রবিবার, ৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

সিলেটে করোনার ডাবল সেঞ্চুরি

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে করোনার ডাবল সেঞ্চুরি

সময় যত গড়াচ্ছে, সিলেটে মহামারী করোনাভাইরাস আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যে সিলেটে করোনার ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ হয়ে গেছে। এখন প্রতিদিন হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের আতঙ্ক। তবে তারপরও এক শ্রেণির মানুষ বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে বাইরে বেরোচ্ছেন, জটলা বেঁধে চলছেন। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র জানায়, সিলেট বিভাগের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত করা হয় গত ৫ এপ্রিল। এরপর ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সাত। পরের তিন দিন কোনো রোগীর সন্ধান মেলেনি। পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে ২০ এপ্রিল থেকে। ওইদিন হবিগঞ্জ জেলায় একই সঙ্গে ১০ আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হন। ২০ এপ্রিল থেকে ১ মে, এ ১২ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ২২২ জন! এর মধ্যে গত শুক্রবার এক দিনেই ১১৫ জন আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন নমুনা পরীক্ষায়। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিলেট বিভাগে করোনাক্রান্ত রোগী ছিল ১১৪ জন। শুক্রবারের ওই ১১৫ জন মিলিয়ে রোগী এখন ২২৯। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ‘করোনাভাইরাস ছড়ানোর চারটি ধাপ রয়েছে। এর মধ্যে চতুর্থ বা শেষ ধাপ সবচেয়ে ভয়াবহ। সিলেট এখন এ শেষ ধাপে রয়েছে। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে হু হু করে।’ এদিকে, প্রতিদিন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় সিলেটজুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় আর উদ্বেগও বাড়ছে। কখন কে আক্রান্ত হন, এ আতঙ্কের মধ্যেই মানুষের দিনযাপন। সাধারণ মানুষ করোনা ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে আরও জোরদার লকডাউনের দাবিও জানাচ্ছেন। তারা বলছেন, বর্তমানে লকডাউন অনেক শিথিল হয়ে পড়েছে। ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষ ঘর ছেড়ে অযথাই বাইরে ঘোরাঘুরি করে বিপদ ডেকে আনছেন। সিলেট নগরী ঘুরে দেখা গেছে, বন্দরবাজার, কালিঘাট, মহাজনপট্টি প্রভৃতি এলাকায় মানুষের উপচেপড়া ভিড়। এসব এলাকায় পাইকারি দোকানপাট বেশি থাকায় প্রতিদিনই মানুষের ভিড় জমে। এ ছাড়া নগরীর অনেক পাড়া-মহল্লায়ও দোকানপাট খোলার সংখ্যা বাড়ছে। ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন দায়িত্বশীলরা। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ‘এখন ঘর ছেড়ে বাইরে বেরোনো মানে বিপদ ডেকে আনা। সবাইকে লকডাউন মানতে হবে, সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।’ সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার জেদান আল মুসা বলেন, ‘লকডাউন কার্যকর করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। কেউ অযথা বাইরে ঘোরাঘুরি করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর