উনিশ শতকের শেষ দশকে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে ক্রীড়াঙ্গন অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। শুরু হয় অলিম্পিক আন্দোলন। এর মূল স্পিরিটই হলো, জাতি-ধর্ম-বর্ণ বৈষম্যের অবসান করে এক সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলা। এই সোনালি স্বপ্ন বুকে নিয়ে অলিম্পিক পথচলা শুরু করলেও সব সময় তা টিকে থাকেনি। মাঝেমধ্যেই অলিম্পিককে কলুষিত করেছে ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা ক্রীড়াঙ্গনেরই কেউ। ১৯৩১ সালে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ঘোষণা করে ১৯৩৬ অলিম্পিক গেমস হবে বার্লিনে। এর ঠিক দুই বছর পর ক্ষমতায় আসে হিটলারের নাজি পার্টি। অলিম্পিক গেমসের মতো একটি মহান আয়োজনকে নাজি পার্টি প্রোপাগান্ডা চালানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে, এই ভয় থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বার্লিন অলিম্পিক বয়কটের আন্দোলন শুরু হয়। তবে এত কিছুর পরও ১৯৩৬ অলিম্পিকে আগের বারের তুলনায় দলের সংখ্যা বেড়ে যায় (৩৭-৪৯) ১২টি। অবশ্য অলিম্পিকে নাজি স্যালুট চলে সবখানে। ইহুদিদের গেমসে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। ১৯৪০ অলিম্পিক জাপানে হওয়ার কথা থাকলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে তা আর হয়নি। ১৯৭২ সালে অলিম্পিক গেমসের জমজমাট আসর বসে মিউনিখে। জার্মানি তখন দুই খণ্ডে বিভক্ত। অলিম্পিক গেমসের ১১তম দিনের শুরুতেই ফিলিস্তিন মুক্তি আন্দোলনের (পিএলও) আটজনের একটি দল অলিম্পিক ভিলেজের ইসরায়েলি দলের ক্যাম্পে প্রবেশ করে ১১ কোচ ও অ্যাথলেটকে জিম্মি করে রাখে। পরে এদের মধ্য থেকে দুজনকে হত্যা করা হয়। বিশ্বব্যাপী মিডিয়ায় ঘটনাটি প্রচার হচ্ছিল। তবে তখনো চলছিল অলিম্পিকের বিভিন্ন ইভেন্ট। সেদিন বিকালেই আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি গেমসটির সমাপ্তি ঘোষণা করে। ঐতিহাসিক ঠাণ্ডা লড়াই নিয়ে বিশ্ব ছিল চরম সংকটে। যুক্তরাষ্ট্র আর সোভিয়েত ইউনিয়নের দ্বন্দ্ব সারা বিশ্বকেই দ্বিখণ্ডিত করে দিচ্ছিল। ঠাণ্ডা লড়াইয়ের যুগে অলিম্পিক গেমসও সংকটে পড়ে। ১৯৮০ সালে মস্কো অলিম্পিককে বয়কট করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পরের বার ’৮৪ সালে লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিককে বয়কট করে সোভিয়েত ইউনিয়ন। এর ফলে অলিম্পিক আন্দোলনের লক্ষ্য অনেকটাই সুদূরপরাহত মনে হতে থাকে। তবে শিগগিরই এ ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কর্তৃপক্ষ। ’৮৮ সালে সিউলে অনুষ্ঠিত অলিম্পিক গেমসে ১৫৯টি দেশের প্রায় ৯ হাজার অ্যাথলেট অংশ নেন। সর্বশেষ অলিম্পিক গেমসে বড় ধরনের সংকট দেখা দেয় কয়েক মাস আগে। শীতকালীন অলিম্পিকে রাশিয়ার ডোপপাপ প্রকাশ হওয়ার পরই অলিম্পিক আন্দোলন অনেকটা থমকে যায়। বেইজিং ও লন্ডন অলিম্পিকেও ডোপপাপ হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। স্যাম্পল পরীক্ষার পর এর প্রমাণও পাওয়া যায়। সারা বিশ্বেই ডোপপাপের প্রসার দেখে হতবাক হয়ে যান ক্রীড়ামোদীরা। তবে যে কোনো মূল্যে ডোপপাপ রোধ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। এ ছাড়াও অলিম্পিকে নানান দুর্ঘটনা ঘটেছে। মারিয়ন জোন্সের মতো স্বর্ণজয়ী তারকা ডোপপাপ করেছেন। তাকে ফেরত দিতে হয়েছে সোনা। তা ছাড়া জ্যামাইকান বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান স্প্রিন্টার বেন জনসন ১৯৮৮ অলিম্পিকে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ৯.৭৯ সেকেন্ড টাইমিং করে সেরা হয়েও স্বর্ণবঞ্চিত থাকেন। বিজয়ী হওয়ার তিন দিন পরই প্রমাণ হয় বেন জনসনের স্যাম্পলে ডোপ পাওয়া গেছে। অলিম্পিকে শত দুর্ঘটনা ঘটলেও শত বছরের এ আয়োজন বিশ্বে শান্তির বাণীই ছড়িয়েছে সব সময়। দিনে দিনে হয়ে উঠেছে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’।
শিরোনাম
- ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন প্রধান উপদেষ্টার
- চাকসু নির্বাচন ঘিরে উৎসবমুখর চবি, দ্বিতীয় দিনে মনোনয়ন নিলেন ১৪১ প্রার্থী
- দশ বছর ধরে ছাদে পাখিদের আপ্যায়ন
- ‘ওজোনস্তর রক্ষায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য’
- মানিকগঞ্জে এবার ৫৫৩ মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন
- চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
- উজানে বৃষ্টিপাত, সিলেটে বাড়ছে নদীর পানি
- চাঁদপুরে ভোক্তার অভিযানে দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
- প্যারিসে জমকালো আয়োজনে শুরু টেক্সটাইল সোর্সিং মেলা ২০২৫
- খুলনায় চুরি হওয়া নবজাতক ৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার
- কুমিল্লায় চুন কারখানায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ, ৮ শ্রমিক কারাগারে
- পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিক বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করতে হবে: চসিক মেয়র
- নারায়ণগঞ্জে ৬ কারখানার বিদ্যুৎ-গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন
- ইসরায়েল আর কোনো হামলা চালাবে না কাতারে : ট্রাম্প
- এনবিআরে ১৮২ জনের দপ্তর বদল, বাধ্যতামূলক অবসর ও বরখাস্ত ২
- কাতার ও ফিলিস্তিনের প্রতি অবিচল সমর্থন জানাল বাংলাদেশ
- ফের ভেনেজুয়েলার কথিত ‘মাদকবাহী’ নৌযানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
- খুলনায় ১০৩ কেজি হরিণের মাংসসহ একজন আটক
- তিন ট্রিলিয়ন ডলারের ক্লাবে অ্যালফাবেট
- একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (১৬ সেপ্টেম্বর)
অলিম্পিকে যত দুর্ঘটনা
রাশেদুর রহমান
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর