৯ মে, ২০২১ ১৭:২১

নারায়ণগঞ্জে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ৪ সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:

নারায়ণগঞ্জে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ৪ সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার

নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা হতে বহুরূপী সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ৪ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১, সিপিএসসি এর একটি টিম। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৮ মে শনিবার এ অভিযান পরিচালিত হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মোঃ এসহাক আলী (৭০), মোঃ মামুন (৪৯), খন্দকার মোঃ রাজু আহমেদ ওরফে মাসুদ (৫৬) ও মোঃ ফারুক কবির (৩৫)। 

৯ মে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব-১১ জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যবসায়ী শ্রেণীর লোকজনদের টার্গেট করে বিভিন্ন লাভজনক ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে কখনও ঠিকাদারী কাজ পাইয়ে দেওয়া, কখনো ডিলারশীপ পাইয়ে দেওয়া কখনো বা এজেন্ট নিয়োগের কথা বলে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় তাদের ভাড়াকৃত সুসজ্জিত অফিসে ডেকে নিয়ে আসে এবং জামানত/বিনিয়োগ বাবদ প্রতারণামূলকভাবে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে আসছে। প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন কৌশলে এই সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের সদস্যরা তাদের পাতানো প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সহজ সরল ব্যবসায়ীদের নিঃস্ব ও সর্বস্বান্ত করে আসছে। 

যার মধ্যে কুমিল্লার লাকসামের বাসিন্দা শিক্ষক মোঃ আবুল কালাম আজাদকে কুমিল্লা জেলার লাকসাম, লালমাই ও মনোহরগঞ্জ থানা এলাকায় কয়েক শত টিউবওয়েল স্থাপনের ঠিকাদারী কাজ পাইয়ে দেবার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের সুসজ্জিত অফিসে ডেকে নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ২৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি এলাকায় কাঠ ব্যবসায়ী মোঃ আল আমিনকে রিয়েল এস্টেট কোম্পানীর মালিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাদের নির্মাণাধীন কয়েকটি বহুতল ভবনে প্রায় ২২০টি কাঠের দরজা ও দরজার ফ্রেম লাগানোর লোভনীয় প্রলোভন দিয়ে ১১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকার কীটনাশক ঔষধ, বিভিন্ন প্রকার বীজ ও সার ব্যবসায়ী মোঃ আবু তাহেরকে প্রলোভন দিয়ে প্রায় ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। 

উল্লিখিত ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের প্রতিটি অভিযোগ অত্যধিক গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে র‌্যাব-১১ এর একটি চৌকস গোয়েন্দা দল দীর্ঘ ও নিবিড় অনুসন্ধান করে এই বহুরূপী সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটিকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। অতঃপর র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল কর্তৃক অভিযান চালিয়ে গত ৮ মে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন মাসদাইর এলাকা হতে উক্ত বহুরূপী সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের অন্যতম সক্রিয় সদস্য খন্দকার মোঃ রাজু আহমেদ ওরফে মাসুদকে (৫৬) গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক অভিযান চালিয়ে উক্ত প্রতারক চক্রের মূলহোতা মোঃ এসহাক আলী (৭০) ও তার সহযোগী মোঃ ফারুক কবির (৩৫)’দের নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন দেওভোগ লিচুবাগ এলাকায় আসামি মোঃ এসহাক আলী’র বাসা হতে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া বহুরূপী সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটির মূলহোতা মোঃ এসহাক আলী’র দেওয়া স্বীকারোক্তি ও তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ৯ মে নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর মডেল থানাধীন গলাচিপা এলাকা হতে উক্ত প্রতারকচক্রের অন্যতম সক্রিয় সদস্য মোঃ মামুনকে (৪৯) গ্রেফতার করা হয়।

উপরোক্ত মাত্র ৩ জন ভুক্তভোগীর অভিযোগ র‌্যাবের কাছে আসলেও প্রকৃতপক্ষে এই প্রতারক চক্রের প্রতারণায় প্রায় শত শত জন ব্যবসায়ী নিঃস্ব ও সর্বস্বান্ত হয়েছে বলে গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। গত ১৫ বছর যাবৎ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দেয়ার জন্য এই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটি এতটাই সূক্ষ্ম কৌশলে তাদের প্রতারণামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল যে ইতঃপূর্বে তারা কখনও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়নি। উক্ত প্রতারক চক্রের সদস্যরা প্রত্যেকেই প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর