শুক্রবার, ৩১ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

ডিজিটাল জগতে প্রতারণার ফাঁদ

টার্গেট নারী ও উঠতি বয়সীরাই

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া সাখাওয়াত হোসেন শাওন। এখনো কলেজের গ-ি পেরোতে না পারলেও তার ঘটেছে ‘ভয়াবহ অর্থনৈতিক উত্থান’। চট্টগ্রাম নগরীর অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট, দামি গাড়ি, সঙ্গে কাঁড়ি কাঁড়ি নগদ অর্থ- সব পেয়েছেন মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে। একটি অনলাইনভিত্তিক প্রতারক চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জীবনে আমূল পরিবর্তন হয়েছে এ কিশোরের। চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়ে ‘চক্ষুচড়ক গাছ’ হয়েছে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের। শুধু শাওন নয়, করোনাকালে এমন অসংখ্য প্রতারক চক্র গড়ে উঠেছে চট্টগ্রামে। সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপকমিশনার হামিদুল আলম বলেন, ‘ইদানীং অনলাইনভিত্তিক প্রতারণার অভিযোগ বেশি পাচ্ছি। যার মধ্যে রয়েছে অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে, মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা, লটারি এবং গিফট দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ আসছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।’ জানা যায়, করোনাকালে চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য প্রতারক চক্র। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন অ্যাপসকে প্রতারণার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে। অনেক প্রতারক চক্র আবার গ্রাহকের মোবাইল নম্বর ও ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের তথ্য জোগাড় করে প্রতারণা করছে। এ ছাড়া অনলাইন জুয়ার বিভিন্ন সাইট ব্যবহার করেও প্রতারণা হচ্ছে চট্টগ্রামে। এসব প্রতারণার অন্যতম শিকার হচ্ছে নারী ও উঠতি বয়সের ছেলেমেয়ে। এ প্রতারক চক্রগুলো মূলত তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রতারণার জাল ফেলে। একটি গ্রুপ প্রথমে গ্রাহকের মোবাইল নম্বর কিংবা ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের তথ্য জোগাড় করে। দ্বিতীয় গ্রুপটি কাস্টমার কেয়ারের কর্মকর্তা সেজে ভিকটিমকে ফোন করে। তৃতীয় গ্রুপটি প্রতারণার টাকা সংগ্রহ করে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অ্যাপস ব্যবহার করে প্রতারণা করার অভিযোগে গত ২৬ জুলাই অনলাইন প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ প্রতারক চক্রটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করে উঠতি তরুণ-তরুণীদের কাছ থেকে গত চার মাসে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে পাচার করেছে। করোনাকালে ত্রাণ বিতরণের টাকা সংগ্রহের নামে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে গত ৩১ মে জুবাইরুল হক জিয়ান নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

অভিযোগ রয়েছে গ্রেফতার হওয়া জিয়ান বিভিন্ন শিল্পপতি মেয়ের ছবি ব্যবহার করেও লোকজনের সঙ্গে প্রতারণা করত। এ ছাড়া গত দুই মাসে অনলাইনভিত্তিক প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকটি চক্রকে আটক করেছে চট্টগ্রামের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর