সোমবার, ১৬ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

দেশ সেরা দিনাজপুরের লিচু এখন বাজারে

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

শুরু হয়েছে মধুমাস জ্যৈষ্ঠ। আম-লিচুসহ সুস্বাদু ও রসালো বিভিন্ন ধরনের ফল এখন বাজারে দেখা মিলছে। দিনাজপুরের সদর, ঘোড়াঘাট, হিলির বাজারে আগেভাগেই দেখা মিলছে মাদ্রাজি লিচুর। সময়ের আগে বাজারে আসা লিচুর স্বাদ তেমন পাওয়া না গেলেও চাহিদা কম নেই। পরিপক্ক না হলেও বাজারে কদরের কমতি নেই। তাই নতুন ফল হিসেবে অনেকে কিনছেন। কেউ কেউ না কিনে ফিরেও যাচ্ছেন। অনন্য স্বাদের টসটসে দেশের সেরা দিনাজপুরী লিচু পুরোপুরি বাজারে নামবে এ মাসের শেষে। সবার মন জয় করা দিনাজপুরী লিচু মানেই অন্যরকম মিষ্টি ও রসালো স্বাদ। দিনাজপুরী লিচুর গোটা দেশে চাহিদা রয়েছে। বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিভিন্ন জাতের লিচুর মধ্যে মাদ্রাজি, বেদানা, বোম্বাই, চায়না-থ্রি আর কাঁঠালসহ দেশি লিচু এখন গাছে গাছে।

মাদ্রাজি লিচু বাজারে নামলেও পরিপক্ক বোম্বে, বেদানা, চায়না-থ্রি বাজারে আসবে আগামী মাসের প্রথমদিকে।

সদর, ঘোড়াঘাট, হাকিমপুরের বিভিন্ন স্থানে লিচুর পসরা সাজিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে বিক্রেতাদের। ১০০টি মাদ্রাজি লিচু ১৬০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রসালো, সুস্বাদু মিষ্টি লিচুর সিংহভাগ হয় দিনাজপুরের সদর, বিরল, কাহারোল, চিরিরবন্দর, বীরগঞ্জ ও খানসামায়। তবে বিরল ও সদর উপজেলাতেই অধিকাংশ লিচুর বাগান রয়েছে।

লিচুপল্লীখ্যাত মাসিমপুর এলাকার মোসাদ্দেক হোসেন জানান, বাগানে গাছের থোকায় থোকায় লিচুতে আলতো সিঁদুর রঙে রঙিন হয়ে ঝুলছে। এখনো লিচু পরিপক্ক হয়নি। লিচু পাকতে আরও কয়েকদিন লাগবে। তাপদাহে কিছু লিচুর গায়ে রং ধরলেও এগুলো পরিপক্ক হয়নি। কিছু বাগান মালিক অধিক লাভের আশায় অপরিপক্ক লিচু বাজারে নিয়ে আসছে। তবে চলতি মে মাসের শেষের দিকে লিচু বাজারে পুরোদমে নামবে। এখন শেষ মুহূর্তের পরিচর্যায় গাছের লিচুকে হৃষ্টপুষ্ট করতে হরমোনসহ বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করছেন তারা।

দিনাজপুর সদরের উলিপুর-মাসিমপুরের আসাদুজ্জামান লিটন জানান, এক সময় দিনাজপুরের দক্ষিণ কোতোয়ালি ও মাসিমপুরসহ আশপাশের কিছু এলাকায় ভিটা, বসতবাড়ি এবং ডাঙ্গায় লিচু আবাদ ছিল সীমিত। কিন্তু এখন এর বিস্তৃতি ব্যাপক। একটি বড় গাছে ২০ থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত এবং সবচেয়ে ছোট গাছে ১ থেকে দেড় হাজার লিচু পাওয়া যাবে।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, জেলায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। এ বাগানগুলোতে লিচু উৎপাদন হয় প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন। প্রায় সাড়ে ৫ হাজার লিচুর বাগান রয়েছে। বাগান ছাড়াও বাড়ি, বাড়ি সংলগ্ন ভিটা জমিতে দু-চারটি করে লিচু গাছ রয়েছে। ফলন এবং দাম ভালো পাওয়ায় এ চাষের জমি বাড়ছে। গত বছর যেখানে ১০০ বেদানা লিচু ৭৫০ টাকায় বিক্রি হতো, সেখানে সমসংখ্যক চায়না-থ্রি লিচু ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সর্বশেষ খবর