আকস্মিক বন্যায় বিপর্যয়কর অবস্থায় পড়েছে বিপুলসংখ্যক মানুষ। অনেকেরই ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। সহায়সম্বল হারিয়ে অসহায় তুলনামূলক সচ্ছলরাও। বন্যার পানি নামতে শুরু করায় জেগে উঠছে ক্ষত। বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন অনেকে। কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানোর কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি তারা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, দেশে চলমান বন্যায় ১১ জেলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৬ লাখ ১৯ হাজার ৩৭৫ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২৭ জন। গতকাল সচিবালয়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। ত্রাণ উপদেষ্টা বলেন, এখন পর্যন্ত বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ১১টিই আছে। ১১ জেলায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৫৬ লাখ ১৯ হাজার ৩৭৫ জন। পানিবন্দি পরিবার ১২ লাখ ৭ হাজার ৪২৯টি। ৭৪ উপজেলা বন্যা প্লাবিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন/পৌরসভা ৫৪১টি। এদিকে কুমিল্লা প্রতিনিধি দুর্গত এলাকার বানভাসিদের বরাতে জানিয়েছেন- ‘যাদের বাড়ি সড়কের পাশে তারা একাধিকবার সহায়তা পাচ্ছেন। প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ নিয়ে কেউ যাচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতি বন্যাদুর্গত প্রতিটি এলাকার চিত্র।’ অপরদিকে ফেনীসহ অন্যান্য প্রতিনিধিও দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলে একই খবর জানিয়েছেন। গতকাল পর্যন্ত বহু স্থানে ত্রাণ পৌঁছেনি বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি।
সচিবালয়ে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বন্যায় মোট ২৭ জন মারা গেছে উল্লেখ করে বলেন, এর মধ্যে কুমিল্লায় ১০ জন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে পাঁচজন, খাগড়াছড়িতে একজন, নোয়াখালীতে পাঁচজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন এবং কক্সবাজারে তিনজন মারা গেছেন। এ সময় ফারাক্কা ব্যারাজ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে চলমান ভয়াবহ বন্যার মধ্যেই ভারত যে ফারাক্কা ব্যারাজের ১০৯টি গেট খুলে দিয়েছে, তাতে এখন পর্যন্ত নতুন করে কোনো এলাকা প্লাবিত হয়নি। ত্রাণ বিতরণের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার সবাইকে সমন্বিত করে ত্রাণের কাজ করছে। যে স্থান থেকে পানি নেমে যাচ্ছে সেখানে যে সব জায়গায় ত্রাণ পরিবহন করা যায় সেই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আরও দুর্গম এলাকায় সেনাবাহিনী ও অন্যান্য বাহিনী হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে। এখন পর্যন্ত দূরবর্তী সব উপজেলায় ত্রাণ পৌঁছানো গেছে। উপজেলা স্তরে ত্রাণ মজুত করা গেছে এবং চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা গেছে। ক্রমান্বয়ে এগুলো ধারাবাহিকভাবে হচ্ছে। ফারুক-ই-আজম বলেন, দুর্গম এলাকা এখন আর নেই। সব জায়গায় ত্রাণ পৌঁছাতে পেরেছি। অধিকাংশ এলাকায় পানি নেমে যাচ্ছে। যেসব এলাকায় নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে সেগুলোর পানি দ্রুত নেমে যাবে বলে আশা করছি। ত্রাণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারব। জনগণের স্বেচ্ছাসেবা ও মানুষের উদ্যম আমাদের শক্তি জোগাচ্ছে।
বন্যাকবলিত এলাকা নিয়ে প্রতিনিধিদের পাঠানোর খবর-
কুমিল্লা দক্ষিণের পাঁচ উপজেলায় সহায়তা দাবি : কুমিল্লার ১৭ উপজেলার মধ্যে ১০টি উপজেলা বেশি বন্যাকবলিত। বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে গোমতী নদীর পানি। সড়কের ক্ষত চিহ্ন ভেসে উঠছে। আক্রান্ত উল্লেখযোগ্য উপজেলাগুলো হলো- বুড়িচং, আদর্শ সদরের একাংশ, ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বারের একাংশ, তিতাস, লাকসাম, নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, চৌদ্দগ্রাম ও সদর দক্ষিণের একাংশ। এদিকে সহায়তা চেয়েছেন কুমিল্লা দক্ষিণের পাঁচ উপজেলা লাকসাম, নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, চৌদ্দগ্রাম ও সদর দক্ষিণের বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ। এদিকে বানভাসিরা জানিয়েছেন, যাদের বাড়ি সড়কের পাশে তারা একাধিকবার সহায়তা পাচ্ছেন। প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ নিয়ে কেউ যাচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতি বন্যাদুর্গত প্রতিটি এলাকার চিত্র।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মনোহরগঞ্জ ও লাকসামে সড়কের পাশে ত্রাণের গাড়ি থেমে আছে। সেখান থেকে সড়কের পাশে দাঁড়ানো মানুষজন ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছেন। সড়কে হাঁটু কিংবা কোমর সমান পানি থাকায় গ্রামের ভিতর যাচ্ছেন না তারা। মনোহরগঞ্জ উপজেলার লক্ষণপুর ইউনিয়নের গাজিয়াপাড়া গ্রামের আবদুল বাকী মিলন ও বড় কেশতলা গ্রামের আবুল বাশার বলেন, আমাদের গ্রাম প্রত্যন্ত এলাকায়। এখানে কোনো সহায়তা আসেনি।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজলা রানী চাকমা জানান, মনোহরগঞ্জে ১০ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আছে। লক্ষাধিক বাসিন্দা পানিবন্দি অবস্থায়। চাহিদার তুলনায় ত্রাণ একেবারেই কম পাচ্ছেন। যে কারণে সব গ্রামে সমানভাবে বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। গত ২১ আগস্ট থেকে শুকনো খাবার ও ২০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করেছেন। তিনি আরও ২০ মেট্রিক টন চালের জন্য জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন। কুমিল্লা লাকসাম উপজেলার মনপাল, তপৈয়া, রাজাপুর, রামপুর, ষোলদনা, মামীশ্বর, নাড়িদিয়া এলাকায় ঘুরে দেখা যায় পানিবন্দি হাজারো পরিবার। উপজেলা প্রশাসন থেকে কিছু মুড়ি ও বিস্কুট ছাড়া আর কিছুই পাননি বন্যাদুর্গতরা। লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল হাই সিদ্দিকী জানান, ১৫ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আছে। তাদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বেশি। তাছাড়া উপজেলার ৮৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি। উপজেলা প্রশাসন থেকে সাধ্যমতো ত্রাণ সরবরাহ করা হয়েছে। নাঙ্গলকোটেও ত্রাণ বিতরণ অপ্রতুল। সেখানে বেসরকারি উদ্যোগে যাওয়া গাড়িগুলো সড়কের পাশে ত্রাণ বিতরণ করে চলে যায়। দুর্গম গ্রামগুলোতে ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না। নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া আক্তার লাকি বলেন, নাঙ্গলকোটে এখনো পৌনে ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি। ৩০ হাজারের মতো মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। এখানে গেল কদিন ৩০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। তবে চাহিদা ৫০ মেট্রিক টনের।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী জানান, কুমিল্লায় যে পরিমাণ বন্যার্ত আছে সে তুলনায় ত্রাণ অপ্রতুল। এখন পর্যন্ত ৩৯ লাখ টাকার ত্রাণ বিতরণ হয়েছে। আরও ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়েছেন।
এদিকে কুমিল্লা গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যার পানিতে ডুবে দুই শিশুসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আশ্রয় কেন্দ্রে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান একজন। সোমবার দুপুর থেকে রাতের মধ্যে জেলার বুড়িচং, নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ ও লাকসাম উপজেলায় এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এর আগের দিন রবিবার জেলার তিতাস ও বুড়িচং উপজেলায় মারা যান আরও তিনজন। বন্যার শুরু থেকে পৃথক পৃথক সময়ে মারা যান আরও ছয়জন। এর মধ্যে সোমবার দুপুরে বুড়িচং উপজেলা সদর ও পশ্চিমসিংহ এলাকায় পানিতে ডুবে হাসিবুল (১০) ও ইব্রাহিম (৪) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়। বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সোমবার বিকালে নাঙ্গলকোট উপজেলার গোরকমুড়া এলাকায় সেরাজুল এবং রাতে মনোহরগঞ্জের মির্জাপুর এলাকায় বন্যার পানিতে ডুবে আরও দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার লাকী ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজালা রানী চাকমা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার আউশপাড়া আশ্রয় কেন্দ্রে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান মুনিরুল হকের স্ত্রী মাকসুদা বেগম (৫৫)। বিষয়টি নিশ্চিত করেন লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নাজিয়া বিনতে আলম।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি।
ফেনীর দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছেনি : ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতির দিকে রয়েছে। পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ার উঁচু স্থান থেকে পানি অনেকটা নেমে গেছে। ফেনী শহরের প্রধান প্রধান সড়ক থেকে পানি প্রায় নেমে গেলেও শহরের নিম্নাঞ্চল এখনো বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। ফেনী সদর, সোনাগাজী ও দাগনভূঞার বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে রয়েছে। তবে পুরো জেলার গ্রামীণ সড়ক ও নিম্নাঞ্চল এখনো তলিয়ে রয়েছে। অপেক্ষাকৃত বেশি দুর্গতদের উদ্ধারের তৎপরতায় ঘাটতি এবং ত্রাণ না পাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ফেনী শহরসহ বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় পানি বাড়ির ছাদ ছুঁয়েছে। কোথাও কোথাও পানি ছাদের ওপর দুই তলায় উঠে পড়ে। বন্যায় জেলার প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়। কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ৮ লাখ মানুষ। মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ২৩টি স্থানের বাঁধ ভেঙে ১৯ আগস্ট দিবাগত রাতে ফেনীর পরশুরাম ও ফুলগাজি উপজেলা প্লাবিত হয়। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পানি প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতায় উঠে যায়। বাসিন্দারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুটি উপজেলা পুরোপুরি প্লাবিত হয়। প্রচণ্ড স্রোতে নিমিষে মানুষের ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে সব তলিয়ে যায়। বন্যার পানি খুব দ্রুত জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়কের ৭ থেকে ৮ ফুট উচ্চতায় উঠে পড়ে। পুরো জেলা পরিণত হয় নদীতে। যে সড়কে সব সময় চলত বিভিন্ন ধরনের গাড়ি সেখানে টানা পাঁচ থেকে ছয় দিন ধরে চলছে বড় বড় নৌকা ও স্পিডবোট।
বন্যার পর পুরো দেশ থেকে হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক হাজার খানেক বোট ও পর্যাপ্ত ত্রাণ নিয়ে দুর্গত এলাকায় যান। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো উদ্ধার তৎপরতা ও ত্রাণ বিতরণ শুরু করে। বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই উদ্ধার তৎপরতা ও ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
নোয়াখালীতে পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যানসহ তিনজনের মৃত্যু : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে পৃথক ঘটনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পল্লী বিদ্যুতের দুই লাইনম্যানসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন, নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লাইনম্যান মো. জাকির হোসেন (২৮) ও মো. ইব্রাহিম (২২) এবং বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের দশম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির আহমেদ (১৭)। সাব্বির উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের মো. সালাউদ্দিনের ছেলে। লাইনম্যান মো. জাকির হোসেন লক্ষ্মীপুর জেলার বাসিন্দা এবং মো. ইব্রাহিম চট্রগ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। সোমবার দুপুরে উপজেলার পৃথক স্থানে আমিন বাজার এলাকা ও মীরওয়ারিশপুর এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, লাইনম্যান জাকির সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার আমিনবাজার এলাকায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের কাজ করতে যায়। ওই সময় পানিতে পড়ে থাকা ছেঁড়া তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. জাকির হোসেন ঘটনাস্থলে মারা যান। অপরদিকে, বিকাল ৫টার দিকে একই উপজেলার মীরওয়ারিশপুর এলাকায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন চালু করতে যায় লাইনম্যান মো. ইব্রাহিম। সেখানে তিনি অসাবধানতাবশত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। গত কয়েক দিন ধরে ইনস্টিটিউটে আশ্রয় নেওয়া বন্যার্তদের সেবা দিয়ে যাচ্ছিল শিক্ষার্থী সাব্বির। তার বসতঘরের মালামাল বন্যার পানিতে নষ্ট হওয়ার খবর পেয়ে সোমবার সকালে বাড়িতে যায়। পরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঘরের মালামাল সরানোর সময় মাল্টিপ্লাগের তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়।
মৌলভীবাজারে নদীর পানি কমছে, বাড়ছে হাওরে : ভারতের উজানে বৃষ্টিপাত না থাকায় মৌলভীবাজারের সবকটি নদীর পানি এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে মৌলভীবাজার জেলায় উপরি অংশের বন্যার পানি কমে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও হাওর-পাড়ের গ্রামগুলোতে দেখা দিয়েছে বন্যা। জেলায় মনু ও ধলাই নদীর বেশ কয়েকটি ভাঙনের কারণে জেলাব্যাপী বন্যা দেখা দেয়। বন্যার পানি ক্রমান্বয়ে প্রবাহিত হয়ে জেলার হাকালুকি ও কাউয়াদিঘি হাওরে পড়ছে। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন হাওর-পাড়ের দিনমজুর ও প্রান্তিক কৃষকেরা।
হবিগঞ্জের নিম্নাঞ্চল থেকে নেমে গেছে পানি : টানা কয়েকদিন স্থির থাকার পর অবশেষে হবিগঞ্জের নিম্নাঞ্চল থেকে নেমে গেছে বন্যার পানি। বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় নিজ নিজ ঘরবাড়িতে ফিরেছে বন্যায় আক্রান্ত বেশির ভাগ লোক। যদিও এখনো একেবারে নিচু এলাকায় পানি রয়ে গেছে। একই সঙ্গে আশ্রয় কেন্দ্রেও রয়েছে বেশ কিছু নারী পুরুষ।