বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

নোট গাইড নিষিদ্ধ, বৈধ কোচিং

শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষা আইন-২০২১ এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। গতকাল এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এটি চূড়ান্ত করা হয়। শিগগিরই ৫৪টি ধারা সংবলিত এ শিক্ষা আইন অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। প্রায় ১১ বছর ঝুলে থাকা শিক্ষা আইন এবার আলোর মুখ দেখছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি গতকালের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। শিক্ষা আইনের খসড়ায় নোট-গাইডকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে ‘সহায়ক পুস্তক’র বৈধতা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভর্তি কোচিং, চাকরির কোচিং ছাড়াও বাণিজ্যিক বিভিন্ন কোচিংও বৈধতা দেওয়া হয়েছে চূড়ান্ত করা আইনে। শিক্ষা আইনে বলা হয়েছে- কোনো ধরনের নোট বই বা গাইড বই মুদ্রণ, বাঁধাই, প্রকাশ বা বাজারজাত করা যাবে না। এ বিধান লঙ্ঘন করলে অনূর্ধ্ব তিন বছর কারাদন্ড বা অনূর্ধ্ব ৫ লাখ টাকা অর্থ বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। এ ছাড়া কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কোনো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নোট বই, গাইড বই ক্রয় বা পাঠে বাধ্য করলে বা উৎসাহ দিলে তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে। এর সঙ্গে শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান, ব্যবস্থাপনা কমিটি বা পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। সরকারের অনুমোদনসাপেক্ষে ‘সহায়ক পুস্তক’ মুদ্রণ, বাঁধাই, প্রকাশ ও বাজারজাত করা যাবে। তবে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সহায়ক পুস্তক ক্রয় বা পাঠে বাধ্য করতে পারবেন না। করলে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে। এ ছাড়া চূড়ান্ত করা আইনে বলা হয়েছে- কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট টিউশনের মাধ্যমে পাঠদান করতে পারবেন না। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করে অভিভাবকদের সম্মতিসাপেক্ষে স্কুল সময়ের আগে বা পরে অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করতে পারবে।

শিক্ষা আইনের খসড়ায় আরও রয়েছে- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাইভেট টিউশনের মাধ্যমে পাঠদানের উদ্দেশ্যে কোচিং সেন্টার পরিচালনা করা বা কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করা এ আইনে নিষিদ্ধ হবে না।

তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময় সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত দিনে চালানো কোচিং সেন্টারের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে। কোচিং সেন্টারে কোনো শিক্ষক তার নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে পাঠদান করতে পারবেন না। করলে অসদাচরণ গণ্যে শাস্তিযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। একই সঙ্গে প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে ভর্তির বিধান থাকায় ভর্তিচ্ছু প্রার্থীদের জন্য, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে চাকরি প্রত্যাশী, এ লেভেল-ও লেভেল পরীক্ষার্থীদের কোচিং ও আইইএলটিএস, জিআরই বা অনুরূপ উদ্দেশ্যে কোচিং পরিচালনা বা কোচিং সেন্টারে পাঠদান নিষিদ্ধ বা দন্ডনীয় হবে না।

শিক্ষা আইন খসড়া চূড়ান্ত করার বৈঠকে উপস্থিত থাকা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক গতকাল এ প্রতিবেদককে বলেন, গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই এটি মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর