বসন্তের অগ্নিঝড়া দিন। সর্বত্র হলুদের জয়জয়কার। ফাগুনের আগুনের ছোঁয়া সকলের মনে-প্রাণে। উদ্বেলিত আবেগে প্রকৃতিকে বরণ করছে সবাই। ফুল ফুটুক আর না ফুটুক, বসন্তের সঙ্গে আলিঙ্গন তারা করবেই। তাই বসন্তের অগ্নিঝড়া রঙে সবাই ফাগুনকে আবাহন করেছে। এ আবাহন ছড়িয়ে পড়েছে নগর থেকে গ্রাম পর্যন্ত।
চট্টগ্রামে বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল বসন্ত। বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় বসন্ত উৎসব। চট্টগ্রামের প্রধান সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র ডিসি হিল প্রাঙ্গনে আবৃত্তি সংগঠন বোধন আবৃত্তি পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় দিনব্যাপী বসন্ত উৎসব। সোমবার সকাল থেকে রাত অবধি চলে অনুষ্ঠান।
অন্যদিকে, শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গনে প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় বসন্ত উৎসব। উৎসবটি উদ্বোধন করেন দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. সামশুল আরেফিন। প্রমার সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ পালের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উৎসবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার মোসলেম উদ্দিন শিকদার, কবি জিন্নাহ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সংগঠক হাবিব বিপ্লব, পলি হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক শহীদুল্লাহ আনসারী।
উদ্বোধক এম এ মালেক বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য প্রাণ বিসর্জন দেয়া বীর শহীদদের আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। যে যুবসমাজ ভাষার জন্য জীবন দিয়েছেন, তারা রক্ত না দিলে আজ আমরা এই বসন্ত উৎসব পালন করতে পারতাম না। আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারতাম না। আমাদের উর্দু ভাষায় কথা বলতে হত।
এদিকে, সকালে আবৃত্তিকার জাবেদ হোসেন ও শারমিন মৃত্তিকার উপস্থাপনায় ডিসি হিলে শুরু হয় ১২তম বসন্ত উৎসব। রাগ ভৈরবীর পর একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিমুল নন্দী। তারপর অভ্যূদয় সংগীত অঙ্গনের দলীয় পরিবেশনা। আরো ছিল ওডিসী অ্যান্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টার, ঘুঙুর নৃত্যকলা একাডেমি, দলীয় নৃত্য, শ্রয়সী রায়ের কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত, গীতধ্বনির দলীয় সংগীত, ফাহমিদা রহমানের নজরুল সংগীত, শান্তনু বিশ্বাসের কণ্ঠে আধুনিক গান, গীরিজা রাজবরের লোক সংগীত, মো. মোস্তফা কামালের হারানো দিনের গান, অমিত সেনগুপ্তের বাউল গান, রঞ্জন চৌধুরীর আধুনিক গান, গীতা আচার্যের আঞ্চলিক গান এবং সুনীল ও তার দলের ঢোলবাদন। বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা পর্ব। অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক মনোজ সেনগুপ্ত, দৈনিক আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহেদ মালেক, জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন।