২১ মে, ২০২৩ ১০:৪৮

জাজিরার সবজি রপ্তানির মধ্য দিয়ে অর্থনীতিতে লেগেছে নতুন হাওয়া

অনলাইন ডেস্ক

জাজিরার সবজি রপ্তানির মধ্য দিয়ে অর্থনীতিতে লেগেছে নতুন হাওয়া

ফাইল ছবি

শরীয়তপুর জেলার কৃষি রাজধানী খ্যাত জাজিরা উপজেলার উৎপাদিত সবজি রপ্তানির মধ্য দিয়ে এখানকার কৃষি অর্থনীতিতে লেগেছে নতুন হাওয়া। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডে ২০০ কেজি সবজি রপ্তানি দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও তা এখন বিস্তৃত হয়েছে ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। 

গত এপ্রিল পর্যন্ত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এখন ৬ টনে। ইতিমধ্যে জাজিরার কৃষকরা ২০ হাজার ইউরো মূল্যের সবজি রপ্তানি করেছেন। কৃষির এ অগ্রযাত্রা জাজিরার কৃষকরা দেখছেন সোনালী দিনের স্বপ্ন। কৃষকরাও রপ্তানিকারকদের চাহিদা অনুযায়ী কৃষি বিভাগের উত্তম কৃষি চর্চা পদ্ধতি অবলম্বন করে ক্রমাগত বাড়িয়ে চলেছেন নিরাপদ সবজি আবাদ। 

দশ একর জমির সবজি দিয়ে রপ্তানির যাত্রা শুরু হলেও এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে ২০০ একরে দাঁড়িয়েছে। শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের যৌথ প্রয়াসে শুরু হওয়া জাজিরার সবজি রপ্তানি প্রক্রিয়া শরীয়তপুরের কৃষি অর্থনীতিকে অনেকদূর এগিয়ে নেবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।

জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জামাল হোসেন বলেন, শরীয়তপুরের ৬ উপজেলার মধ্যে জাজিরা উপজেলার কৃষিজমি পলিযুক্ত হওয়ায় এখানে উৎকৃষ্ট সবজিসহ সকল ধরনের কৃষি ফসল তুলনামূলকভাবে ফলন বেশি হয়। এ কারণে জাজিরাকে অনেকেই শরীয়তপুরের কৃষি রাজধানী বলেও আখ্যায়িত করে থাকেন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে থেকেই জাজিরার কৃষক ও কৃষি বিভাগ বিশেষ করে সবজিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে থাকে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার ৬ মাসের মাথায় গত ৩ জানুয়ারি জাজিরার সবজি রপ্তানির যাত্রা শুরু হয়। 

তিনি আরও জানান, আমরা কৃষকদেরকে মাঠ পর্যায়ে উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে রপ্তানি মানের সবজি উৎপাদনে মাঠ পর্যায়ে কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি। যারই ফলশ্রুতিতে দশ একর দিয়ে শুরু হওয়া যাত্রা এখন ২০০ একরে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা আশা করছি সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে আগামীতে জাজিরার সবজি রপ্তানির মধ্যদিয়ে কৃষি অর্থনীতির যে নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে তা জাতীয় অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখবে।

জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের মুলাই বেপারীকান্দি গ্রামের কৃষক বেলায়েত হোসেন বলেন, এবছর ৩ জানুয়ারি ২০টি লাউ রপ্তানির মধ্যদিয়ে আমার শুরু। তখন ১০ শতক জমিতে লাউ আবাদ করেছিলাম। রপ্তানিকারকদের চাহিদা অনুযায়ী আমি এখন কৃষি বিভাগের তদারকি অনুযায়ী উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে দুই বিঘা জমিতে লাউ চাষ করছি। আশা করছি আমাদের স্থানীয় বাজার থেকে দ্বিগুণেরও বেশি লাভবান হতে পারব।

জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান জানান, জাজিরার সম্ভাবনাময় সবজি ইউরোপের বাজারে রপ্তানির জন্য আমরা কৃষি বিভাগের সাথে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করি ২০২২ সালে। তারই ধারাবাহিকতায় কৃষকদের স্বপ্ন যাত্রা ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডে রপ্তানির মধ্যদিয়ে শুরু হয়ে তা এখন পুরো ইউরোপের বাজারে যাচ্ছে। এ রপ্তানি যাত্রা এখন ইউরোপের বাজার ছাড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যেও যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, ২০০ কেজি সবজি রপ্তানির যাত্রা এখন ৬ টনে এসে দাঁড়িয়েছে। কৃষকের সবজি রপ্তানি প্রক্রিয়াকে গতিশীল করতে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন সব সময়ই তাদের পাশে থাকবে। আমরা বিশ্বাস করি জাজিরার সবজি রপ্তানি প্রক্রিয়া শুরুর মধ্যদিয়ে আমাদের আমাদের এ অগ্রযাত্রা বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
 


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর