সরকারি সিদ্ধান্ত বহাল রাখতে নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামী ১৩ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষার্থীদের হলে ওঠানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করে আগামী ১৭ মে থেকেই হল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। এই সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত কোনো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না।
আজ মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে সিদ্ধান্তগুলোর বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
উপাচার্য বলেন, ১৩ মার্চকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের হলে ওঠাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আয়োজন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা ১৭ মে থেকে শিক্ষার্থীদের হলে উঠানোর উদ্যোগ নিয়েছি সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ভ্যাক্সিনের আওতায় আনার জন্য।
তিনি বলেন, এমন অবস্থায় কতদিনের মধ্যে প্রথম ডোজের টিকা দিতে হবে, সভায় বিশেষজ্ঞ সদস্যরা সে ব্যাপারে মতামত দিয়েছেন। তারা বলেছেন, প্রথম ডোজের চার সপ্তাহ পর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়, তখন শিক্ষার্থীরা উঠতে পারে। সে কারণে আমরা সরকারকে আহ্বান জানিয়েছি যাতে ১৭ এপ্রিলের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলকে ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় আনা হয়। তাহলে ১৭ মে শিক্ষার্থীদের হলে উঠানো যাবে। এখন হল খোলার জন্য টিকা নেওয়া পূর্বশর্ত।
পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়ে তিনি বলেন, ১৩ মার্চকে সামনে রেখে যেসব বড় বড় পরীক্ষার রুটিন করা হয়েছিলো, সেগুলো স্থগিত করা হলো। কারণ, সেগুলো তো শিক্ষার্থীদের হলে থাকার সাথে সংশ্লিষ্ট। কেন্দ্রীয়ভাবে বড় কোনো পরীক্ষা এই মুহূর্তে নেবো না। এ বিষয়গুলো এখন একেবারেই বিভাগীয় পর্যায়ে সীমিত থাকবে।
সাত কলেজের পরীক্ষার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, কলেজগুলোর সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সন্ধ্যায় বৈঠক করবেন। এরপর সেগুলো নিয়ে জানা যাবে। তবে ১৭ মে এর আগে বড় সমাগম করে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
তিনি বলেন, যখন কোনো অতিমারী হয়, তখন এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া জাতির জন্য হুমকি। সেটি স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। মূলত ‘অতিমারীর নিয়ম-কানুন’ সেটা সমর্থন করে না। এটার একটা প্রটোকল আছে। বিচ্ছিন্নভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া সেই প্রটোকল সমর্থন করে না।
ভর্তি পরীক্ষা তারিখ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, এটা অন্য তারিখগুলোর সাথে সাংঘর্ষিক নয়।
এদিকে, মার্চের শুরু থেকে হল খোলার দাবিতে গতকাল উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেয় শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। আজকের সিদ্ধান্তে নাখোশ তারা। আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র জুনাইদ হুসেইন খান বলেন, আমাদের ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম চলছে। এর মধ্যে আমরা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছি। আল্টিমেটাম শেষে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দেবো।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ