ঈদ উপলক্ষে ঢাকা-বরিশাল নৌ রুটে যাত্রী ভাড়া বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে বর্ধিত ভাড়ায় ঈদের আগাম কেবিন টিকিট বিক্রি করছে লঞ্চ কোম্পানিগুলো। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে যাত্রীদের মাঝে। কিন্তু ঝামেলা করলে টিকিট পাওয়া যাবে না, এমন আশঙ্কায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদও করছে না কেউ।
তবে লঞ্চ মালিকদের দাবি, সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় ঈদের আগাম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিযোগিতার কারণে বছরের অন্য সময়ে কম ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করেন তারা।
ঈদের সময়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ বাড়ি ফেরেন নৌ পথে। তুলনামূলক নিরাপদ ও ঝক্কি-ঝামেলাবিহীন হওয়ায় বাড়ি ফিরতে নৌ পথই প্রথম পছন্দ ঘরমুখো মানুষের।
এই সুযোগে লঞ্চ কোম্পানিগুলো বাড়িয়ে দিয়েছে টিকিটের দাম। কয়েকটি লঞ্চ কোম্পানি প্রথম শ্রেণির যাত্রীদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ডাবল কেবিনের ভাড়া আড়াই হাজার থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করেছে। ১ হাজার ৪০০ টাকার সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া আদায় করা হচ্ছে দেড় হাজার টাকা। এসব লঞ্চে নন এসি ডাবল কেবিনের ভাড়া ২০০ টাকা বাড়িয়ে ২ হাজার ৬০০ টাকা করা হয়েছে। ১ হাজার ৩০০ টাকার নন এসি ডাবল কেবিনে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা। দ্বিতীয় শ্রেণির যাত্রীদের সোফার মূল্যও ১০০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে।
উচ্চ মর্যদাশীল যাত্রীদের ভিআইপি কেবিনের মূল্যও আনুপাতিকহারে বাড়িয়েছে লঞ্চ মালিকরা। নাম ও মান ভেদে প্রতিটি ভিআইপি কেবিনের ভাড়া ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ঈদের সময় যাত্রীদের চাপ থাকায় আগাম টিকিট পাওয়াই চ্যালেঞ্জ হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন টিকিট প্রত্যাশী পলাশ আহসান। এ কারণে ভাড়া নিয়ে উচ্চবাচ্য হলেও টিটিক না পাওয়ার আশঙ্কায় প্রতিবাদ করেন না কেউ।
বছরের অন্য সময়ে ডেক টিকিট (ঢালাও ফ্লোর) ২০০ থেকে ৩০০ টাকা হলেও ঈদে তারা সাড়ে ৩০০ টাকা করে আদায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে ঈদ মৌসুমে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে নানা যুক্তি দেখিয়েছেন লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা।
সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বরিশালের মেসার্স সালমা শিপিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনজুরুল আহসান ফেরদৌস বলেন, প্রতিযোগিতার কারণে বছরের অন্য সময়ে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার কম ভাড়া আদায় করেন তারা। ঈদের সময় ডাবল ট্রিপের কারণে বরিশালে যাত্রী নামিয়ে খালী লঞ্চ চালিয়ে ঢাকায় গিয়ে যাত্রী আনতে হয়। এতে অনেক জ্বালানি খরচ হয়। এ কারণে ঈদের সময় সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় করেন তারা। কোনোভাবেই সরকার নির্ধারিত মূল্যের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয় না বলে দাবি করেন তিনি।
তবে এ রুটের কিছু লঞ্চ এখনো আগের ভাড়ায় আগাম টিকিট বিক্রি করছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই