। তার ক্লাসের শিক্ষার্থী অর্থাৎ সপ্তম শ্রেণির ছেলেরা শিক্ষিকাদের দেখে পেছন থেকে শিস দেয়— উহ! আহ! শব্দ করে। শিক্ষিকাদের মধ্যে যিনি একটু ফর্সা তাকে ছাত্ররা সানিলিয়ন এবং অপেক্ষাকৃত কালো বর্ণের শিক্ষিকাকে কালিলিয়ন বলে ইভ টিজিং করে থাকে। শিক্ষিকারা যখন অশ্রুসজল নয়নে এসব অভিযোগ করছিলেন তখন সেখানে উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষকের মতো আমিও লজ্জা-অপমান এবং বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়ে মাথা নিচু করে রেখেছিলাম।

স্কুলটির প্রধান শিক্ষক অত্যন্ত ভালো মানুষ। তিনি ছেলেদের বিরুদ্ধে যথাসম্ভব কড়া ব্যবস্থা নিলেন। কিন্তু আফসোস করে বললেন— নিজের হাজারো সীমাবদ্ধতার কথা। অভিভাবক, সমাজ, রাষ্ট্র, আকাশ সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তির কুফল সর্বনাশ ঘটাতে ঘটাতে এমন নিম্নস্তরে চলে এসেছে যে দশ-এগারো বছরের বালক-বালিকা পর্যন্ত যৌন সন্ত্রাসে নেমে পড়েছে। অনেক কুলাঙ্গার পিতা-মাতা আধুনিকতার নামে নিজেরা যেমন বহুগামিতায় জড়িয়ে পড়েছে তেমনি নিজেদের কুকীর্তিকে সহনীয় এবং মোহনীয় করার জন্য ছোট ছোট ছেলেমেয়েদেরও অবাধে চলাফেরা করতে উৎসাহ দিচ্ছে। ফলে মানুষের স্বাভাবিক সৌন্দর্য, আকর্ষণ, ভক্তি, শ্রদ্ধা ইত্যাদি নষ্ট হয়ে গেছে। অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করা যায় এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। নির্ভরযোগ্য মানুষ দিনকে দিন বিরল হয়ে যাচ্ছে। জ্ঞানী-সৎ ও সজ্জন মানুষ বিলুপ্ত প্রাণীর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে এবং জাতিসংঘের বিশ্ব ঐতিহ্য রক্ষা কর্মসূচির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়েছে।

একটি নিকৃষ্ট প্রাণীর মাথা ও লেজ নিয়ে বাংলাদেশে একটি কৌতুক চালু হয়েছিল। বলা হতো আগে প্রাণীটির মাথা লেজ নাড়াত আর এখন নাকি লেজে মাথা নাড়ায়। সময়ের বিবর্তনে কৌতুকটি পুরনো এবং অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ইদানীং কৌতুক হলো— প্রাণীটির বমিকৃত উচ্ছিষ্ট এবং বর্জ্য দ্বারা এখন তার মস্তিষ্ক পরিচালিত হচ্ছে। পুরো সমাজব্যবস্থাই উলটপালট হয়ে গেছে। কেউ কাউকে মানছে না, কেউ কাউকে শ্রদ্ধা করছে না এবং বিশ্বাসও করছে না। স্নেহ-মায়া-মমতা, বিশ্বাস এবং ভালোবাসা সমাজ থেকে উঠে গিয়ে বইয়ের পাতায় স্থান নিয়েছে এবং এসব গুণাবলি বর্জিত হন্যে হয়ে ওইসব বইপত্র ধ্বংস করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে, সেখানে ভালো ভালো নীতিকথা লিখিত রয়েছে।

আমরা আজকের নিবন্ধের একদম শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। যদি প্রশ্ন করা হয়— কেন এই অধঃপতন? সেক্ষেত্রে আমাদের পুনরায় ফিরে যেতে হবে আজকের শিরোনামের ভাবার্থে। মানুষের অকৃতজ্ঞতাবোধ তার চিন্তা-চেতনা ও কর্মে অভিশাপের বিষবাষ্প ডেকে নিয়ে আসে। মানুষের অলসতা তার শরীর-মন-মস্তিষ্ক দুর্বল থেকে দুর্বলতর করে ফেলে। অলস ব্যক্তি কোনোদিন জ্ঞানী হয় না। অন্যদিকে জ্ঞানহীন মানুষ সবসময় চালাকি করার চেষ্টা করে এবং সারাক্ষণ বাঁকা পথের ফাঁকফোকর খুঁজে বেড়ায়। ফাঁকিবাজি করা এবং ফাঁকি দেওয়ার প্রবল নেশা তাকে পেয়ে বসে। লোভ-লালসা, ভোগবিলাস এবং সন্দেহ অবিশ্বাস তখন তার প্রধান বাহন হয়ে দাঁড়ায়। এ অবস্থায় দুটো পরিণতি তার জন্য অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে। প্রথমত, নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সে নিজেকে পশুর চেয়েও নীচু পর্যায়ে নিয়ে যায়। দ্বিতীয়ত, স্বার্থসিদ্ধিতে সফলতা পেলে সে দাম্ভিকতা, জুলুম-অত্যাচার এবং অন্যকে খোটা দিয়ে অপমান করতে করতে নিজেকে ফেরাউন বানিয়ে ফেলে।

 

     লেখক : কলামিস্ট।

সর্বশেষ খবর