মঙ্গলবার, ২৪ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
রংপুর জুট করপোরেশন

বেদখল হাজার কোটি টাকার জমি

৭২ মামলা দেখছে মাত্র দুইজন, ৯০টি সম্পত্তিতে ৭৪৪ জন অবৈধ দখলদার

নজরুল মৃধা, রংপুর

জুট করপোরেশনের রংপুর অঞ্চলের হাজার কোটি টাকার ১৩০ একর জমি দীর্ঘদিন থেকে বেদখল অবস্থায় রয়েছে। এসব জমি উদ্ধারে ৭২টি মামলা চলমান। উত্তরাঞ্চলের ১৪ জেলায় বছরের পর বছর এসব মামলা দেখছেন একজন দিনহাজিরার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও একজন অফিস সহায়ক। জুট করপোরেশন সূত্র বলছেন, কাগজপত্রের দুর্বলতা ও জনবলের অভাবে এসব জমি উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। জুট করপোরেশন রংপুরের আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ অঞ্চলের আওতায় ১৪ জেলায় মোট সম্পত্তি রয়েছে ১০৮টি। এসব সম্পত্তির জমির পরিমাণ ১৭৫ দশমিক ৫৬ একর। এর মধ্যে করপোরেশনের দখলে রয়েছে ৩৬টির সম্পত্তির ৪৫ দশমিক ১৩ একর ও ৭২টি সম্পত্তির ১৩০ দশমিক ৪৩ একর জমি বেদখলে রয়েছে। নিজস্ব ৩৬টি সম্পত্তির মধ্যে বার্ষিক ভাড়া দেওয়া হয়েছে ২৪টির। এ ছাড়া নিজস্ব তত্ত্বাবধানে রয়েছে ১২টি। বিভিন্ন জেলায় মামলা রয়েছে ৭২টি। ৯০টি সম্পত্তিতে ৭৪৪ জন অবৈধ দখলদার রয়েছেন। সূত্রমতে, বেদখল সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে রংপুরে ৬ দশমিক ৫১, নীলফামারীতে ৮ দশমিক ৪৭, লালমনিরহাটে ৫০ দশমিক ১৮, কুড়িগ্রামে ৬ দশমিক ১১, গাইবান্ধায় ১২ দশমিক ৩০, দিনাজপুরে ৫ দশমিক ৪৪, ঠাকুরগাঁওয়ে ৮ দশমিক ৩০, পঞ্চগড়ে ৩ দশমিক ৩৮, বগুড়ায় ৯ দশমিক ৩০, জয়পুরহাটে ৪ দশমিক ৭৯, পাবনায় ১ দশমিক ২১, নাটোরে শূন্য দশমিক ৯৮, নওগাঁয় ১৩ দশমিক ১৯ ও সিরাজগঞ্জে শূন্য দশমিক ২৫ একর। এ ছাড়া করপোরেশনের জনবল সংকট প্রকট। ১৪ জেলার সম্পত্তি দেখভাল করছেন মাত্র ২০ জন। এর মধ্যে রংপুর অফিসে দিনহাজিরার একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, একজন অফিস সহায়ক, একজন কম্পিউটার অপারেটর, একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও দুজন নিরাপত্তা প্রহরী কাজ করছেন। এ ছাড়া দিনহাজিরায় রংপুরের কাউনিয়া, লালমনিরহাট, বেড়া, ভাঙ্গুড়া, আত্রাই, পঞ্চগড়, বোদা, দেবীগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, শিবগঞ্জ, রুহিয়া, ফুলবাড়ী, মন্মথপুরে একজন করে প্রহরী করপোরেশনের জমি দেখাশোনা করছেন। করপোরেশনসূত্র বলছেন, এ অঞ্চলে ৭৪৪টি অবৈধ দখলের মধ্যে অনেক স্থানে করপোরেশনের জমিগুলো দখলদাররা বিনিময় দলিল, শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে কেনা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে লিজ নিয়ে দখলে রয়েছে।

 এ ছাড়া সম্পত্তির ওপর অনেক স্থানে সরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি খ্যাদ্য গুদাম, মসজিদ-মন্দির, মাদরাসা, এতিমখানা ও সরকারি রাস্তা করে দখলে রেখেছে। ফলে আইনি জটিলতা তৈরি হয়ে জমিগুলো উদ্ধার হচ্ছে না।

করপোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তা সুদিপ্ত মন্ডল বলেন, বেদখল হওয়া জমি উদ্ধারে ৭২টি মামলা চলমান। অনেক ক্ষেত্রে কাগজপত্রে দুর্বলতার জন্য জমিগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া জনবল সংকট রয়েছে। এসব জমির বর্তমান বাজারমূল্য হাজার কোটি টাকার ওপর বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর