বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

উদ্ভাবন ও গবেষণায় ১৩৭তম বাংলাদেশ

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন উদ্ভাবনের প্যাটেন্টে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৭তম। এই ক্যাটাগরিতে প্রতিবেশী দেশ ভারতের অবস্থান ৯২ এবং শ্রীলঙ্কার অবস্থান ৮৫তম। বাংলাদেশ উচ্চ শিক্ষায় গবেষণা এবং নতুন উদ্ভাবনে প্রতিবেশী দেশের তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তনে চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়ার সুপারিশ করেছে বিশ্বব্যাংক। গতকাল রাজধানীর হোটেল লা মেরেডিয়ানে বিশ্বব্যাংকের ‘ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট প্রতিবেদন ২০১৮ তে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ এবং লিগো ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সারাহ বুচি। বিশ্বব্যাংকের ‘লার্নিং টু রিয়ালাইজ এডুকেশনস প্রমিজ-২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয় বাংলাদেশে শিক্ষার গুণগতমানে ঘাটতি রয়েছে। প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের যা শেখানো হচ্ছে তা পর্যাপ্ত নয়। ৫ম শ্রেণিতে ১১ বছর পর্যন্ত যে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে তা মূলত সাড়ে ছয় বছরে পাওয়ার কথা। ফলে অন্যান্য দেশের তুলনায় সাড়ে চার বছর পিছিয়ে থাকছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। তবে প্রাথমিক শিক্ষায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি এবং জেন্ডার সমতা সাফল্যজনক। এ ছাড়া শিক্ষকদের গুণগত মানে ঘাটতি রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। বিশেষ করে অঙ্ক এবং বিজ্ঞানে শিশুদের দুর্বলতার কারণ হিসেবে শিক্ষকদের অদক্ষতার বিষয় তুলে ধরা হয়। উচ্চশিক্ষায় গবেষণা এবং উদ্ভাবনে দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে বলে উল্লেখ করা হয়। শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের দক্ষতার উন্নয়ন ঘটানো, উচ্চ শিক্ষায় গবেষণায় প্রণোদনা দেওয়া, বেসরকারি পর্যায়ের শিক্ষার বিষয়ে উৎসাহ প্রদানের পাশাপাশি তদারকি করার বিষয়ে বলা হয়। এ ছাড়া বেকারত্ব সমস্যা সমাধানে কারিগরি শিক্ষায় জোর দেওয়ার বিষয়ে বলা হয় প্রতিবেদনে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর রবার্ট জে সাম বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় সব শিক্ষার্থী স্কুলে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা বেশি। কিন্তু ক্লাসে যা শেখানো হচ্ছে তা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক পিছিয়ে থাকছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে সরকারি ব্যয় অনেক কম। এই বরাদ্দ দিয়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা কঠিন বলে মন্তব্য করেন তিনি।’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশে শতভাগ স্কুলে ভর্তি শুরু হয়েছে। বর্তমানে আমরা মানসম্মত শিক্ষার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের জন্য সরকারি বিদ্যালয়গুলো আকর্ষণীয় করে তোলা হচ্ছে। মেধাবীরা অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত ৯ বছর ধরে সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনামূল্যে বই বিতরণ করছে। গত এক বছরে ২ লাখ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিগত আট বছরে শিক্ষা খাতে ৫ গুণ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে পর্যায়ক্রমে শিক্ষা খাতে বাজেটে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে।’ অনুষ্ঠানে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হালসে রজার্স এবং এডুকেশন গ্লোবাল প্র্যাকটিস ম্যানেজার ক্রিস্টিয়ান অ্যাইডো।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর