১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৫:২৫

বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের অপসারণ দাবি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের অপসারণ দাবি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক  ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনকে ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা দিয়ে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তার অপসারণের দাবি জানিয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’। একই সাথে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘অন্যায়ভাবে’ বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী ফাতেমা তুজ জিনিয়াসহ আরও ৩৪ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়ার আহ্বন জানিয়েছে তারা। 

সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক প্রতিবাদী সমাবেশ ও মানববন্ধনে এই দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। এ সময় মুক্তিযুদ্ধের মঞ্চের আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি রায়হানুল ইসলাম আবির, সাধারণ সম্পাদক মাহদী আল মুহতাসিম নিবিড়। 

মানববন্ধনে অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন বলেন, খোন্দকার নাসির উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বৈরশাসন কায়েম করেছেন। শুধু ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রধান কাজ কী’ এই লাইন লিখে মত প্রকাশের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত কয়েক মাসে তার বিরুদ্ধে পত্রপত্রিকায় বিস্তর লেখালেখি করা হয়েছে। কিন্তু আমি জানি না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ঘুমিয়ে আছে কিনা।  

অধ্যাপক জামাল উদ্দীন বলেন, ছাত্রজীবনে খোন্দকার নাসির উদ্দিন স্বাধীনতাবিরোধী রাজনীতি করতেন। যুক্তরাজ্যে থাকার সময় ছাত্রদলের সংগঠক ছিলেন। তিনি উচ্চস্বরে বলেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেওয়া হবে না। এ রকম ভিসিকে আমরা জাতির জনকের জন্মভূমিতে থাকতে দেবো না। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে অপসারণ করতে হবে। একই সাথে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দিতে হবে। দাবি মানা না হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেন তিনি। 

রায়হানুল ইসলাম আবির বলেন, প্রধানমন্ত্রী মত প্রকাশে বাধা না দেওয়ার কথা বলেছেন, সেখান একজন উপাচার্য মত প্রকাশের কারণে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করছেন। এর আগেও ক্লাসরুম অপরিষ্কারের ব্যাপারে লেখার কারণে আরও কয়েকজনকে বহিষ্কার করা হয়েছিলো। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এসেছে, ভিসি সেখানকার ছাত্রসংগঠনগুলোকে ব্যবহার করে একটি গুণ্ডাবাহিনী গড়ে তুলেছেন। সচেতন শিক্ষার্থীদের কণ্ঠরোধ করার জন্য তাদের লেলিয়ে দেওয়া হয়। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আলোকিত বাংলাদেশে’র প্রতিনিধি শাম্স জেবিনের উপর রাশা ও সাজিদ নামে দুই গুন্ডা হামলা চালিয়েছে। আমরা অবিলম্বে এ হামলার বিচার দাবি করছি। তিনি ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াসহ সকল বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় দেশের সব সাংবাদিক সংগঠনকে নিয়ে আন্দোলনে যাওয়ারও ঘোষণা দেন এই সাংবাদিক নেতা।   

সমালোচনা করায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে মাহদী আল মুহতাসিম নিবিড় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীন মত প্রকাশের জায়গা। আমাদের দেশের সংবিধানেও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃত দেওয়া হয়েছে। সবার মত এক হবে না-এটাই স্বাভাবিক; এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু মত প্রকাশের কারণে একজন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। যে প্রশাসন এই কাজ করেছে তাদের জবাবদিহি করতে হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ঢাবি শাখার সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক আল মামুন প্রমুখ।    

বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর