বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বিশেষ তহবিলের খবরে চাঙ্গা পুঁজিবাজার

সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা আসার সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

তারল্য সংকট কাটানো, তফসিলি ব্যাংক ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের পুঁজিবাজারে অংশগ্রহণ বাড়াতে বিশেষ ফান্ড গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিনিয়োগ সীমার (এক্সপোজার) বাইরে প্রতিটি তফসিলি ব্যাংক ২০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন করতে পারবে। যাতে তারা নিজেরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিতে পারবে। প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকার বড় অংকের তহবিল আসার খবরে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে পুঁজিবাজার। নিষ্ক্রিয় থাকা বিনিয়োগকারীরা আড়ামোড়া ভেঙে শেয়ার কিনতে উদ্যোগী হয়েছেন। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৮৩ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ফান্ডের দাম বেড়েছে। আর এক দিনে মূলধন বেড়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। গত সোমবার পুঁজিবাজার ও মুদ্রাবাজারের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপনকারী তফসিলি ব্যাংকগুলোকে বিশেষ ফান্ড গঠনের অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতিটি ব্যাংক ২০০ কোটি টাকা করে বিশেষ ফান্ড গঠন করতে পারবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার বাইরে এই ফান্ড বিনিয়োগ করতে পারবে। নিজস্ব তহবিল কিংবা ট্রেজারি বিল ও বন্ড রেপোর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ফান্ড নিতে পারবে সব তফসিলি ব্যাংক।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারল্য সংকটে ভুগছে পুঁজিবাজার। বিভিন্ন ইস্যুতে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি থেকে শেয়ার বিক্রির চাপে পুঁজিবাজারে ক্রমাগত পতন ঘটছে। এই পতনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দাম কমে লোকসানে ফা- বা মূলধন আটকে যায়। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কে লোকসান করেও বাজারে শেয়ার ছেড়ে দেন। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি না করায় তারল্য সংকটে পড়ে। পুঁজিবাজার  উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ ফা- বাজার গতিশীলতায় বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ তহবিল গঠনের পর গতকাল পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হলে শেয়ার কেনার চাপে মূল্যসূচকে বড় উত্থান ঘটে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মূল্যসূচক শুরুতেই প্রায় ১০০ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। পরবর্তীতে মূল্যসূচকে বড় উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫০৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা আর দিনশেষে সূচক বেড়েছে ৮৫ পয়েন্ট। লেনদেন হওয়া ৩৫৬ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৯৬টির, দাম কমেছে ৪০টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২০ কোম্পানির শেয়ার দাম। ডিএসই তথ্য বলছে, বিনিয়োগকারীর সক্রিয়তা বাড়ায় শেয়ার হাতবদলের সংখ্যা বেড়েছে। গতকাল ডিএসইতে ২০ কোটি ৩৪ লাখ ১৮ হাজার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী নিষ্ক্রিয় থাকায় শেয়ার হাতবদল কমছিল।

পুঁজিবাজারের তথ্যানুযায়ী, শেয়ার কেনা বাড়ায় বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। আর শেয়ার দাম বাড়ায় বাজার মূলধনও বৃদ্ধি পেয়েছে।

এক দিনেই ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। মূলত, বাজারের বিক্রয়যোগ্য শেয়ারের দাম বাড়লে মূলধন বাড়ে আর শেয়ার দাম কমলে মূলধন হ্রাস পায়। সোমবার ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ৩৫ হাজার ৭৪৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। গতকাল এই মূলধন বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪১ হাজার ৩৪৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এক দিনে বাজার মূলধন বেড়েছে পাঁচ হাজার ৬০৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর