বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

মামলার কবলে চট্টগ্রাম হাসপাতাল

সমাধান হয়নি ৬৬ বছরেও, ৭৪ একর জমি নিয়ে সংকট

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

মামলার কবলে চট্টগ্রাম হাসপাতাল

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও হাসপাতালসহ ৭৪ দশমিক ২১২১ একর ভূমি সরকারি তিন সংস্থার নামে। ১৯৫৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর চমেক  প্রতিষ্ঠা হলেও এসব ভূমি হাসপাতালের নামে নামজারি করা হয়নি। ছয়টি এল এ (ভূমি অধিগ্রহণ) মামলার কবলে পড়েছে ভূমিগুলো। অন্য সংস্থার নামে থাকা জায়গায় চলছে বৃহত্তর চট্টগ্রামের সেবা কার্যক্রম। ফলে একাডেমিক ও সেবা সংক্রান্ত উন্নয়ন কাজ নানাভাবে অন্তরায় হয়ে আছে বলে জানা যায়।     

জানা যায়, চমেক হাসপাতালের এসব ভূমি নিয়ে চলমান আছে ছয়টি মামলা। এর মধ্যে ১৯৫২-৫৩ সালে হয় একটি মামলা (নং ২৯), ১৯৫৮-৫৯ সালে হয় একটি (মামলা নং ৪), ১৯৫০-৫১ সালে হয় একটি (মামলা নং ৩৫), ১৯৫৬-৫৭ সালে হয় একটি (মামলা নং ৭৩), ১৯৬৪-৭০ সালে হয় একটি (মামলা নং ১৬) এবং ১৯৭৯-৮০ সালে হয় একটি (মামলা নং ১৬)।  

চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে চমেকের ছিল ৮০ দশমিক ৮৭৬ একর ভূমি। পরে বিএস জরিপকালে হয় ৭৪ দশমিক ২১২১ একর। চমেক হাসপাতালসহ আশপাশের এ সব ভূমি তখন ভুলবশত নামজারি হয়ে যায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের নগর এবং মুরাদপুর মৌজা, জেলা প্রশাসক এবং শত্রু সম্পত্তির নামে। এর মধ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের নগর মৌজার নামে ২৭ দশমিক ৫০১৭ একর, মুরাদপুর মৌজার নামে ২৪ দশমিক ৯১৪৮ একর, গণপূর্ত বিভাগের নগর মৌজার নামে ১১ দশমিক ৯২৩৭ একর, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের ১ নং খতিয়ানভুক্ত নগর মৌজার নামে ৯ দশমিক ৮১২৫ একর এবং শত্রু সম্পত্তি হিসেবে শূন্য দশমিক ৫৯৪ একর ভূমি নামজারি হয়ে যায়। এর মধ্যে শুধুমাত্র চমেক এবং চমেক হাসপাতালের জায়গা হলো ১১ দশমিক ৯২৩৭ একর। চমেক হাসপাতালের উপ পরিচালক  ডা. আখতারুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালের জায়গাগুলো আমাদের দখলে আছে এবং খাজনা প্রদান করে আসছি। কিন্তু ওই সময় ভুলবশত জায়গাগুলো সরকারি  বিভিন্ন সংস্থার নামে নামজারি হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের নামে না থাকায় একাডেমিক এবং সেবা খাতের জন্য ভবন নির্মাণসহ উন্নয়ন কাজে সংশ্লিষ্ট সংস্থা থেকে অনুমোদন নেওয়াটা একটি কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এখন এসব ভূমি হাসপাতালের নামে নামজারি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’  জানা যায়, ১৮ নভেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে ভূমিগুলো হাসপাতালের নামে নামজারি করার জন্য একটি চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, ‘স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ  মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত হয় , হাসপাতালের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গ্রহণের জন্য এ জায়গাগুলো চমেক ও চমেক হাসপাতাল তথা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে নামজারি/রেকর্ড সংশোধন করা প্রয়োজন। এমতাবস্থায় গণপূর্ত অধিদফতর যদি উক্ত জমি চমেক ও চমেক হাসপাতালের নামে রেজিস্ট্রি দলিলে হস্তান্তরে সম্মত হয়, তাহলে সহজেই বাস্তবায়ন করা হবে এবং বিরোধটি মীমাংসা হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর