বুধবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

সরকারি স্কুলে শিক্ষক সংকট কোচিংই ভরসা শিক্ষার্থীর

নামিদামি প্রতিষ্ঠানের এহেন অবস্থায় হতাশ অভিভাবকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে শিক্ষক সংকটে পড়েছে সরকারি স্কুলগুলো। শিক্ষক না থাকায় কয়েকটি বিষয়ে ঠিকমতো ক্লাসই হছে না। এক বিষয়ের শিক্ষককে দিয়ে অন্য বিষয়ের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হলেও সরকারি কোনো উদ্যোগ নেই। ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে রাজশাহীর সরকারি ল্যাবরেটরি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে শুভ ইসলাম। অন্য স্কুলের চেয়ে এই স্কুলের শিক্ষার মান ভালো— এমনটা মনে করেই স্কুলটিতে ভর্তি হয় সে। কিন্তু ক্লাস শুরু হতেই ধারণা পাল্টে যায় তার। শুভ বলে, ‘ভর্তি পরীক্ষার আগে মনে করেছিলাম স্কুলে ক্লাস করেই পরীক্ষার সিলেবাস সম্পন্ন হয়ে যাবে। কিন্তু সেই ভরসা পাচ্ছি না। বিজ্ঞানের শিক্ষকের খুব অভাব এখানে। অন্য বিষয়ের শিক্ষকরা বিজ্ঞান পড়ান। এজন্য পরীক্ষার সিলেবাস শেষ করার জন্য এখন দুই বেলা কোচিংয়ে পড়ি।’

কথা বলে জানা যায়, শুধু শুভ নয়, শিক্ষক সংকটে তার মতো হাজারো শিক্ষার্থীর একমাত্র ভরসা হয়ে উঠছে কোচিং সেন্টার। পরীক্ষার পাঠ্যসূচি শেষ করতে রাজশাহীর ছয়টি সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের এখন সকাল-বিকাল ছুটতে হচ্ছে কোচিং সেন্টারে। এতে শিক্ষানগরীতে দিনে দিনে রমরমা হয়ে উঠছে কোচিং ব্যবসা। সরকারি স্কুল ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষকের অভাবে ক্লাস না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের অনেকে মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছে, কেউ খেলাধুলায় ব্যস্ত। আবার অনেক শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে বসে একা একা পাঠ্যবই পড়ছে। শিক্ষার্থীরা বলেছে, যেসব বিষয়ের শিক্ষক নেই, সেসব বিষয়ের ক্লাসের খবর থাকে না।

রাজশাহীর একটি নামি সরকারি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া বিনতে ফেরদৌস বলে, ‘একজন শিক্ষককেই একসঙ্গে  একাধিক ক্লাস নিতে হয়। স্যার এক ক্লাসে লিখতে দিয়ে    অন্য ক্লাসে গিয়ে পড়ান। এভাবে কোনোমতে ক্লাস চলে। কিন্তু ক্লাস পরীক্ষাগুলো নিতে হিমশিম খান শিক্ষক। এসব পরীক্ষা হয় না বললেই চলে।’ রুবাইয়া জান্নাত নামে নবম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী বলে, ‘অনেক সময় গণিতের শিক্ষককে শারীরিক শিক্ষা ক্লাস নিতে হয়। আবার ধর্মের শিক্ষক এসে বিজ্ঞানের ক্লাস নেন। এতে আমরা বইয়ের কোনো অধ্যায়ে সমস্যায় পড়লেও সমাধান পাই না। বাধ্য হয়ে কোচিংয়ে যাই।’

সর্বশেষ খবর