৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ২৩:১৯

সেই অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

সেই অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ

ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন।

ঢাকার সাভারে গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মদ বহনে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় নিহত আব্দুল কুদ্দুস (৩০) ও এক অন্তঃসত্ত্বা নারী আহতের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে মুরাদ চত্বর থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এসময় ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করাসহ ৩ দফা দাবি জানান বিক্ষুব্ধরা।

অন্য দাবিগুলো হলো- দূর্ঘটনায় আহতের চিকিৎসার ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহন করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যালের সকল অব্যবস্থাপনা দূর করে সুষ্ঠু ধারাবাহিকতায় ফিরিয়ে আনতে হবে। দাবিগুলো বাস্তবায়িত না হলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলার হুঁশিয়ারি দেন নেতারা।

বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি শৌমিক বাগচি দাবিগুলো মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অ্যাম্বুলেন্স যেখানে মানুষের প্রাণ বাঁচায় সেই অ্যাম্বুলেন্সে আজ মদ বহনে ব্যবহার হচ্ছে। সেই অ্যাম্বুলেন্স একটি প্রাণ কেড়ে নিলো। প্রশাসন এখন পর্যন্ত এর কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তারা শুধু আনন্দ উল্লাসে ব্যস্ত। মাদক নিয়ে তারা মাতাল হয়ে উল্লাস করে, এটা কতটুকু অমানবিক তারা এটা দেখেনা। তারা তাদের মানবতার জায়গাটা হারিয়ে ফেলেছে। আমরা সুনির্দিষ্ট দাবি জানাচ্ছি, আহতের চিকিৎসার সমস্ত ব্যয়ভার বহন করতে হবে। আমরা চাই, তারা যেন তাদের অন্যায়-অনিয়মের প্রায়শ্চিত্ত করে ন্যায়ের পথে ফিরে আসে।

জাবি শাখা ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রয় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাম্বুলেন্স দ্বারা যেসব ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে এগুলোর তীব্র নিন্দা জানাই। সেইদিন তারা মদ পান করে উল্লাস করেছে। এরকম প্রশাসন আমরা চাইনা, যাদের হাতে নিহতের রক্ত-মাংস লেগে আছে। কতটুক হীন হলে তারা ড্রাইভারকে পানিতে চুবিয়ে রাখে। এরকম কাজের ধিক্কার জানাই। এর দায়িত্ব প্রশাসনকে নিতে হবে। আহত ও নিহতদের সারাজীবনের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এটা ক্যাম্পাসের দায়িত্ব না বলা হলেও এটা তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত।

এসময় সাভার হাইওয়ে থানা পুলিশ তদন্তে আসলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অসহযোগিতা করেছে বলে অভিযোগ করেন ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, প্রশাসন সমন্বয়হীনতার পরিচয় দিয়েছে। ছাত্রলীগ অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করে মাদক আনে। এক শিক্ষক ওই অ্যাম্বুলেন্সে করে কেন ঢাকায় যায় আমরা জানতে চাই৷ এর তদন্ত করতে হবে। সাভার থানা পুলিশ তদন্তে আসলে প্রশাসন কেন অসহযোগিতা করে সেটার জবাবদিহিতা চাই।

জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) এলাকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মদবহনকারী এক অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় এক অটোরিকশাচালক নিহত হন। এ ঘটনায় এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ আরও চার যাত্রী গুরুতর আহত হয়। এ সময় অ্যাম্বুলেন্সে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক রিফাত চৌধুরী ও উপ-অর্থ সম্পাদক আহসান হাবিব ইমন অবস্থান করছিলেন। 

এদিকে, ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তবে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ-উল হাসান বলেন, 'এটা ধামাচাপা দেওয়ার কিছু নেই। পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর