কর্মসংস্থান আর বিনিয়োগ বাড়াতে সারা দেশে ১০০ ইকনোমিক জোন হচ্ছে। এসব জোন অর্থাৎ অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রাপ্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে পারলে দেশের অর্থনীতির ধারাই পাল্টে যাবে বলে মনে করে বাংলাদেশ ইকনোমিক জোন অথরিটি (বেজা)। জোনে কল-কারখানা স্থাপনে জমির অভাব থাকবে না। গ্যাস-বিদ্যুৎ, পানিসহ কোনো সার্ভিস সংযোগ নিয়ে থাকবে না অনিশ্চয়তা। থাকবে না শ্রমিক ধর্মঘট বা ভাঙচুরের আশঙ্কা। থাকবে সহজ যোগাযোগ আর পণ্য পরিবহনের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। শতভাগ পুঁজি রক্ষা আর লাভের নিশ্চয়তা নিয়ে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে পারবেন উদ্যোক্তারা। বেজা মনে করে, এসব জোনে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বেজা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে অর্ধশতাধিক জোনের অনুমোদন দিয়েছেন। এসব জোনের ভূমি ও অবকাঠামোর উন্নয়নে পুরোদমে কাজ চলছে। এর মধ্যে সরকারি খাতের ৫৬টি জোনের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে। এ ছাড়া বেসরকারি খাতের আরও ১০টি ইকনোমিক জোনের কাজ চলছে সমানতালে। এর মধ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লাইসেন্স পেয়েছে। সেখানে ফুড অ্যান্ড বেভারেজসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্প গড়ে উঠবে। এ দুটির কাজও এগিয়ে যাচ্ছে। বেজা জানায়, এতে কমপক্ষে ৪০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে আগামী ১৫ বছরে কমপক্ষে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এসব জোনে স্থাপিত কল-কারখানা থেকে উৎপাদিত ৪০ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব হবে; যা দেশের রপ্তানি খাতকে নিয়ে যাবে এক অনন্য উচ্চতায়। বেজা মনে করে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর উৎপাদন শুরু হলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়বে কমপক্ষে ২ শতাংশ। এর ফলে দেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতির ধারা পাল্টে রূপ নেবে শিল্পনির্ভর অর্থনীতিতে। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনামতেই এগিয়ে চলছে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা। এসব কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও সরকারি পর্যায়ের ১০টির কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এগুলো এ বছরের মধ্যে উৎপাদনে যাবে। কয়েকটি ইতিমধ্যে স্বল্পাকারে উৎপাদনেও গেছে। সরকারি খাতের অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারাও নির্বিঘ্নে বিনিয়োগ করার সুযোগ পাবেন। এতে বিদেশি বিনিয়োগের খরা কেটে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। জানা গেছে, চট্টগ্রামের মিরসরাইতে ৩০ হাজার একর জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল। এখানে সব ধরনের কারখানা স্থাপনের সুযোগ থাকছে। মিরসরাই হবে একটি পূর্ণাঙ্গ শিল্প সিটি। এতে শিল্পের কোনো কিছুরই অভাব থাকবে না। যে কোনো বিনিয়োগকারী বা ব্যবসায়ী এখানে যে কোনো খাতের কারখানা স্থাপন করতে পারবেন। তবে সেগুলো হবে অবশ্যই পরিকল্পিত। যেমন, যে সাইটে ওষুধ কোম্পানি থাকবে, সেখানে অন্য কোনো খাতের কোম্পানি থাকবে না। অর্থাৎ খাতভিত্তিক কারখানা স্থাপন হবে এ শিল্প সিটিতে। অবশ্য এ ধরনের নিয়ম থাকবে সব অর্থনৈতিক অঞ্চলেই। সূত্র জানায়, এখন থেকে অর্থনৈতিক এলাকা ও শিল্পাঞ্চল ছাড়া অন্য কোনো জায়গায় শিল্প স্থাপনের অনুমোদন দেবে না সরকার। সব শিল্প খাতকে একই ছাদের নিচে আনতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে খাতভিত্তিক শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলারও পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধাসংবলিত অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্পাঞ্চলে বিনিয়োগ করলে উদ্যোক্তাদের নানা ধরনের প্রণোদনা ও ছাড় দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে মহাজোট সরকার। বিবিএসের তথ্যমতে, প্রতি বছর দেশের ২০ থেকে ২২ লাখ মানুষ কর্মবাজারে ঢুকছে। এদের একটা অংশ কাজের সন্ধানে বিদেশে পাড়ি জমায়। আর বিরাট একটা অংশ দিনের পর দিন চাকরির সন্ধানে ঘুরে বেড়ায়। এদের সবাইকেই কর্মসংস্থানের আওতায় আনার কথা ভাবছে সরকার। ফলে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলের মাধ্যমে দেশের বেকার সমস্যার সমাধানও হবে খুব সহজেই; যা দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এসব অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সরকার বিশ্বব্যাংকের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা—ডিএফআইডি ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা—জাইকার আর্থিক সহায়তা নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক চলতি বছরই প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে এ উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে। বেজা সূত্র জানায়, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় বিশ্বব্যাংক দশমিক ২৫ শতাংশে ঋণ দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে জাইকার দেওয়া ঋণের সুদহার আরও কম। এতে একদিকে যেমন সুদ কম দিতে হবে, অন্যদিকে ঋণ পরিশোধেরও সময়সীমা দীর্ঘ; যা বৈদেশিক ঋণ ব্যবস্থাপনায় কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি করবে না বলে মনে করে সরকার।
শিরোনাম
- নিকট ভবিষ্যতে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে
- রাজধানী ঢাকায় আজ কোথায় কোন কর্মসূচি
- আজ ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’
- একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (২৪ নভেম্বর)
- সাড়ে ৯ ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে খালেদা জিয়া
- সাদিয়া আয়মানের অভিনয়ে মুগ্ধ অনিরুদ্ধ রায়
- গাইবান্ধা কারাগারে অসুস্থ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু
- আদাবরের শীর্ষ ছিনতাইকারী ‘চোরা রুবেল’ গ্রেপ্তার
- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
- শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে বিভাগীয় শহরে বাস দিল জবি
- ভূমিকম্প অনিশ্চিত তাই বিদ্যালয় বন্ধের সুযোগ নেই: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা
- ঢাকা মেডিকেলে একাডেমিক কার্যক্রম আগামী ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ
- বাগেরহাটে ৩ বান্ধবীকে শ্লীলতাহানি ও একজনকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা
- হাসিনা-কামালকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি দেওয়া হয়েছে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ কার্নিভাল-৩ অনুষ্ঠিত
- নভেম্বরের ২২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২১৩ কোটি ডলার
- ফ্যাসিজম সহ্য করা হবে না, নিজেরাও ফ্যাসিষ্ট হবো না: তানিয়া রব
- বন্ধ কারখানা চালুর দাবিতে শ্রমিকদের মানববন্ধন
- ৮১ দেশি পর্যবেক্ষকের সঙ্গে ইসির সংলাপ ২৫ নভেম্বর